পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে চাইলে by জিয়াউর রহমান চৌধুরী
দিন দিন পৃথিবী বদলাচ্ছে। সেই সঙ্গে বদলাচ্ছে মানুষের কাজের ধরনও। আগেকার মানুষেরা যখন কাজ করত, শুধু অর্থ উপার্জনকেই মুখ্য মনে করত। এখন অর্থের পাশাপাশি সৃজনশীলতা আর সম্মানও থাকা চাই। কারণ সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসা-বাণিজ্য আর চাকরির মতো সনাতন পেশার সঙ্গে এখন মানুষের কাজের তালিকায় যুক্ত হয়েছে নানা সৃজনশীল কাজ।
অর্থ, সম্মান আর সৃজনশীলতা আছে সে রকম নতুন একটি কাজের ক্ষেত্র হলো ‘পরিবেশ’। যারা কাজ করে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি সম্মান আর সৃজনশীলতা চান তাঁরা পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে পারেন।
মানুষ যে পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠে তা ইতিমধ্যে নানা কারণে বিপন্ন, বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। রুগ্ণ-বিপন্ন পরিবেশকে বাঁচিয়ে তুলতে মানুষই আবার তৎপর হওয়ায় বর্তমান সময়ে এই খাতে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
চাহিদা যেমন
‘বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ তথা পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল। তবে দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন তথা পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে তোলপাড় হওয়ায় এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। তাই তরুণ প্রজন্মের যারা বেকার বসে আছে অথবা যারা নিজের কাজের মাধ্যমে দেশকে কিছু দিতে চায় তাদের জন্য পরিবেশ বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’ বললেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) সভাপতি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সরকারি ও বেসরকারি নানা উদ্যোগে কাজ করার নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। এ ধরনের কাজের বেশির ভাগই হলো প্রকল্পভিত্তিক। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রচুর লোকবলের দরকার হয়।
কাজের সুযোগ যেখানে
এ বিষয়ে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকতা সহযোগী আশিকুর রহমান জানান, পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে পড়ালেখা শেষে একজন শিক্ষার্থী দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং পরিবেশবিষয়ক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পান। আবার কেউ ইচ্ছা করলে শিক্ষকতা বা গবেষণার মতো কাজেও যোগ দিতে পারবেন অনায়াসে।
কাজটা কী
পরিবেশ বিষয়ে কাজ করতে গেলে মাঠপর্যায়ে পরিবেশবিষয়ক গবেষণা ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয় রোধে ভূমিকা রাখতে হয়। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নতুন ও টেকসই পন্থা তৈরি এবং পরিবেশবিষয়ক আইনের খোঁজখবরও রাখতে হয়। এখানে কাজের ধরন দুই রকম—গবেষণা ও বাস্তবায়ন। ধরন দুই রকম হলেও কাজ কিন্তু মাঠপর্যায়েই সম্পন্ন করতে হয়।
পড়বেন যেখানে
পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে তা একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একেক নামে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আরও বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশবিজ্ঞানে পড়তে পারবেন। বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিষয়ে পড়ালেখার সুযোগ আছে। ওই সব প্রতিষ্ঠানে গবেষণা করার সুযোগও পাওয়া যায়।
যা পড়ানো হয়
দেশে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে মূলত পরিবেশের ব্যবহারিক ও কৌশলগত নানা দিক পড়ানো হয়। হাতেকলমে শেখাটাও এ বিষয়ে পড়ালেখার অন্তর্ভুক্ত। পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশনীতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ ও মোকাবিলার উপায়, পানি ব্যবস্থাপনা, পানিদূষণ রোধ, বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রতিরোধ, পরিবেশ অর্থনীতি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ রসায়নসহ পরিবেশের নানা দিক পড়ানো হয় এ বিষয়ে।
এ পেশায় ভালো করতে হলে
‘পরিবেশ নিয়ে কাজ করে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শুধু পুঁথিগত জ্ঞান থাকলে চলবে না। এর পাশাপাশি থাকতে হবে ব্যবহারিক দক্ষতাও।’ এমনটাই মনে করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্বপন কুমার সাহা। তিনি আরও বলেন, পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে গেলে অফিসে বসে কাজের চেয়ে মাঠপর্যায়েই বেশি কাজ করতে হয়। তাই পরিবেশ খাতে ভালো ক্যারিয়ার বা কর্মজীবন গড়তে চাইলে মাঠপর্যায়ে কাজ করার মানসিকতা ও দক্ষতা থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বিদ্যমান পরিবেশ আইন জানা ও পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা থাকাও অপরিহার্য। আর ছাত্রাবস্থায় পরিবেশবিষয়ক কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তা পরবর্তীকালে অনেক ফল দেবে।
মানুষ যে পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠে তা ইতিমধ্যে নানা কারণে বিপন্ন, বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। রুগ্ণ-বিপন্ন পরিবেশকে বাঁচিয়ে তুলতে মানুষই আবার তৎপর হওয়ায় বর্তমান সময়ে এই খাতে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
চাহিদা যেমন
‘বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ তথা পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল। তবে দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন তথা পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে তোলপাড় হওয়ায় এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। তাই তরুণ প্রজন্মের যারা বেকার বসে আছে অথবা যারা নিজের কাজের মাধ্যমে দেশকে কিছু দিতে চায় তাদের জন্য পরিবেশ বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’ বললেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) সভাপতি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সরকারি ও বেসরকারি নানা উদ্যোগে কাজ করার নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। এ ধরনের কাজের বেশির ভাগই হলো প্রকল্পভিত্তিক। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রচুর লোকবলের দরকার হয়।
কাজের সুযোগ যেখানে
এ বিষয়ে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকতা সহযোগী আশিকুর রহমান জানান, পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে পড়ালেখা শেষে একজন শিক্ষার্থী দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং পরিবেশবিষয়ক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পান। আবার কেউ ইচ্ছা করলে শিক্ষকতা বা গবেষণার মতো কাজেও যোগ দিতে পারবেন অনায়াসে।
কাজটা কী
পরিবেশ বিষয়ে কাজ করতে গেলে মাঠপর্যায়ে পরিবেশবিষয়ক গবেষণা ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয় রোধে ভূমিকা রাখতে হয়। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নতুন ও টেকসই পন্থা তৈরি এবং পরিবেশবিষয়ক আইনের খোঁজখবরও রাখতে হয়। এখানে কাজের ধরন দুই রকম—গবেষণা ও বাস্তবায়ন। ধরন দুই রকম হলেও কাজ কিন্তু মাঠপর্যায়েই সম্পন্ন করতে হয়।
পড়বেন যেখানে
পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে তা একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একেক নামে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আরও বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশবিজ্ঞানে পড়তে পারবেন। বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিষয়ে পড়ালেখার সুযোগ আছে। ওই সব প্রতিষ্ঠানে গবেষণা করার সুযোগও পাওয়া যায়।
যা পড়ানো হয়
দেশে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে মূলত পরিবেশের ব্যবহারিক ও কৌশলগত নানা দিক পড়ানো হয়। হাতেকলমে শেখাটাও এ বিষয়ে পড়ালেখার অন্তর্ভুক্ত। পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশনীতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ ও মোকাবিলার উপায়, পানি ব্যবস্থাপনা, পানিদূষণ রোধ, বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রতিরোধ, পরিবেশ অর্থনীতি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ রসায়নসহ পরিবেশের নানা দিক পড়ানো হয় এ বিষয়ে।
এ পেশায় ভালো করতে হলে
‘পরিবেশ নিয়ে কাজ করে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শুধু পুঁথিগত জ্ঞান থাকলে চলবে না। এর পাশাপাশি থাকতে হবে ব্যবহারিক দক্ষতাও।’ এমনটাই মনে করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্বপন কুমার সাহা। তিনি আরও বলেন, পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে গেলে অফিসে বসে কাজের চেয়ে মাঠপর্যায়েই বেশি কাজ করতে হয়। তাই পরিবেশ খাতে ভালো ক্যারিয়ার বা কর্মজীবন গড়তে চাইলে মাঠপর্যায়ে কাজ করার মানসিকতা ও দক্ষতা থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বিদ্যমান পরিবেশ আইন জানা ও পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা থাকাও অপরিহার্য। আর ছাত্রাবস্থায় পরিবেশবিষয়ক কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তা পরবর্তীকালে অনেক ফল দেবে।
No comments