ভারত-আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অসন্তোষ by কুলদীপ নায়ার
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মতো না হলেও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গোলযোগ চলছেই। ভারতীয় অঞ্চলগুলোতে যে আগুন জ্বলছে, তা মূলত রাজনৈতিক। পাকিস্তানের মতো ধর্মের নামে অসন্তোষের ধুয়া এখানে দেখা যাচ্ছে না। তাহলেও দুটি দেশই এমন সমস্যার মুখে পড়েছে যার সমাধান শুধু বল প্রয়োগের মাধ্যমে সম্ভব নয়।
বিক্ষুব্ধ জনগণ চায় উন্নয়ন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। এই আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বরণ করে নিতে হবে এবং নীতি প্রণীত হতে হবে এসবের ভিত্তিতেই।
আসাম থেকে সম্প্রতি আমি মোটামুটি দুশ্চিন্তা নিয়ে ফিরেছি। দীর্ঘদিন ধরে অজস্র বিক্ষোভে রাজ্যটি তপ্ত হয়ে আছে। আসামে ‘বিদেশি খেদাও’ আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সেখানকার আলোড়নের কথা আমার মনে পড়ছে। মূলত সেটা ছিল বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষের বিরুদ্ধে আন্দোলন। এই আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন অল আসাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (এএএসইউ) সে সময় প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর সঙ্গে আলোচনায় বসে এবং রাজীব গান্ধী প্রতিশ্রুতি দেন যে, ‘বিদেশিদের’ চিহ্নিত করা হবে এবং ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। এবং চূড়ান্তভাবে তাদের আসাম থেকে বহিষ্কার করা হবে। সে রকম কিছু কখনো ঘটেনি। বাস্তবত, অসমিয়াদের অবস্থান মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। এমনকি এ বিষয়ে চুক্তি হলেও আমার সন্দেহ রয়ে যায় যে, এটা কখনো বাস্তবায়িত হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার অভিবাসীদের বিভিন্ন রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো রাজ্যই তাদের পুনর্বাসনে রাজি হয়নি। কয়েক বছরের বিরতির পর, এটা পরিষ্কার হয়ে গেল যে ‘বিদেশিদের’ বের করে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। নয়াদিল্লির উচিত জীবিকার সন্ধানে যারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসেছে, তাদের কাজের অনুমতিপত্র দেওয়া। তারাও চায় তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে, কিন্তু যেহেতু তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই, সেহেতু তারা রয়ে গেল এবং দীর্ঘমেয়াদি লাঞ্ছনার শিকার হলো।
নয়াদিল্লি-এএএসইউ চুক্তি থেকেই ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম বা উলফার জন্ম। এই ফ্রন্ট নিজেকে সার্বভৌম আসাম রাষ্ট্রের পর্যায়ে উন্নীত করেছে এবং খোলাখুলি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এই সহিংসতার জন্য আসামে এবং অন্য যেসব জায়গায়, বিশেষত ভুটানের পাদদেশে এবং মিয়ানমার সীমান্তে যেখানে উলফা ক্যাডারদের ঘাঁটি রয়েছে, সেখানে নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
উলফার চ্যালেঞ্জ কাবু হয়ে যায় যখন সংগঠনটির সভাপতি অরবিন্দ রাজখোয়া এবং তাত্ত্বিক ভীমকান্ত বুড়াগোহাইনকে বাংলাদেশ সরকার ভারতের হাতে তুলে দেয়। এই অঞ্চলে ক্রিয়াশীল পাঁচটি বিদ্রোহী সংগঠন দিল্লির প্রতি ঢাকার সহযোগিতাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু এসবে ঢাকা মোটেই বিচলিত না হয়ে বরং জানিয়েছে, বাংলাদেশের মাটি থেকে তারা ভারতীয় সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে উপড়ে ফেলবে।
সন্দেহ নেই যে আসামের রাজ্য সরকার উলফার সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু তারা সার্বভৌমত্বের দাবি না ছাড়ায় সমস্যা হয়েছে। সম্ভবত, আটক নেতারা সংলাপে বসার আগে তাঁদের নেতা পরেশ বড়ুয়ার সঙ্গে মিলিত হতে চান। কিন্তু উলফা উপলব্ধি করতে পারছে না যে, যতক্ষণ তারা সার্বভৌমত্বের দাবি আঁকড়ে থাকবে, ততক্ষণ কোনো ভারতীয় সরকার তাদের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হবে না। কারণ, আরও কয়েকটি ভারতীয় রাজ্যে স্বাধীনতার আন্দোলন চলছে।
সম্প্রতি আসামের রাজধানী গুয়াহাটি সফরের পর আমাকে আরও চিন্তিত করে তুলেছে অসম গণপরিষদের ভূমিকা। তারাই শাসক কংগ্রেস দলের প্রধান বিরোধী দল। অসম গণপরিষদ স্বাধীনতার দাবি না করলেও উলফার দিক থেকে শর্তহীনভাবে আলোচনায় বসার অবস্থান তারা সমর্থন করে। উলফার প্রতি রাজ্যে যে সহানুভূতি রয়েছে তা থেকে লাভবান হতে চায় অসম গণপরিষদ। গুয়াহাটিতে আমি নিজেই এটা দেখে অবাক হয়েছি। সেখানে একটি সেমিনারে আমি যখন বললাম যে, উলফার নেতাদের হাতকড়া পরানো উচিত নয়, সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত শ্রোতারা বিপুল করতালি দিয়ে আমাকে অভিনন্দিত করল। আসামের মানুষ কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণ মনে হয় না এটা বুঝছে যে, যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বন্দুক হাতে নেয়, রাষ্ট্র তাদের কোনো সুযোগ দেবে না। কেননা, তার মানে হলো আস্ত রাজনীতিটাই ধ্বংস হয়ে যাওয়া। তখন অন্যরাও একই পথ অবলম্বন করবে।
নাগাদের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত উলফার। তাদের নেতা ফিজো একইভাবে সার্বভৌমত্বের দাবি তুলেছিলেন এবং লন্ডনে থেকে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় যখন যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশনারের দায়িত্বে ছিলাম, তখন ফিজো মারা গেছেন। ফিজোর মৃত্যুর পর তাঁর সহযোদ্ধা খোদাও-ইয়ানথান আমার সঙ্গে দেখা করেন।
নাগাল্যান্ডে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকেই ইয়ানথান লন্ডনে বাস করে আসছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, তিনি নাগাল্যান্ডে গিয়ে তাঁর সহযোদ্ধাদের বোঝাতে চান, তাঁদের সহিংসতার পথ ছেড়ে দিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভারতের কাঠামোর মধ্যেই সমাধানের পথ সন্ধান করা উচিত। তিনি আমাকে বলেন, ফিজো মৃত্যুর আগে সশস্ত্র পন্থা ত্যাগ করার কথা বলেছিলেন। আমার আস্থা ছিল যে, ইয়ানথান চরমপন্থীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন। আমি চাই, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল যদি ফিজোর কাছ থেকে এটা শিখতে পারত!
আমি মনে করি, উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিষয়ে ভারতের নীতি বাস্তববাদী নয়। জওহরলাল নেহরু এই অঞ্চলকে আলাদাই রেখেছিলেন, যাতে এখানকার মানুষ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষা করে জীবনযাপন করতে পারে। অবশ্য যেকোনো সরকারের জন্য এটা কঠিন সিদ্ধান্ত। তবে তার আগে কেন্দ্রকে নিশ্চিত করতে হবে, এই এলাকাকে মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা যাবে না এবং কেবল মানসিক বন্ধনই নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ধারা বন্ধ করা চলবে না।
সত্যি যে পাকিস্তানকেও তালেবান-হুমকি উচ্ছেদ করতে হবে। কিন্তু ইসলামাবাদকেও বুঝতে হবে, যে পদ্ধতিতে তারা শাসন চালাচ্ছে তা বাদবাকি দেশের সঙ্গে কেন্দ্রের মানসিক বন্ধন জোরদার করতে সক্ষম হবে না।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
কুলদীপ নায়ার: ভারতীয় সাংবাদিক।
আসাম থেকে সম্প্রতি আমি মোটামুটি দুশ্চিন্তা নিয়ে ফিরেছি। দীর্ঘদিন ধরে অজস্র বিক্ষোভে রাজ্যটি তপ্ত হয়ে আছে। আসামে ‘বিদেশি খেদাও’ আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সেখানকার আলোড়নের কথা আমার মনে পড়ছে। মূলত সেটা ছিল বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষের বিরুদ্ধে আন্দোলন। এই আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন অল আসাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (এএএসইউ) সে সময় প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর সঙ্গে আলোচনায় বসে এবং রাজীব গান্ধী প্রতিশ্রুতি দেন যে, ‘বিদেশিদের’ চিহ্নিত করা হবে এবং ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। এবং চূড়ান্তভাবে তাদের আসাম থেকে বহিষ্কার করা হবে। সে রকম কিছু কখনো ঘটেনি। বাস্তবত, অসমিয়াদের অবস্থান মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। এমনকি এ বিষয়ে চুক্তি হলেও আমার সন্দেহ রয়ে যায় যে, এটা কখনো বাস্তবায়িত হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার অভিবাসীদের বিভিন্ন রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো রাজ্যই তাদের পুনর্বাসনে রাজি হয়নি। কয়েক বছরের বিরতির পর, এটা পরিষ্কার হয়ে গেল যে ‘বিদেশিদের’ বের করে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। নয়াদিল্লির উচিত জীবিকার সন্ধানে যারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসেছে, তাদের কাজের অনুমতিপত্র দেওয়া। তারাও চায় তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে, কিন্তু যেহেতু তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই, সেহেতু তারা রয়ে গেল এবং দীর্ঘমেয়াদি লাঞ্ছনার শিকার হলো।
নয়াদিল্লি-এএএসইউ চুক্তি থেকেই ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম বা উলফার জন্ম। এই ফ্রন্ট নিজেকে সার্বভৌম আসাম রাষ্ট্রের পর্যায়ে উন্নীত করেছে এবং খোলাখুলি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এই সহিংসতার জন্য আসামে এবং অন্য যেসব জায়গায়, বিশেষত ভুটানের পাদদেশে এবং মিয়ানমার সীমান্তে যেখানে উলফা ক্যাডারদের ঘাঁটি রয়েছে, সেখানে নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
উলফার চ্যালেঞ্জ কাবু হয়ে যায় যখন সংগঠনটির সভাপতি অরবিন্দ রাজখোয়া এবং তাত্ত্বিক ভীমকান্ত বুড়াগোহাইনকে বাংলাদেশ সরকার ভারতের হাতে তুলে দেয়। এই অঞ্চলে ক্রিয়াশীল পাঁচটি বিদ্রোহী সংগঠন দিল্লির প্রতি ঢাকার সহযোগিতাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু এসবে ঢাকা মোটেই বিচলিত না হয়ে বরং জানিয়েছে, বাংলাদেশের মাটি থেকে তারা ভারতীয় সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে উপড়ে ফেলবে।
সন্দেহ নেই যে আসামের রাজ্য সরকার উলফার সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু তারা সার্বভৌমত্বের দাবি না ছাড়ায় সমস্যা হয়েছে। সম্ভবত, আটক নেতারা সংলাপে বসার আগে তাঁদের নেতা পরেশ বড়ুয়ার সঙ্গে মিলিত হতে চান। কিন্তু উলফা উপলব্ধি করতে পারছে না যে, যতক্ষণ তারা সার্বভৌমত্বের দাবি আঁকড়ে থাকবে, ততক্ষণ কোনো ভারতীয় সরকার তাদের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হবে না। কারণ, আরও কয়েকটি ভারতীয় রাজ্যে স্বাধীনতার আন্দোলন চলছে।
সম্প্রতি আসামের রাজধানী গুয়াহাটি সফরের পর আমাকে আরও চিন্তিত করে তুলেছে অসম গণপরিষদের ভূমিকা। তারাই শাসক কংগ্রেস দলের প্রধান বিরোধী দল। অসম গণপরিষদ স্বাধীনতার দাবি না করলেও উলফার দিক থেকে শর্তহীনভাবে আলোচনায় বসার অবস্থান তারা সমর্থন করে। উলফার প্রতি রাজ্যে যে সহানুভূতি রয়েছে তা থেকে লাভবান হতে চায় অসম গণপরিষদ। গুয়াহাটিতে আমি নিজেই এটা দেখে অবাক হয়েছি। সেখানে একটি সেমিনারে আমি যখন বললাম যে, উলফার নেতাদের হাতকড়া পরানো উচিত নয়, সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত শ্রোতারা বিপুল করতালি দিয়ে আমাকে অভিনন্দিত করল। আসামের মানুষ কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণ মনে হয় না এটা বুঝছে যে, যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বন্দুক হাতে নেয়, রাষ্ট্র তাদের কোনো সুযোগ দেবে না। কেননা, তার মানে হলো আস্ত রাজনীতিটাই ধ্বংস হয়ে যাওয়া। তখন অন্যরাও একই পথ অবলম্বন করবে।
নাগাদের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত উলফার। তাদের নেতা ফিজো একইভাবে সার্বভৌমত্বের দাবি তুলেছিলেন এবং লন্ডনে থেকে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় যখন যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশনারের দায়িত্বে ছিলাম, তখন ফিজো মারা গেছেন। ফিজোর মৃত্যুর পর তাঁর সহযোদ্ধা খোদাও-ইয়ানথান আমার সঙ্গে দেখা করেন।
নাগাল্যান্ডে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকেই ইয়ানথান লন্ডনে বাস করে আসছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, তিনি নাগাল্যান্ডে গিয়ে তাঁর সহযোদ্ধাদের বোঝাতে চান, তাঁদের সহিংসতার পথ ছেড়ে দিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভারতের কাঠামোর মধ্যেই সমাধানের পথ সন্ধান করা উচিত। তিনি আমাকে বলেন, ফিজো মৃত্যুর আগে সশস্ত্র পন্থা ত্যাগ করার কথা বলেছিলেন। আমার আস্থা ছিল যে, ইয়ানথান চরমপন্থীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন। আমি চাই, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল যদি ফিজোর কাছ থেকে এটা শিখতে পারত!
আমি মনে করি, উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিষয়ে ভারতের নীতি বাস্তববাদী নয়। জওহরলাল নেহরু এই অঞ্চলকে আলাদাই রেখেছিলেন, যাতে এখানকার মানুষ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষা করে জীবনযাপন করতে পারে। অবশ্য যেকোনো সরকারের জন্য এটা কঠিন সিদ্ধান্ত। তবে তার আগে কেন্দ্রকে নিশ্চিত করতে হবে, এই এলাকাকে মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা যাবে না এবং কেবল মানসিক বন্ধনই নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ধারা বন্ধ করা চলবে না।
সত্যি যে পাকিস্তানকেও তালেবান-হুমকি উচ্ছেদ করতে হবে। কিন্তু ইসলামাবাদকেও বুঝতে হবে, যে পদ্ধতিতে তারা শাসন চালাচ্ছে তা বাদবাকি দেশের সঙ্গে কেন্দ্রের মানসিক বন্ধন জোরদার করতে সক্ষম হবে না।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
কুলদীপ নায়ার: ভারতীয় সাংবাদিক।
No comments