সবার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে-জাতীয় আদমশুমারি

জাতীয় আদমশুমারি শুরু হয়ে গেছে এবং চিহ্নিত হয়েছে গোড়ার গলদও। আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোর তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, দলিত ও ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সদস্যদের গণনার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। এতে অপ্রধান ধর্ম, বর্ণ ও আদিবাসীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন


দেশের একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। গত সোমবারের প্রথম আলোয় তাঁদের এই উদ্বেগের কথা প্রকাশিত হয়েছে।
আদমশুমারি একদিকে যেমন রাষ্ট্রের নাগরিকের সংখ্যাগণনা, তেমনি ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থান জানাও এই শুমারির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। ব্যক্তি হিসেবে, অঞ্চল হিসেবে এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ হিসেবে রাষ্ট্রের মধ্যে বসবাসকারী সব মানুষের প্রকৃত অবস্থা যে শুমারিতে উঠে আসবে, তা-ই আদর্শ জনশুমারি। এই তথ্য-পরিসংখ্যানের ভিত্তিতেই সরকারের পক্ষে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও নীতি প্রণয়ন করা সম্ভব হয়। কিন্তু ২০০১ সালের আদমশুমারিতে পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীদের সবাইকে গণনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। পাশাপাশি, পার্বত্য অঞ্চলে বসতি স্থাপনকারী বাঙালিদের সংখ্যাও কমিয়ে দেখানো হয়।
আদমশুমারি কেবল জন বা গৃহগণনা নয়। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের উন্নয়নে কী কর্মসূচি নেবে, কীভাবে জনগণের আর্থসামাজিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে, তারও প্রাথমিক প্রস্তুতি এই লোকগণনা। রাষ্ট্রের চোখে যেসব নাগরিক সমান, এবারের আদমশুমারিতে তার প্রতিফলন থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু কিংবা নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ে কারও প্রতি বৈষম্য করা যাবে না।
গত রাতে গণনা শুরু হলেও তেমন প্রচার নেই। এই ঘাটতি পূরণে সরকার বেতার, টিভি ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের পাশাপাশি দেশের সর্বত্র পোস্টার, প্রচারপত্র বিলি করতে পারে। আদমশুমারির কর্মীরা প্রতিটি মানুষ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবেন আশা করি। এই গণনায় যাতে দেশের একজন নাগরিকও বাদ না পড়েন, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরও সজাগ ও সক্রিয় থাকতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.