গদ্যকার্টুন-পাগল, শিশু ও নিরপেক্ষবিষয়ক কৌতুক by আনিসুল হক
আবার এই কথাটা এসেছে। এটা প্রথমে বলেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তখন তিনি প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা তখন আন্দোলন করছিলাম নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে। বেগম জিয়া বললেন, কোথায় পাওয়া যাবে নিরপেক্ষ লোক? শিশু ও পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। এখন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী।
এখন বেগম জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান। শেখ হাসিনা চান না। তিনি তাই বলেছেন, বেগম জিয়া এখন পাগল কোথায় পেলেন?
এই বাক্যবিনিময় বড়দের ব্যাপার। আমরা চুনোপুঁটি। এর মধ্যে আমরা নাক গলাতে যাব কেন?
আমাদের কাজ কৌতুক পরিবেশন করা। আমরা কৌতুক পরিবেশন করেই ক্ষান্ত থাকি বরং।
এটি হুমায়ূন আহমেদ পরিবেশিত কৌতুক। পাগলেরা সব সময় ভালো ভালো উপদেশ দেয়। হুমায়ূন আহমেদের মতে, সেরা উপদেশটা দিয়েছিল সেই পাগল, যাকে দেখা যেত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। সে রেলগাড়িগুলোকে দিন-রাত উপদেশ দিত, ‘বাবারা, লাইনে থাকিস।’
গীতিকার কবির বকুল চাঁদপুর শহরের এক পাগলের করুণ গল্প শুনিয়েছিলেন আমাদের। একটা পাগল রোজ রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করত আর বলত, ‘সাইডে, সাইডে।’ বাস, ট্রাক, রিকশা—সব তাকে পাশ কাটিয়ে সাইডে চলে যেত। একদিন সেই পাগল চলে গেল রেললাইনে। সে দ্রুত আগমনরত ট্রেনকে উপদেশ দিতে লাগল, ‘সাইডে সাইডে।’
এই দুটো কৌতুকে পাগলের যে অবস্থা, আমাদের হাল হয়েছে সেই রকম। আমরা বলছি, ‘বাবারা, লাইনে থাকিস।’ আমরা বলছি, ‘সাইডে, সাইডে।’ কিন্তু দেশের রাজনীতি নামের ট্রেনটা আমাদের কথা শুনছে না। আমাদের গায়ের ওপর দিয়েই তা চলে যাচ্ছে।
একজন মানসিক রোগীর ঘুম হয় না। ঘুম হয় না, কারণ তিনি রাতের বেলা ভয় পান। ভয় পান, কারণ তিনি মনে করেন, তাঁর খাটের নিচে একটা ভয়ংকর জন্তু লুকিয়ে আছে। তিনি একজন মনোরোগ চিকিৎসককে দেখাচ্ছেন দিনের পর দিন। কিন্তু কিছুতেই কোনো উন্নতি হয় না। না ঘুমিয়ে তাঁর স্বাস্থ্য খুব খারাপ হতে লাগল। শেষে তিনি চিকিৎসক বদলালেন। মাত্র একটা সাক্ষাতেই নতুন ডাক্তার তাঁর সমস্যার সমাধান করে দিলেন। সমাধানটা কী? নতুন ডাক্তার বললেন, ‘আপনি আপনার খাটের পায়া চারটা কেটে ফেলুন।’ রোগী খাটের পায়া কেটে ফেললেন। তাঁর খাটের নিচে আর কোনো জন্তু থাকে না।
আসলেই অনেক বড় সমস্যার অনেক সহজ সমাধান আছে।
মানসিক রোগীদের পাগল বলাও ঠিক নয়। অন্য যেকোনো রোগে আক্রান্তদের মতোই তাঁরাও একটা অসুখে ভুগছেন। তাঁদের অধিকার আছে চিকিৎসা পাওয়ার, সমাজে সম্মানের সঙ্গে বাঁচার। নিরপেক্ষ লোকদেরও অধিকার আছে সমাজে সুস্থ-সুন্দরভাবে জীবন যাপন করার; যদিও আমাদের সমাজে পাগলদের প্রতি চরম নিষ্ঠুরতা দেখানো হয়। একই রকম নিষ্ঠুরতা দেখানো হয় নিরপেক্ষ লোকদের সঙ্গে। তাঁরাই যে সংখ্যাগরিষ্ঠ, এই কথাটা আমাদের নেতাদের মনে থাকে না। নেতারা কেবল দলীয় আনুগত্য প্রদর্শনকারীদের জন্য কাজ করেন। গভর্নমেন্ট বাই দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টি, অব দ্য পার্টি—এই হচ্ছে আমাদের গণতন্ত্র। নেতারা কল্পনাও করতে পারেন না, একটা লোক কেন নিরপেক্ষ থাকবে। পাগল নাকি? এই দেশে কেউ নিরপেক্ষ থাকতে পারে? আমরা কাউকে নিরপেক্ষ থাকতে দেব? যদি কেউ থেকে থাকেন, আমরা তাঁকে ধরে মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেব। কিন্তু এই নিরপেক্ষ লোকেরাই বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতার বদল ঘটান। এবারও শেখ হাসিনাকে যাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছেন, তাঁরা ওই নিরপেক্ষ লোকগুলোই।
আরেকটা কৌতুক। এবার পাগল নিয়ে নয়, শিশুদের নিয়ে।
একটা বাচ্চা সারাক্ষণ বুড়ো আঙুল চোষে। তার মা বললেন, ‘তুমি যদি বুড়ো আঙুল চোষো, তোমার পেট ফুলে যাবে।’
তার বাড়িতে আসা পাশের বাড়ির সন্তানসম্ভবা মহিলা বেড়াতে এলে বাচ্চা বলল, ‘তোমার পেট কেন ফোলা? তুমি কী করেছ, আমি জানি।’
আর ওই শিশুটির কথা তো এখন সবাই জানে, যে শিশুটিকে নিয়ে নাটক লেখা হয়েছে, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী কবিতা লিখেছেন। যে শিশুটি উলঙ্গ রাজাকে বলেছিল, ‘রাজা, তোর কাপড় কোথায়?’
সত্যি বলতে কি, আমাদের দেশে এখন ওই শিশুদের দরকার, যারা বলবে, ‘রাজা, তোর কাপড় কোথায়?’ আমাদের এখন পাগল দরকার। আমাদের দেশে এখন নিরপেক্ষ লোক দরকার, যারা নিজের ভালো বুঝবে না, অন্যের ভালো বুঝবে। যারা ‘দল’ ‘দল’ বলে মারা যাবে না; ‘দেশ’ ‘দেশ’, ‘মানুষ’ ‘মানুষ’ বলে কাতর হবে।
রবীন্দ্রনাথের একটা প্রবন্ধ আছে ‘পাগল’ শীর্ষক। তাতে তিনিও সেই পাগলের প্রত্যাশাই করেছেন। বলেছেন, ‘পাগল শব্দটা আমাদের কাছে ঘৃণার শব্দ নহে...এই সৃষ্টির মধ্যে একজন পাগল আছেন, যাহা কিছু অভাবনীয় তাহা খামখা তিনিই আনিয়া উপস্থিত করেন। তিনি কেন্দ্রাতিগ, “সেন্ট্রিফুগাল”—তিনিই কেবল নিয়মকে বাহিরের দিকে টানিতেছেন।... পাগলও ইঁহারই কীর্তি, প্রতিভাও ইঁহারই কীর্তি।’
আমাদের দেশে পাগল দরকার, শিশু দরকার, নিরপেক্ষ লোক দরকার। কিন্তু তা আমরা পাব কি না, জানি না।
কিন্তু দলীয় উন্মাদনায় উন্মত্ত মানুষ, ক্ষমতার লোভে মত্ত মানুষের অভাব এই দেশে নাই। এজাতীয় মানুষ কিন্তু ক্ষতিকর।
মানসিক হাসপাতালে একজন রোগী আরেক রোগীকে বাঁচিয়েছে। দ্বিতীয় লোকটা সুইমিং পুলে ঝাঁপ দিয়েছিল আত্মহত্যা করার জন্য। প্রথম লোকটা তাকে উদ্ধার করেছে। হাসপাতালের পরিচালক প্রথম জনকে ডেকে বললেন, ‘আপনি তো খুব ভালো কাজ করেছেন! আপনার রেকর্ড ভালো। আপনাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আপনি একজনকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। অবশ্য সে পরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।’
রোগী বলল, ‘স্যার, উনি নিজে নিজে ঝোলেননি। ভিজে গিয়েছিলেন বলে আমি তাকে শুকোনোর জন্য রেলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিলাম। গলায় দড়ি বেঁধে তাঁকে ঝোলাতে হয়েছে।’
দেশ উদ্ধারের নামে দেশের ভবিষ্যৎকে গলায় দড়ি দিয়ে কেউ যেন ঝোলাতে না পারে।
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
এই বাক্যবিনিময় বড়দের ব্যাপার। আমরা চুনোপুঁটি। এর মধ্যে আমরা নাক গলাতে যাব কেন?
আমাদের কাজ কৌতুক পরিবেশন করা। আমরা কৌতুক পরিবেশন করেই ক্ষান্ত থাকি বরং।
এটি হুমায়ূন আহমেদ পরিবেশিত কৌতুক। পাগলেরা সব সময় ভালো ভালো উপদেশ দেয়। হুমায়ূন আহমেদের মতে, সেরা উপদেশটা দিয়েছিল সেই পাগল, যাকে দেখা যেত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। সে রেলগাড়িগুলোকে দিন-রাত উপদেশ দিত, ‘বাবারা, লাইনে থাকিস।’
গীতিকার কবির বকুল চাঁদপুর শহরের এক পাগলের করুণ গল্প শুনিয়েছিলেন আমাদের। একটা পাগল রোজ রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করত আর বলত, ‘সাইডে, সাইডে।’ বাস, ট্রাক, রিকশা—সব তাকে পাশ কাটিয়ে সাইডে চলে যেত। একদিন সেই পাগল চলে গেল রেললাইনে। সে দ্রুত আগমনরত ট্রেনকে উপদেশ দিতে লাগল, ‘সাইডে সাইডে।’
এই দুটো কৌতুকে পাগলের যে অবস্থা, আমাদের হাল হয়েছে সেই রকম। আমরা বলছি, ‘বাবারা, লাইনে থাকিস।’ আমরা বলছি, ‘সাইডে, সাইডে।’ কিন্তু দেশের রাজনীতি নামের ট্রেনটা আমাদের কথা শুনছে না। আমাদের গায়ের ওপর দিয়েই তা চলে যাচ্ছে।
একজন মানসিক রোগীর ঘুম হয় না। ঘুম হয় না, কারণ তিনি রাতের বেলা ভয় পান। ভয় পান, কারণ তিনি মনে করেন, তাঁর খাটের নিচে একটা ভয়ংকর জন্তু লুকিয়ে আছে। তিনি একজন মনোরোগ চিকিৎসককে দেখাচ্ছেন দিনের পর দিন। কিন্তু কিছুতেই কোনো উন্নতি হয় না। না ঘুমিয়ে তাঁর স্বাস্থ্য খুব খারাপ হতে লাগল। শেষে তিনি চিকিৎসক বদলালেন। মাত্র একটা সাক্ষাতেই নতুন ডাক্তার তাঁর সমস্যার সমাধান করে দিলেন। সমাধানটা কী? নতুন ডাক্তার বললেন, ‘আপনি আপনার খাটের পায়া চারটা কেটে ফেলুন।’ রোগী খাটের পায়া কেটে ফেললেন। তাঁর খাটের নিচে আর কোনো জন্তু থাকে না।
আসলেই অনেক বড় সমস্যার অনেক সহজ সমাধান আছে।
মানসিক রোগীদের পাগল বলাও ঠিক নয়। অন্য যেকোনো রোগে আক্রান্তদের মতোই তাঁরাও একটা অসুখে ভুগছেন। তাঁদের অধিকার আছে চিকিৎসা পাওয়ার, সমাজে সম্মানের সঙ্গে বাঁচার। নিরপেক্ষ লোকদেরও অধিকার আছে সমাজে সুস্থ-সুন্দরভাবে জীবন যাপন করার; যদিও আমাদের সমাজে পাগলদের প্রতি চরম নিষ্ঠুরতা দেখানো হয়। একই রকম নিষ্ঠুরতা দেখানো হয় নিরপেক্ষ লোকদের সঙ্গে। তাঁরাই যে সংখ্যাগরিষ্ঠ, এই কথাটা আমাদের নেতাদের মনে থাকে না। নেতারা কেবল দলীয় আনুগত্য প্রদর্শনকারীদের জন্য কাজ করেন। গভর্নমেন্ট বাই দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টি, অব দ্য পার্টি—এই হচ্ছে আমাদের গণতন্ত্র। নেতারা কল্পনাও করতে পারেন না, একটা লোক কেন নিরপেক্ষ থাকবে। পাগল নাকি? এই দেশে কেউ নিরপেক্ষ থাকতে পারে? আমরা কাউকে নিরপেক্ষ থাকতে দেব? যদি কেউ থেকে থাকেন, আমরা তাঁকে ধরে মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেব। কিন্তু এই নিরপেক্ষ লোকেরাই বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতার বদল ঘটান। এবারও শেখ হাসিনাকে যাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছেন, তাঁরা ওই নিরপেক্ষ লোকগুলোই।
আরেকটা কৌতুক। এবার পাগল নিয়ে নয়, শিশুদের নিয়ে।
একটা বাচ্চা সারাক্ষণ বুড়ো আঙুল চোষে। তার মা বললেন, ‘তুমি যদি বুড়ো আঙুল চোষো, তোমার পেট ফুলে যাবে।’
তার বাড়িতে আসা পাশের বাড়ির সন্তানসম্ভবা মহিলা বেড়াতে এলে বাচ্চা বলল, ‘তোমার পেট কেন ফোলা? তুমি কী করেছ, আমি জানি।’
আর ওই শিশুটির কথা তো এখন সবাই জানে, যে শিশুটিকে নিয়ে নাটক লেখা হয়েছে, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী কবিতা লিখেছেন। যে শিশুটি উলঙ্গ রাজাকে বলেছিল, ‘রাজা, তোর কাপড় কোথায়?’
সত্যি বলতে কি, আমাদের দেশে এখন ওই শিশুদের দরকার, যারা বলবে, ‘রাজা, তোর কাপড় কোথায়?’ আমাদের এখন পাগল দরকার। আমাদের দেশে এখন নিরপেক্ষ লোক দরকার, যারা নিজের ভালো বুঝবে না, অন্যের ভালো বুঝবে। যারা ‘দল’ ‘দল’ বলে মারা যাবে না; ‘দেশ’ ‘দেশ’, ‘মানুষ’ ‘মানুষ’ বলে কাতর হবে।
রবীন্দ্রনাথের একটা প্রবন্ধ আছে ‘পাগল’ শীর্ষক। তাতে তিনিও সেই পাগলের প্রত্যাশাই করেছেন। বলেছেন, ‘পাগল শব্দটা আমাদের কাছে ঘৃণার শব্দ নহে...এই সৃষ্টির মধ্যে একজন পাগল আছেন, যাহা কিছু অভাবনীয় তাহা খামখা তিনিই আনিয়া উপস্থিত করেন। তিনি কেন্দ্রাতিগ, “সেন্ট্রিফুগাল”—তিনিই কেবল নিয়মকে বাহিরের দিকে টানিতেছেন।... পাগলও ইঁহারই কীর্তি, প্রতিভাও ইঁহারই কীর্তি।’
আমাদের দেশে পাগল দরকার, শিশু দরকার, নিরপেক্ষ লোক দরকার। কিন্তু তা আমরা পাব কি না, জানি না।
কিন্তু দলীয় উন্মাদনায় উন্মত্ত মানুষ, ক্ষমতার লোভে মত্ত মানুষের অভাব এই দেশে নাই। এজাতীয় মানুষ কিন্তু ক্ষতিকর।
মানসিক হাসপাতালে একজন রোগী আরেক রোগীকে বাঁচিয়েছে। দ্বিতীয় লোকটা সুইমিং পুলে ঝাঁপ দিয়েছিল আত্মহত্যা করার জন্য। প্রথম লোকটা তাকে উদ্ধার করেছে। হাসপাতালের পরিচালক প্রথম জনকে ডেকে বললেন, ‘আপনি তো খুব ভালো কাজ করেছেন! আপনার রেকর্ড ভালো। আপনাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আপনি একজনকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। অবশ্য সে পরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।’
রোগী বলল, ‘স্যার, উনি নিজে নিজে ঝোলেননি। ভিজে গিয়েছিলেন বলে আমি তাকে শুকোনোর জন্য রেলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিলাম। গলায় দড়ি বেঁধে তাঁকে ঝোলাতে হয়েছে।’
দেশ উদ্ধারের নামে দেশের ভবিষ্যৎকে গলায় দড়ি দিয়ে কেউ যেন ঝোলাতে না পারে।
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
No comments