সরকারি দলের দখলবাজি-কঠোর হাতে দমন করা হোক
দেশে সরকার থাকে দখলবাজি রোধ করার জন্য, রাষ্ট্রের তথা জনগণের সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য। কিন্তু এ দেশে আমরা বরাবরই তার উল্টোটা দেখে আসছি। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সে দলের লোকজনই দখলবাজিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আর সরকার সেগুলো দেখেও না দেখার ভান করে।
গতকালের কালের কণ্ঠে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি দলের দখলবাজি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বনানীতে রেলের জমিতে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের কার্যালয়, গুলশানে যুবলীগের কার্যালয়, মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়, কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা সেতুর নিচে কৃষক লীগের কার্যালয়- এমনি আরো বহু কিছু। এগুলো দখলবাজ দলীয় কর্মীদের একটি কৌশলমাত্র। দলীয় বা অঙ্গসংগঠনের সাইনবোর্ড টানিয়ে জায়গার দখল নেওয়া হলেও সেখানে দোকান ঘর তুলে ভাড়ার নামে চলে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি। বনানীতে বিমানবন্দরমুখী ভিআইপি সড়কের ফুটপাত ঘেঁষে রেলের জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ৫২টি অবৈধ স্থাপনা। বনানী রেলস্টেশনের ঢোকার পথেই বানানো হয়েছে দুটি টিনশেড ঘর। রেলওয়ে বস্তি উচ্ছেদের অভিযান চালালেও এগুলোতে হাত দেওয়ার সাহস পায় না কেউ। একইভাবে অন্যান্য এলাকায় রেলওয়ে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পতিত জমিতে চলছে এসব দখলবাজি ও চাঁদাবাজির ব্যবসা। এমনকি ফুটপাত কিংবা ফুটপাতের পাশের পতিত জমিতেও চলে এই দখলবাজি। মহাখালী, তেজগাঁও, কুড়িল, বিশ্বরোড, আগারগাঁও, তালতলাসহ অনেক জায়গায় দেখা যায় একই দৃশ্য। আর যারা রাঘববোয়াল তারা তো আরো বেপরোয়া। সরকারের খাসজমি ও লেক দখল করে গড়ে তোলে স্থায়ী স্থাপনা। কে রুখবে তাদের? সায়েদাবাদে রেলক্রসিংয়ের পূর্বদিকে সায়েদাবাদ সুপার মার্কেট। রেলওয়ের ৭৭ শতাংশ জমির ওপর এ মার্কেট গড়ে তুলেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা। তেজগাঁওয়ে দুই শ্রমিক লীগ নেতা রেলওয়ের প্রায় ৩০ কাঠা জমি দখল করে ট্রাকস্ট্যান্ড বানিয়েছেন। আমরা কি এসব দখলবাজি ও চাঁদাবাজির হাত থেকে কখনো মুক্তি পাব না?
আওয়ামী লীগ সম্ভবত নির্বাচনী ইশতেহারের কথা ভুলেই গেছে, যেমনটি ক্ষমতায় এলে সাধারণত হয়ে থাকে। তা না হলে বিগত নির্বাচনের আগে যে আওয়ামী লীগ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও লুটপাটের হিসাব দিতে দিতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছিল, নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল, '... চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালো টাকা ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে', সেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে এসব ঘটবে কেন? তাহলে আমরা কি মনে করব, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মানেই হলো জনগণের সঙ্গে এক ধরনের ধাপ্পাবাজি? মহাজোট সরকারের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশিত ছিল না। আমরা চাই, দ্রুত এসবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে নতুন আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা হোক।
আওয়ামী লীগ সম্ভবত নির্বাচনী ইশতেহারের কথা ভুলেই গেছে, যেমনটি ক্ষমতায় এলে সাধারণত হয়ে থাকে। তা না হলে বিগত নির্বাচনের আগে যে আওয়ামী লীগ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও লুটপাটের হিসাব দিতে দিতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছিল, নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল, '... চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালো টাকা ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে', সেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে এসব ঘটবে কেন? তাহলে আমরা কি মনে করব, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মানেই হলো জনগণের সঙ্গে এক ধরনের ধাপ্পাবাজি? মহাজোট সরকারের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশিত ছিল না। আমরা চাই, দ্রুত এসবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে নতুন আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা হোক।
No comments