ডেপ এবার-ভ্যাম্পায়ার

ছেলেটা খুব দস্যি। পাড়া দাপিয়ে বেড়াতে ভালোবাসে। স্কুল থেকে ফিরতেও চায় না বাসায়। বাসায় ফিরলেই যে চার দেয়ালের বন্দী জীবন। সেই ছেলেটাকে বাসায় আটকে রাখার মন্ত্র পেয়ে গেল বাবা-মা। ডার্ক শ্যাডোস নামের এক টিভি নাটক! সাত বছর বয়সী ছেলেটাকে যেন কৌতূহলের বড়শিতে গেঁথে ফেলল বার্নাবাস কলিন্স নামের ভ্যাম্পায়ারটি।


সেই চরিত্রে রূপদানকারী জোনাথন ফ্রিডের মহাভক্তও হয়ে গেল ছেলেটি। ফ্রিডের অঙ্গভঙ্গি নকল বাহবাও কুড়াতে লাগল।
চার দশক পরে এসে ফ্রিডকে ভালোবাসার প্রতিদান দিচ্ছে সেদিনের সেই কিশোর, আজকের জনি ডেপ। সেই বার্নাবাস কলিন্স চরিত্রেই অভিনয় করে! আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে ডেপ অভিনীত ছবি ডার্ক শ্যাডোস। ক্যারিবীয় দ্বীপের জলদস্যু এবার ২০০ বছর বয়সী এক ভ্যাম্পায়ার! টোয়ালাইট সাগার দুনিয়ায় স্বাগতম মিস্টার ডেপ!
না, ভুল বলা হলো। টোয়ালাইট সাগা যেখানে নিখাদ রোমান্টিক ছবি, সঙ্গে দু চিমটি ড্রামা; সেখানে ডেপ যে একই সাফল্যসূত্র মানবেন না, সেটি ছবি না দেখেও বলা যায়। ড্রামা তো থাকছেই, তবে ডেপের ছোঁয়া পেয়ে যেকোনো কাহিনিতে হাস্যরস যোগ হতে বাধ্য। ডার্ক শ্যাডোস-এর ধরনটা তাই গথিক ড্রামেডি।
এই ছবি দিয়ে আবার পরিচালক টিম বার্টনের সঙ্গে কাজ করলেন মার্কিন অভিনেতা। ১০০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের ছবি ডার্ক শ্যাডোস নিয়ে প্রত্যাশার পারদটাও তাই উঁচু তারে বাধা। ছবির গল্পের প্রেক্ষাপট ১৭৫২। কলিন্স পরিবার ইংল্যান্ডের লিভারপুল থেকে চলে আসে আমেরিকায়। ধনাঢ্য পরিবারের সদুর্শন যুবক বার্নাবাস যেন সব তরুণীর প্রার্থিত পুরুষ। অ্যাঞ্জেলিক বুচার্ড (এভা গ্রিন) নামের এক ডাকিনিও প্রেমে পড়ে যায় তার। কিন্তু প্রত্যাখাত হয়। সেই প্রত্যাখান সহ্য করতে না পেরে জাদু দিয়ে বার্নাবাসকে ভ্যাম্পায়ার বানিয়ে জ্যান্ত কবর দেয়।
২০০ বছর সেই কফিনে আটকা থাকার পর মুক্তি পায় বার্নাবাস। ফিরে আসে নিজের বাড়িতে। যে বাড়ি এখন স্রেফ পোড়া শ্মশান। বুচার্ড শুধু বার্নাবাসকে নয়, ধ্বংস করে দিয়েছে তার পুরো পরিবারকেই। বার্নাবাসের এবার প্রতিশোধ নেওয়ার পালা।
ছবিটি এমন এক সময় মুক্তি পাচ্ছে, বার্নাবাস কলিন্সের মূল অভিনেতা জোনাথন ফ্রিড যখন সদ্যই চলে গেছেন জীবন নদীর ওপারে। গত ১৩ এপ্রিল মারা গেছেন কানাডিয়ান এই অভিনেতা। তাঁর বিদেহী আত্মার প্রতি সম্মান জানিয়ে ডেপ বলছেন, ‘ফ্রিড সব সময়ই তাঁর “হিরো”দের একজন ছিলেন, ‘স্কুল থেকে আমার বাড়িতে ছুটে আসার কারণই ছিলেন জোনাথন ফ্রিড। ডার্ক শ্যাডোস-এর প্রতিটা পর্বই গিলেছি গোগ্রাসে। তাঁর আভিজাত্য আর সাবলীলতা সে সময় ছিল আমার জন্য অনুপ্রেরণা। সেই অনুপ্রেরণা আজীবন থাকবে।’
বার্নাবাসের চরিত্রে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার পর ডেপ নিজে দেখা করেছিলেন ফ্রিডের সঙ্গে। ষাটের দশকের শেষ ভাগে এ চরিত্রটি ছিল তুমুল জনপ্রিয়। ফলে নতুন করে সেটিতে অভিনয় করা বিরাট এক চ্যালেঞ্জ। ডেপ জানাচ্ছেন, ফ্রিডের আশীর্বাদ সঙ্গে আছে তাঁর, ‘তাঁর সঙ্গে দেখা করাটা আমার জন্য ছিল অনেক বড় একটা পাওয়া। তিনি অন্তত বিনয়ের সঙ্গে আমাকে বার্নাবাসের মশালটি তুলে দিয়েছেন। আমার কল্পনায় যেমন ছিলেন, বাস্তবেও তিনি সেই রকম অভিজাত ও জাদুকরী ব্যক্তিত্বের ছিলেন। তাঁর প্রয়াণে আমি তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। এই বিশ্ব সত্যিকারের এক নায়ককে হারাল।’
 রাজীব হাসান
তথ্য: বার্তা সংস্থা

No comments

Powered by Blogger.