শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুমের এই ব্যবস্থা বন্ধ হোক-ভর্তিতে বাড়তি অর্থ আদায়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তির সময় সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো রসিদ ছাড়াই বাড়তি অর্থ আদায় করছে। ভর্তির জন্য প্রশাসন যে ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে, তার অতিরিক্ত এ অর্থ আদায়ে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। স্বেচ্ছাচারিতার এক প্রদর্শনী করে বিভাগগুলো এ অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো আগাম ঘোষণার প্রয়োজন পর্যন্ত বোধ করেনি। শিক্ষার্থীদের আগে অবহিত করা হয়নি।


ভর্তির ফরম সংগ্রহ করতে গেলে বিভাগে বাড়তি অর্থ জমা দেওয়ার পরই তা মেলে।
শিক্ষার্থীর জন্য ভর্তি হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। সেই প্রয়োজনকে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীকে একপ্রকার জিম্মি করে এ অর্থ পরিশোধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এ ধরনের অনৈতিক চর্চার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ বিশ্ববিদ্যালয়ে চললে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য তা এক অশনিসংকেত।
বিভিন্ন বিভাগ নিজেদের খেয়ালখুশিমতো এভাবে জনপ্রতি এক থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি অর্থ আদায় করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল তহবিলের বাইরের এই অর্থ কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তাও জানানো হয়নি। শিক্ষার্থীদের অধিকার আছে তাঁদের অর্থ কোন প্রক্রিয়ায়, কী কাজে ব্যয় হচ্ছে তা জানার। অথচ শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে তাঁদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা।
পুরো প্রক্রিয়াটিতে যে বড় রকমের শুভংকরের ফাঁকি আছে, তা সহজেই ধারণা করা যায়। আগের বছরগুলোতে কয়েকটি বিভাগ এভাবে শিক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা বলে অর্থ আদায় করেছে। সেই অর্থ কী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে, সেই সত্য অনেকটা প্রকাশ পেয়েছে নৃবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষকের কথায়, ‘...এই অর্থ দিয়ে চা-নাশতা খেতেন অনেকে।’
এ বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত। কিন্তু বিভাগগুলোর এমন স্বেচ্ছাচারী আচরণ কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা ভ্রান্ত, শিক্ষার্থীর ওপর জুলুমের। আমরা আশা করি, বিভাগগুলো এভাবে অর্থ আদায় অবিলম্বে বন্ধ করবে এবং এদের কর্মকাণ্ডে আর্থিক স্বচ্ছতা রাখবে।

No comments

Powered by Blogger.