সত্য যে কঠিন by আনোয়ার হোসেন
ডিসি বলতে বোঝায় ডেপুটি কমিশনারদের। সাধারণত উপসচিব পর্যায়ের কর্তকর্তারা এ পদে নিযুক্ত হন। হাল আমলে কয়েকজন যুগ্ম সচিবকে ডিসি হিসেবে নিয়োগদান করা হয়েছে। ডেপুটি কমিশনারের বাংলা কেন জেলা প্রশাসক, এটা বুঝতে আমার মতো আরও অনেকেই অক্ষম।
প্রতি বছর ঢাকায় জেলা প্রশাসকদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী তাতে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন। আরও কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে তাদের খোলামেলা আলোচনা হয়। অনেক বছর ধরেই জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের পদ ক্ষমতাসীন দলের 'কুক্ষিগত' হয়ে পড়েছে বলে মনে করা হয়। এইচএম এরশাদ দেশের রাষ্ট্রপতি থাকাকালে তার দল জাতীয় পার্টি তেমন গণভিত্তি পায়নি। দলের সব কাজ ডিসি-এসপিরা করে দিতেন। সে সময়ে বলা হতো ডিসি হচ্ছেন কার্যত জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি এবং এসপি সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা চেয়ারম্যানকে ধরে নেওয়া হতো যে তিনি উপজেলায় জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দেবেন। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজ করবেন তার ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন দলের কর্ণধার হিসেবে। এখন সে অবস্থা নেই। দুই দশকের বেশি সময় ধরে পর্যায়ক্রমে দেশে ক্ষমতাসীন দুটি দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শক্তি-সামর্থ্য অনেক। তাদের আর ডিসি ও এসপিদের ওপর নির্ভর করতে হয় না। ক্ষমতায় যে দল থাকে তারা ডাক দিলেই বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক হাজির হয়ে যায়। কিন্তু তার পরও তাদের চাই 'পক্ষের ডিসি-এসপি'। এ মনোভাবের যুক্তি খুঁজে পাওয়া ভার।
কিন্তু পক্ষের ডিসি-এসপিরাও কি সরকারি দলের সব কাজে খুশি থাকে? ডিসিদের সম্মেলনে উত্থাপিত যেসব বক্তব্য তা একটু খুঁটিয়ে দেখলেই যে কারও ধারণা হবে যে, তারাও সরকারি দলের সব কাজে খুশি থাকে না। এবারের ডিসিদের সম্মেলনে স্কুল-কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ বলেছেন, এর ফলে শুধু রাজনীতিকরণই হচ্ছে না, অনেক অনিয়ম-দুর্নীতিরও সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এটা যে কতটা বাস্তব তথ্য-নির্ভর তা যে কেউ সহজেই বুঝতে পারবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কারণে ভালো চলছে না। সংসদ সদস্যরা নিজেরা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব নিচ্ছেন কিংবা দলের অপর কাউকে এ দায়িত্ব দিচ্ছেন। শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে তারা বাধা দেয়। শত শত স্কুলে এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এদের নির্বাচনে ব্যবস্থাপনা কমিটির ভূমিকা থাকে। ভারপ্রাপ্ত সাধারণত তাকেই করা হয়, যিনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কথা অনুযায়ী কাজ করতে রাজি থাকেন। এর বাইরেও যাদের দায়িত্ব দিতে হয় তাদের সঙ্গে সভাপতির ঠোকাঠুকি লেগেই থাকে। আর এখন রাজনীতি এমনই সর্বগ্রাসী যে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মী এবং সংসদ সদস্যের সামান্যতম বিরুদ্ধাচরণ করে কারও এলাকায় টিকে থাকার উপায় নেই। দেশের শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক। তাই শিক্ষকতায় আন্তরিক আগ্রহ থাকুক আর না-ই থাকুক শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে আগ্রহী লোকের অভাব হয় না। এর প্রধান কারণ সরকারের ভাণ্ডার থেকে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদান। এর পরিমাণ খুব বেশি নয়। কিন্তু কোনো রকমে সংসার তো চলে যায়, তাই অনেকেই শিক্ষক হতে চান। আর এ সুযোগে ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই প্রচুর কামিয়ে নিতে তৎপর হয়ে ওঠেন। শোনা যায়, এখন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচা হয়ে থাকে। এর বাইরেও আয়ের সুযোগ রয়েছে। যেমন সরকার স্কুল-কলেজের ভবন নির্মাণ ও সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ করে। বিজ্ঞান গবেষণাগারের জন্য যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। আয়ের এ এক মস্ত সুুযোগ। কিন্তু এর সঙ্গে শিক্ষার সম্পর্ক কোথায়? সরকার শিক্ষার উন্নতির জন্য অনেক ভালো কাজ করছে। অনেক ভালো পরিকল্পনাও রয়েছে। তা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে ভাবার সময় কিন্তু গড়িয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু পক্ষের ডিসি-এসপিরাও কি সরকারি দলের সব কাজে খুশি থাকে? ডিসিদের সম্মেলনে উত্থাপিত যেসব বক্তব্য তা একটু খুঁটিয়ে দেখলেই যে কারও ধারণা হবে যে, তারাও সরকারি দলের সব কাজে খুশি থাকে না। এবারের ডিসিদের সম্মেলনে স্কুল-কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ বলেছেন, এর ফলে শুধু রাজনীতিকরণই হচ্ছে না, অনেক অনিয়ম-দুর্নীতিরও সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এটা যে কতটা বাস্তব তথ্য-নির্ভর তা যে কেউ সহজেই বুঝতে পারবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কারণে ভালো চলছে না। সংসদ সদস্যরা নিজেরা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব নিচ্ছেন কিংবা দলের অপর কাউকে এ দায়িত্ব দিচ্ছেন। শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে তারা বাধা দেয়। শত শত স্কুলে এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এদের নির্বাচনে ব্যবস্থাপনা কমিটির ভূমিকা থাকে। ভারপ্রাপ্ত সাধারণত তাকেই করা হয়, যিনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কথা অনুযায়ী কাজ করতে রাজি থাকেন। এর বাইরেও যাদের দায়িত্ব দিতে হয় তাদের সঙ্গে সভাপতির ঠোকাঠুকি লেগেই থাকে। আর এখন রাজনীতি এমনই সর্বগ্রাসী যে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মী এবং সংসদ সদস্যের সামান্যতম বিরুদ্ধাচরণ করে কারও এলাকায় টিকে থাকার উপায় নেই। দেশের শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক। তাই শিক্ষকতায় আন্তরিক আগ্রহ থাকুক আর না-ই থাকুক শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে আগ্রহী লোকের অভাব হয় না। এর প্রধান কারণ সরকারের ভাণ্ডার থেকে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদান। এর পরিমাণ খুব বেশি নয়। কিন্তু কোনো রকমে সংসার তো চলে যায়, তাই অনেকেই শিক্ষক হতে চান। আর এ সুযোগে ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই প্রচুর কামিয়ে নিতে তৎপর হয়ে ওঠেন। শোনা যায়, এখন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচা হয়ে থাকে। এর বাইরেও আয়ের সুযোগ রয়েছে। যেমন সরকার স্কুল-কলেজের ভবন নির্মাণ ও সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ করে। বিজ্ঞান গবেষণাগারের জন্য যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। আয়ের এ এক মস্ত সুুযোগ। কিন্তু এর সঙ্গে শিক্ষার সম্পর্ক কোথায়? সরকার শিক্ষার উন্নতির জন্য অনেক ভালো কাজ করছে। অনেক ভালো পরিকল্পনাও রয়েছে। তা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে ভাবার সময় কিন্তু গড়িয়ে যাচ্ছে।
No comments