সামরিক হস্তক্ষেপই সমাধান নয়-লিবিয়া পরিস্থিতি
তিউনিসিয়া থেকে মিসর হয়ে যে আরব বসন্ত ছড়িয়ে পড়ছিল, লিবিয়ায় এখন তা কালবৈশাখীতে রূপ নিচ্ছে। লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি নিজের পতনযাত্রার সঙ্গী করছেন তাঁর দেশের ভবিষ্যৎও। গণদাবির বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রয়োগের পথ বেছে নিয়ে তিনি কার্যত যুদ্ধ ডেকে আনছেন, বিপদাপন্ন করে তুলছেন তাঁর দেশের ভবিষ্যৎ।
লিবিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে জাতিসংঘ। লিবিয়ার আকাশে বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং যেকোনো মুহূর্তে ন্যাটোর সামরিক আক্রমণের মুখে রয়েছে দেশটি। মুখ্যত বিদ্রোহী লিবীয়দের সমর্থনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, এর মাধ্যমে আরেকটি ইরাক বা আফগানিস্তান সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাও কম নয়।
লিবিয়ার বিদ্রোহী জনতা এখন পড়েছে উভয় সংকটে। বাইরের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে তাদের আশঙ্কা ছিল দুটি: এতে করে তাদের লড়াই বেহাত হতে পারে, অন্যদিকে বেহাত হয়ে যেতে পারে জাতীয় স্বাধীনতা। কিন্তু গাদ্দাফি হত্যা-নির্যাতনের পথ বেছে নেওয়ায় শান্তিপূর্ণ আরব অভ্যুত্থানকেও সশস্ত্র পথ বেছে নিতে হয়। বিদ্রোহীরা বেনগাজিসহ অনেক শহর থেকে গাদ্দাফিপন্থী সেনাদের তাড়িয়ে দেয়। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সংগ্রাম কমিটি। কিন্তু বেপরোয়া গাদ্দাফির বিমান আক্রমণ ও ট্যাংক অভিযানের মুখে বিদ্রোহীদের মুক্তাঞ্চলও হুমকির মুখে। এ অবস্থায় বৃহৎ শক্তিগুলোর নেতৃত্বে সামরিক হস্তক্ষেপই সমাধান বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। মনে রাখা দরকার, এই রাষ্ট্রগুলোই ইরাক-আফগানিস্তান ও কসোভোতে এ রকম সামরিক অভিযান চালিয়েছিল। সেসব অভিযানে গণতন্ত্র আসেনি, কিন্তু এসেছে গৃহযুদ্ধের অভিশাপ। তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে সামরিক হস্তক্ষেপ আকর্ষণীয় মনে হলেও তা আরও গভীর সমস্যার জন্ম দেবে এবং তা চলতে পারে বছরের পর বছর। অন্যদিকে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে চলমান আরব গণ-আন্দোলনের ওপরও।
জনগণের বড় অংশ গাদ্দাফিবিরোধী হলেও গাদ্দাফির পক্ষেও রয়েছে কয়েকটি গোত্র। এ অবস্থায় সামরিক অভিযানের অর্থ হলো, ত্রিপোলি আর বেনগাজিতে দুটি পাল্টাপাল্টি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া এবং লিবিয়া বিভক্ত হয়ে যাওয়া। তাতে করে তেলসম্পদে সমৃদ্ধ দেশটির পশ্চিমা শক্তির অধীন হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের মৃত্যু এড়াতে যে সামরিক অভিযানের কথা বলা হচ্ছে, সেই অভিযানের ফলেও সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে, তাতে আরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটার আশঙ্কাও প্রবল। এ অবস্থায় ন্যাটোর সামরিক দাপট বুমেরাং হতে পারে। বরং আরব লিগ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খোঁজা যেতে পারে। জাতিসংঘের দ্বারা বিমান-উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা কার্যকর করার পাশাপাশি গাদ্দাফি সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে বর্জন করা, অর্থনৈতিক অবরোধ জারি রাখা, তাঁর সরকারের সব ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধী ঘোষণা করার মতো পদক্ষেপও ফল দিতে পারে। এর আলামত ইতিমধ্যে স্পষ্ট। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাদ্দাফি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। এ অবস্থায় লিবিয়ার ওপর একটি যুদ্ধ চাপিয়ে না দিয়ে অন্য সব পথে চেষ্টা চালানোই হবে প্রজ্ঞার পরিচয়। বিশ্ববাসীও আরেকটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ দেখতে নারাজ।
লিবিয়ার বিদ্রোহী জনতা এখন পড়েছে উভয় সংকটে। বাইরের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে তাদের আশঙ্কা ছিল দুটি: এতে করে তাদের লড়াই বেহাত হতে পারে, অন্যদিকে বেহাত হয়ে যেতে পারে জাতীয় স্বাধীনতা। কিন্তু গাদ্দাফি হত্যা-নির্যাতনের পথ বেছে নেওয়ায় শান্তিপূর্ণ আরব অভ্যুত্থানকেও সশস্ত্র পথ বেছে নিতে হয়। বিদ্রোহীরা বেনগাজিসহ অনেক শহর থেকে গাদ্দাফিপন্থী সেনাদের তাড়িয়ে দেয়। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সংগ্রাম কমিটি। কিন্তু বেপরোয়া গাদ্দাফির বিমান আক্রমণ ও ট্যাংক অভিযানের মুখে বিদ্রোহীদের মুক্তাঞ্চলও হুমকির মুখে। এ অবস্থায় বৃহৎ শক্তিগুলোর নেতৃত্বে সামরিক হস্তক্ষেপই সমাধান বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। মনে রাখা দরকার, এই রাষ্ট্রগুলোই ইরাক-আফগানিস্তান ও কসোভোতে এ রকম সামরিক অভিযান চালিয়েছিল। সেসব অভিযানে গণতন্ত্র আসেনি, কিন্তু এসেছে গৃহযুদ্ধের অভিশাপ। তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে সামরিক হস্তক্ষেপ আকর্ষণীয় মনে হলেও তা আরও গভীর সমস্যার জন্ম দেবে এবং তা চলতে পারে বছরের পর বছর। অন্যদিকে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে চলমান আরব গণ-আন্দোলনের ওপরও।
জনগণের বড় অংশ গাদ্দাফিবিরোধী হলেও গাদ্দাফির পক্ষেও রয়েছে কয়েকটি গোত্র। এ অবস্থায় সামরিক অভিযানের অর্থ হলো, ত্রিপোলি আর বেনগাজিতে দুটি পাল্টাপাল্টি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া এবং লিবিয়া বিভক্ত হয়ে যাওয়া। তাতে করে তেলসম্পদে সমৃদ্ধ দেশটির পশ্চিমা শক্তির অধীন হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের মৃত্যু এড়াতে যে সামরিক অভিযানের কথা বলা হচ্ছে, সেই অভিযানের ফলেও সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে, তাতে আরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটার আশঙ্কাও প্রবল। এ অবস্থায় ন্যাটোর সামরিক দাপট বুমেরাং হতে পারে। বরং আরব লিগ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খোঁজা যেতে পারে। জাতিসংঘের দ্বারা বিমান-উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা কার্যকর করার পাশাপাশি গাদ্দাফি সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে বর্জন করা, অর্থনৈতিক অবরোধ জারি রাখা, তাঁর সরকারের সব ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধী ঘোষণা করার মতো পদক্ষেপও ফল দিতে পারে। এর আলামত ইতিমধ্যে স্পষ্ট। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাদ্দাফি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। এ অবস্থায় লিবিয়ার ওপর একটি যুদ্ধ চাপিয়ে না দিয়ে অন্য সব পথে চেষ্টা চালানোই হবে প্রজ্ঞার পরিচয়। বিশ্ববাসীও আরেকটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ দেখতে নারাজ।
No comments