চোর চক্রকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে-জাতীয় গ্রিড লাইনে তেল চুরি
জাতীয় গ্রিড লাইন থেকে তেল চুরি কিংবা চুরির চেষ্টার যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এটি যেমন সম্পদের অপচয়, তেমনি তেল ও গ্যাসের জাতীয় গ্রিড লাইনের জন্য বিপজ্জনকও। গ্রিড লাইনে তেল ও গ্যাসের পাইপ পাশাপাশি থাকায় যেকোনো মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে
প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৩ ও ৫ জানুয়ারি জাতীয় গ্রিড লাইনের গয়ঘর ও নিতেস্বর এলাকায় তেল চুরির চেষ্টা চালায় সংঘবদ্ধ চোর চক্র। নিরাপত্তারক্ষীরা আগেভাগে টের পেয়ে গেলে তাদের চেষ্টা ভণ্ডুল হয়ে যায়।
চোর চক্র তেল চুরিতে ব্যর্থ হলেও পাইপের কাছে ছয় ফুট লম্বা একটি গর্ত খোঁড়ে। গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি তেলচোর চক্র জাতীয় গ্রিডের পাইপলাইন ছিদ্র করে প্রায় পাঁচ হাজার ৮০ লিটার তেল চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল। জাতীয় গ্রিড লাইনের নিয়ন্ত্রণকক্ষে অস্বাভাবিকতা লক্ষ করে গ্রিড লাইন বন্ধ করে তল্লাশি চালালে চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে। কৈলাসটিলা-আশুগঞ্জ উত্তর-দক্ষিণ গ্যাস ও অপরিশোধিত তেলের জাতীয় গ্রিড লাইনের সঙ্গে বিয়ানীবাজার, কৈলাসটিলা, জালালাবাদ, বিবিয়ানা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্র যুক্ত রয়েছে। এ ছাড়া ১৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ গ্রিড লাইনে ছয় ইঞ্চি ব্যাসের অপরিশোধিত তেল ও ২৪ ইঞ্চি ব্যাসের গ্যাসের পাইপলাইন দুটি পাশাপাশি রয়েছে। গত পাঁচ-ছয় বছরে জাতীয় গ্রিড লাইনের শুধু রাজনগর, মৌলভীবাজার সদর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সাত-আটটি তেল চুরির ঘটনা ঘটেছে বা চেষ্টা হয়েছে।
বর্তমানে একটি বেসরকারি নিরাপত্তা কোম্পানি গ্রিড লাইনের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ লাইনের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক পুলিশি প্রহরা ও নজরদারির প্রয়োজনের কথা স্বীকার করেছে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল)। এই পরিস্থিতিতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর এই জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক, সেটা ভেবে দেখতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পুলিশি প্রহরাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে কঠোর শাস্তি দিতে হবে চোর চক্রকে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ চুরি করতে সাহস না পায়।
No comments