সাংসদ ও ইউএনওদের কর্তৃত্ব সংবিধান পরিপন্থী-উপজেলা পরিষদ
সাংসদদের উপদেষ্টা রেখেই উপজেলা আইনে সংশোধনী আনার সরকারি প্রস্তাব গত ১০ মাসের অভিজ্ঞতার আলোকে বিচার-বিশ্লেষণের দাবি রাখে। এই ১০ মাসের অভিজ্ঞতার একটা সমীক্ষা ফুটে উঠেছে ৫ জানুয়ারি প্রথম আলোতে প্রকাশিত ‘১০ মাসেও কার্যকর হয়নি উপজেলা’ শীর্ষক শীর্ষ প্রতিবেদনে।
এ থেকে স্পষ্ট যে সাংসদদের উপদেষ্টা রেখে স্থানীয় শাসনব্যবস্থা গতিশীল করা যাবে না। এটা লক্ষণীয় যে উপজেলা চেয়ারম্যানরা দুটো সংগঠনে বিভক্ত থাকলেও তাঁরা ১৯৯৮ সালের আইনে সংশোধনী এনে সাংসদদের উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার ও বিরোধী দল সাংসদদের খবরদারি বজায় রাখতে একমত।
সাংসদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উভয়ে জনপ্রতিনিধি হলেও সাংসদেরা কার্যকর অর্থে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় নির্বাহী প্রধানের প্রতিনিধি। কিন্তু সে তুলনায় উপজেলার নির্বাচিত সদস্যরা স্বাধীন। তাঁদের মাথার ওপর ৭০ অনুচ্ছেদের তলোয়ার ঝুলছে না। তাই উপজেলাব্যবস্থাকে দেশের দুটি প্রধান দল ও দল দুটির শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের প্রতিনিধিদের দিয়ে আগলে রাখতে সতর্ক।
প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) লিখবেন উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন। এর অর্থ কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা থাকবে সরকারের কাছে। অন্যদিকে উপদেষ্টা হিসেবে সাংসদেরা সব কাজে নাক দেবেন। ‘সব ক্ষেত্রেই এমপি সাহেব খবরদারি করেন। এমনকি কাবিখাতেও। এভাবে সাংসদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মিলে উপজেলাব্যবস্থাকে অকার্যকর করে ফেলেছেন।’ শাসকদলীয় একজন চেয়ারম্যানের এই মন্তব্যে রূঢ় বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটেছে। সুতরাং মন্ত্রীদের এই উক্তি ইতিমধ্যেই অর্থহীন হয়ে পড়েছে যে তাঁরা সাংসদদের রেখেই প্রস্তাবিত সংশোধনী আইন পাস করবেন ও ভবিষ্যতে দরকার পড়লে তা শুধরে নেবেন। আমরা মনে করি, এটা লোক দেখানো কথা। কারণ, ৭০ অনুচ্ছেদ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সাংসদেরা যে প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক একাংশে স্থানীয় শাসন নিশ্চিত না করে তা তছনছ করবেন, তা খুবই স্পষ্ট। উপজেলাব্যবস্থায় সাংসদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন সংবিধানের লঙ্ঘন। এই আইন রিটে চ্যালেঞ্জযোগ্য।
সংবিধানে স্থানীয় শাসনের কথা বলা আছে। সাংসদদের কর্তৃত্ব মানে ঢাকার সচিবালয়ের শাসন চাপিয়ে দেওয়া। ৫৯ অনুচ্ছেদ বলেছে, তাঁদের ‘স্থানীয় শাসনের ভার’ দিতে হবে। এমনকি নির্দিষ্টভাবে প্রশাসন ও সরকারি কর্মচারীদের কার্য তদারকির দায়িত্ব তাঁদের হাতেই অর্পণ করতে হবে। অথচ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের হাতে রাখা হচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যানদের এসিআর লেখার কর্তৃত্ব। এ ছাড়া ৫৯ (২গ) স্পষ্ট বলেছে, ‘জনসাধারণের কার্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন’ও করবেন তাঁরা। তাই স্পষ্টতই কাবিখাতে সাংসদদের দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ নেই। এমনকি তাঁরা তেমন কোনো আইনও যাতে তৈরি করতে না পারেন, তেমন রক্ষাকবচও সংবিধানে রয়েছে। সাংসদদের যুক্ত রেখে আইন তৈরি ও এসিআর লেখার ক্ষমতাসংক্রান্ত নতুন পরিপত্র জারি তাই সংবিধান পরিপন্থী।
স্থানীয় শাসন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি মাইলফলক রায় (কুদরত এলাহি বনাম রাষ্ট্র), আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার এবং অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের নিবেদন হচ্ছে, প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস না করা। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও সচিব অভিজ্ঞতা অর্জনের কথা বলেছেন। তাহলে স্থানীয় শাসন স্থানীয়ভাবে নির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতেই নিয়ন্ত্রণমুক্তভাবে আগে চলতে দিন। তাঁরা ব্যর্থ হলে বিকল্প ভাবা যাবে।
সাংসদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উভয়ে জনপ্রতিনিধি হলেও সাংসদেরা কার্যকর অর্থে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় নির্বাহী প্রধানের প্রতিনিধি। কিন্তু সে তুলনায় উপজেলার নির্বাচিত সদস্যরা স্বাধীন। তাঁদের মাথার ওপর ৭০ অনুচ্ছেদের তলোয়ার ঝুলছে না। তাই উপজেলাব্যবস্থাকে দেশের দুটি প্রধান দল ও দল দুটির শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের প্রতিনিধিদের দিয়ে আগলে রাখতে সতর্ক।
প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) লিখবেন উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন। এর অর্থ কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা থাকবে সরকারের কাছে। অন্যদিকে উপদেষ্টা হিসেবে সাংসদেরা সব কাজে নাক দেবেন। ‘সব ক্ষেত্রেই এমপি সাহেব খবরদারি করেন। এমনকি কাবিখাতেও। এভাবে সাংসদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মিলে উপজেলাব্যবস্থাকে অকার্যকর করে ফেলেছেন।’ শাসকদলীয় একজন চেয়ারম্যানের এই মন্তব্যে রূঢ় বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটেছে। সুতরাং মন্ত্রীদের এই উক্তি ইতিমধ্যেই অর্থহীন হয়ে পড়েছে যে তাঁরা সাংসদদের রেখেই প্রস্তাবিত সংশোধনী আইন পাস করবেন ও ভবিষ্যতে দরকার পড়লে তা শুধরে নেবেন। আমরা মনে করি, এটা লোক দেখানো কথা। কারণ, ৭০ অনুচ্ছেদ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সাংসদেরা যে প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক একাংশে স্থানীয় শাসন নিশ্চিত না করে তা তছনছ করবেন, তা খুবই স্পষ্ট। উপজেলাব্যবস্থায় সাংসদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন সংবিধানের লঙ্ঘন। এই আইন রিটে চ্যালেঞ্জযোগ্য।
সংবিধানে স্থানীয় শাসনের কথা বলা আছে। সাংসদদের কর্তৃত্ব মানে ঢাকার সচিবালয়ের শাসন চাপিয়ে দেওয়া। ৫৯ অনুচ্ছেদ বলেছে, তাঁদের ‘স্থানীয় শাসনের ভার’ দিতে হবে। এমনকি নির্দিষ্টভাবে প্রশাসন ও সরকারি কর্মচারীদের কার্য তদারকির দায়িত্ব তাঁদের হাতেই অর্পণ করতে হবে। অথচ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের হাতে রাখা হচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যানদের এসিআর লেখার কর্তৃত্ব। এ ছাড়া ৫৯ (২গ) স্পষ্ট বলেছে, ‘জনসাধারণের কার্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন’ও করবেন তাঁরা। তাই স্পষ্টতই কাবিখাতে সাংসদদের দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ নেই। এমনকি তাঁরা তেমন কোনো আইনও যাতে তৈরি করতে না পারেন, তেমন রক্ষাকবচও সংবিধানে রয়েছে। সাংসদদের যুক্ত রেখে আইন তৈরি ও এসিআর লেখার ক্ষমতাসংক্রান্ত নতুন পরিপত্র জারি তাই সংবিধান পরিপন্থী।
স্থানীয় শাসন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি মাইলফলক রায় (কুদরত এলাহি বনাম রাষ্ট্র), আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার এবং অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের নিবেদন হচ্ছে, প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস না করা। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও সচিব অভিজ্ঞতা অর্জনের কথা বলেছেন। তাহলে স্থানীয় শাসন স্থানীয়ভাবে নির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতেই নিয়ন্ত্রণমুক্তভাবে আগে চলতে দিন। তাঁরা ব্যর্থ হলে বিকল্প ভাবা যাবে।
No comments