নামধারীদের পার পাওয়ার সুযোগ নেই-ছিনতাই, দরপত্র ছিনতাই!

দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে দুটি স্থানে। একটি সাধারণ ছিনতাই, অন্যটি দরপত্র ছিনতাই। একটি রাজশাহীতে, অন্যটি নড়াইলের লোহাগড়ায়। ভিন্ন স্থানে ও ভিন্ন ধরনের দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনার সাধারণ একটি মিল রয়েছে। দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হচ্ছেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।


ক্ষমতাসীন দল ও ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি—এ বিষয়গুলো মিলেমিশে থাকে।
নড়াইলে দরপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনাটি এ রকম: পৌরসভার হাটবাজার ইজারা দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করার পর গত মঙ্গলবার পৌরসভা কার্যালয় থেকে বাক্স ভেঙে দরপত্র ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যবসায়ী নেতারা জানিয়েছেন, যুবলীগের নেতা জিয়াউর রহমান শিকদারের নেতৃত্বে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। জিয়াউর রহমান যথারীতি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। যুবলীগের এই নেতা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ অনুযায়ী দরপত্র ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না, তা প্রমাণসাপেক্ষ। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ও কিছু অনিয়মের ‘প্রতিবাদ’ করার বিষয়টি স্বীকার করায় এটা নিশ্চিত, দরপত্র-প্রক্রিয়ায় তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, এই দরপত্রের একটি সমঝোতার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পুরো এই দরপত্র-প্রক্রিয়ার মধ্যে যে ছাত্রলীগ-যুবলীগ জড়িত, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
রাজশাহীতে ছিনতাইয়ের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মেহেদী হাসান। ছিনতাইকারীরা তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেয় মুঠোফোনসহ সঙ্গে থাকা হাজার খানেক টাকা। মেহেদী থানায় অভিযোগ করার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাঁদের গ্রেপ্তার করে, তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী। ছাত্রলীগের এক নেতা অবশ্য বলেছেন, মাদকের টাকা সংগ্রহ করতেই ছাত্রলীগের নাম করে কিছু ব্যক্তি ক্যাম্পাসে নিয়মিত ছিনতাই করে চলেছে। ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ‘ছাত্রলীগ নামধারীরা’ এই ছিনতাই করে থাকলেও অপকর্মের দায় ছাত্রলীগ এড়াতে পারে না।
দুটি খবরের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে আমরা দ্বিমুখী ব্যবস্থাই দেখতে চাই। প্রথমত, দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনাই পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলাজনিত। দ্বিতীয়ত, যুবলীগ বা ছাত্রলীগ—এই পরিচয়ের কারণে যেন কেউ কোনো সুযোগ না পায়। ঘটনা দুটি যথাযথভাবে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ছাত্রলীগ বা যুবলীগ ‘নামধারী’ বলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

No comments

Powered by Blogger.