চিকিৎসাসেবা-কিডনি কেনাবেচা ও অপপ্রচার by এ বি এম আবদুল্লাহ
উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায়ও আশানুরূপ অগ্রগতি হয়েছে। প্রথাগত চিকিৎসার পাশাপাশি এখন আমাদের দেশে নিউরোসার্জারি, এনজিওগ্রাম, হার্ট সার্জারি, যেমন— বাইপাস, রিং লাগানো, ভালভ প্রতিস্থাপন এই সাফল্যের অন্যতম উদাহরণ।
বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জন এবং কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে প্রায় ২১৮ জনসহ বর্তমান সাল পর্যন্ত প্রায় ৭০০ জন রোগীর কিডনি সাফল্যজনকভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের সাফল্যের হার উন্নত দেশের মতোই।
বর্তমানে দেশেই কিডনি প্রতিস্থাপনের সুব্যবস্থা হওয়ায় এসব সমস্যার সমাধান হয়েছে, চিকিৎসার হয়রানি আর খরচ কমেছে অনেক, যেকোনো ভুক্তভোগী ব্যক্তি এটা স্বীকার করবেন। কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে মাত্র দুই লাখ টাকাতেই কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে। অথচ ভারতে কমপক্ষে ১০ লাখ আর সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক গিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করালে কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা শুরুতেই খরচ হয়।
কিডনি প্রতিস্থাপন একটি জটিল চিকিৎসা। শুধু কেটে লাগিয়ে দিলেই হবে না, তার আগে যেমন নানাবিধ পরীক্ষা করে নিতে হবে, তেমনি প্রতিস্থাপনের পরও নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। কিডনি অপসারণ এবং প্রতিস্থাপনও যেখানে-সেখানে করা যায় না। এর জন্য যেমন দরকার চিকিৎসকের যথাযথ জ্ঞান এবং সার্জিক্যাল দক্ষতা, তেমনি প্রয়োজন প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামোগত সুবিধা। এই অবকাঠামো তৈরি করাটাও ব্যয়বহুল। নিবেদিতপ্রাণ কয়েকজন প্রথিতযশা কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিজেদের অনেক সময় নষ্ট করে, যথেষ্ট ত্যাগ স্বীকার এবং কষ্টের বিনিময়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের এই ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন।
কিন্তু কিডনির অপরিহার্যতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর অসাধু চক্র কিডনি কেনাবেচার ব্যবস্থা খুলে বসেছে। সুস্থ কিডনি ছাড়া বাঁচা দায় এবং কিডনির রোগী যেকোনো মূল্যে, যেকোনো উপায়ে কিডনি পেতে মরিয়া। আর এই সুযোগে কিছু দুষ্টচক্র দরিদ্র, অভাবী বা ঋণগ্রস্ত লোকদের ভুল বুঝিয়ে এবং প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কিডনি বিক্রি করাতে প্ররোচিত করেছে। নিঃসন্দেহে এটা অমানবিক এবং বেআইনি। এর সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই আইনানুযায়ী শাস্তি হওয়া উচিত।
কিছু মিডিয়ায় এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের জড়িত করে খবর প্রকাশ করা হচ্ছে। যদি কোনো চিকিৎসক ইচ্ছাকৃতভাবে কিডনি কেনাবেচার কথা জেনেও নিজের লাভের জন্য কিডনি প্রতিস্থাপন করেন, তবে তাঁর শাস্তি হওয়াই উচিত। কিন্তু প্রমাণের আগেই শুধু আন্দাজ করে তাঁদের অপরাধী করা কতটা যৌক্তিক?
সাধারণত যাঁর কিডনি প্রতিস্থাপনের দরকার হয়, তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তাঁর কোনো আত্মীয়স্বজন যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন, চাচা-মামা, ফুফু-খালা এবং স্ত্রী বা স্বামী স্বেচ্ছায় কিডনি দিতে পারবেন। রোগী সেই মোতাবেক দাতাকে নিয়ে আসেন এবং আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দেন। তখন চিকিৎসক বিভিন্নভাবে সাক্ষাৎকার নিয়ে এবং স্থানীয় প্রতিনিধির দেওয়া সম্পর্কের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি দেখে আত্মীয়তার সম্পর্ক যাচাই করে নেন। এরপর রোগী ও ডোনারকে একই কেবিনে কয়েক দিন রাখার ব্যবস্থা করেন। সার্জনসহ অপারেশন টিমের অন্য সদস্যরা পুনরায় ডোনারের সম্পর্কে নিশ্চিত করেন। এর পরই চিকিৎসকেরা অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। একটু সন্দেহ হলে কেউ কিডনি প্রতিস্থাপন করেন না। সনদ নকল কি না, তা যাচাই করা অথবা রোগী এবং কিডনিদাতার বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করা—কোনোটাই চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব নয়।
নেতিবাচক প্রচারের কারণে চিকিৎসকেরা রয়েছেন আতঙ্কে। সব দোষ নিজের ঘাড়ে এসে পড়ার ভয়ে এখন অনেক চিকিৎসকই কিডনি অপারেশন থেকে বিরত থাকছেন। আর এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রোগীরা, বিশেষ করে, দরিদ্ররা। প্রতিস্থাপনের মতো কিডনি থাকা সত্ত্বেও অনেকে তা করতে পারছেন না। এসব ঘটনা বর্তমানে বৈধভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের সাফল্যকে বন্ধ করার ষড়যন্ত্র কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা দরকার। কিডনি বেচাকেনার সঙ্গে নামীদামি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান জড়িয়ে এ দেশে কিডনি সংযোজন বন্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
এ বিষয়গুলোর আলোকে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আত্মীয়তা সম্পর্কের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সরকার বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে পারে, যাদের ছাড়পত্রের পরই শুধু চিকিৎসকেরা কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। এ ছাড়া ১৯৯৯ সালের বিদ্যমান আইনে আত্মীয় ছাড়া কিডনি দান করার বিধান নেই এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু যদি কোনো আত্মীয়র সঙ্গে রোগীর রক্ত বা টিস্যু কিডনিগ্রহীতার সঙ্গে না মেলে, তবে রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য কী করা যায় বা কার কাছ থেকে কিডনি নেওয়া যায়, এর কোনো নির্দেশনা আইনে নেই। আত্মীয়র বাইরে যদি কেউ স্বেচ্ছায় কিডনি দান করতে চান, সে ক্ষেত্রে আইনটা শিথিল করা যায় কি না তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে দেখতে পারে। মৃত্যু-পরবর্তী কিডনি দান করার ব্যাপারে জনগণকে উৎসাহিত করার পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
এ ছাড়া চিকিৎসকের কর্তব্য হচ্ছে, দাতার সঙ্গে সময় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করে তাঁকে কিডনি দান করলে কী কী সমস্যা হতে পারে, তা ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া। কিছু ঝুঁকির কথা জেনেও কেউ যদি কিডনি দানে উৎসাহী থাকেন, তবে চিকিৎসকের দায়দায়িত্ব কমে যাবে। আর যিনি কিডনি গ্রহণ করবেন, তাঁকেও জানাতে হবে যে কিডনি নিলেই যে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকবেন, তা নয়, তাঁকে নিয়মিত চেকআপ করাতে হবে এবং কিছু ওষুধ সারা জীবন খেতে হবে। এসব ওষুধের দামও কম নয় এবং এরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। কাজেই কিডনি প্রতিস্থাপনের আগেই সবকিছু চিন্তাভাবনা করে দাতা এবং গ্রহীতা উভয়েরই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
চিকিৎসা একটি সংবেদনশীল বিষয়। এ ক্ষেত্রে অবহেলা যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, তেমনি প্রমাণ ছাড়াই সন্দেহ বা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রচারণাও কাম্য নয়। এতে লাভ কারোরই হবে না, বরং ক্ষতি হবে রোগীদের।
ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ: ডিন, মেডিসিন অনুষদ, অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমানে দেশেই কিডনি প্রতিস্থাপনের সুব্যবস্থা হওয়ায় এসব সমস্যার সমাধান হয়েছে, চিকিৎসার হয়রানি আর খরচ কমেছে অনেক, যেকোনো ভুক্তভোগী ব্যক্তি এটা স্বীকার করবেন। কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে মাত্র দুই লাখ টাকাতেই কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে। অথচ ভারতে কমপক্ষে ১০ লাখ আর সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক গিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করালে কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা শুরুতেই খরচ হয়।
কিডনি প্রতিস্থাপন একটি জটিল চিকিৎসা। শুধু কেটে লাগিয়ে দিলেই হবে না, তার আগে যেমন নানাবিধ পরীক্ষা করে নিতে হবে, তেমনি প্রতিস্থাপনের পরও নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। কিডনি অপসারণ এবং প্রতিস্থাপনও যেখানে-সেখানে করা যায় না। এর জন্য যেমন দরকার চিকিৎসকের যথাযথ জ্ঞান এবং সার্জিক্যাল দক্ষতা, তেমনি প্রয়োজন প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামোগত সুবিধা। এই অবকাঠামো তৈরি করাটাও ব্যয়বহুল। নিবেদিতপ্রাণ কয়েকজন প্রথিতযশা কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিজেদের অনেক সময় নষ্ট করে, যথেষ্ট ত্যাগ স্বীকার এবং কষ্টের বিনিময়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের এই ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন।
কিন্তু কিডনির অপরিহার্যতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর অসাধু চক্র কিডনি কেনাবেচার ব্যবস্থা খুলে বসেছে। সুস্থ কিডনি ছাড়া বাঁচা দায় এবং কিডনির রোগী যেকোনো মূল্যে, যেকোনো উপায়ে কিডনি পেতে মরিয়া। আর এই সুযোগে কিছু দুষ্টচক্র দরিদ্র, অভাবী বা ঋণগ্রস্ত লোকদের ভুল বুঝিয়ে এবং প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কিডনি বিক্রি করাতে প্ররোচিত করেছে। নিঃসন্দেহে এটা অমানবিক এবং বেআইনি। এর সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই আইনানুযায়ী শাস্তি হওয়া উচিত।
কিছু মিডিয়ায় এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের জড়িত করে খবর প্রকাশ করা হচ্ছে। যদি কোনো চিকিৎসক ইচ্ছাকৃতভাবে কিডনি কেনাবেচার কথা জেনেও নিজের লাভের জন্য কিডনি প্রতিস্থাপন করেন, তবে তাঁর শাস্তি হওয়াই উচিত। কিন্তু প্রমাণের আগেই শুধু আন্দাজ করে তাঁদের অপরাধী করা কতটা যৌক্তিক?
সাধারণত যাঁর কিডনি প্রতিস্থাপনের দরকার হয়, তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তাঁর কোনো আত্মীয়স্বজন যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন, চাচা-মামা, ফুফু-খালা এবং স্ত্রী বা স্বামী স্বেচ্ছায় কিডনি দিতে পারবেন। রোগী সেই মোতাবেক দাতাকে নিয়ে আসেন এবং আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দেন। তখন চিকিৎসক বিভিন্নভাবে সাক্ষাৎকার নিয়ে এবং স্থানীয় প্রতিনিধির দেওয়া সম্পর্কের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি দেখে আত্মীয়তার সম্পর্ক যাচাই করে নেন। এরপর রোগী ও ডোনারকে একই কেবিনে কয়েক দিন রাখার ব্যবস্থা করেন। সার্জনসহ অপারেশন টিমের অন্য সদস্যরা পুনরায় ডোনারের সম্পর্কে নিশ্চিত করেন। এর পরই চিকিৎসকেরা অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। একটু সন্দেহ হলে কেউ কিডনি প্রতিস্থাপন করেন না। সনদ নকল কি না, তা যাচাই করা অথবা রোগী এবং কিডনিদাতার বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করা—কোনোটাই চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব নয়।
নেতিবাচক প্রচারের কারণে চিকিৎসকেরা রয়েছেন আতঙ্কে। সব দোষ নিজের ঘাড়ে এসে পড়ার ভয়ে এখন অনেক চিকিৎসকই কিডনি অপারেশন থেকে বিরত থাকছেন। আর এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রোগীরা, বিশেষ করে, দরিদ্ররা। প্রতিস্থাপনের মতো কিডনি থাকা সত্ত্বেও অনেকে তা করতে পারছেন না। এসব ঘটনা বর্তমানে বৈধভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের সাফল্যকে বন্ধ করার ষড়যন্ত্র কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা দরকার। কিডনি বেচাকেনার সঙ্গে নামীদামি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান জড়িয়ে এ দেশে কিডনি সংযোজন বন্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
এ বিষয়গুলোর আলোকে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আত্মীয়তা সম্পর্কের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সরকার বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে পারে, যাদের ছাড়পত্রের পরই শুধু চিকিৎসকেরা কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। এ ছাড়া ১৯৯৯ সালের বিদ্যমান আইনে আত্মীয় ছাড়া কিডনি দান করার বিধান নেই এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু যদি কোনো আত্মীয়র সঙ্গে রোগীর রক্ত বা টিস্যু কিডনিগ্রহীতার সঙ্গে না মেলে, তবে রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য কী করা যায় বা কার কাছ থেকে কিডনি নেওয়া যায়, এর কোনো নির্দেশনা আইনে নেই। আত্মীয়র বাইরে যদি কেউ স্বেচ্ছায় কিডনি দান করতে চান, সে ক্ষেত্রে আইনটা শিথিল করা যায় কি না তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে দেখতে পারে। মৃত্যু-পরবর্তী কিডনি দান করার ব্যাপারে জনগণকে উৎসাহিত করার পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
এ ছাড়া চিকিৎসকের কর্তব্য হচ্ছে, দাতার সঙ্গে সময় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করে তাঁকে কিডনি দান করলে কী কী সমস্যা হতে পারে, তা ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া। কিছু ঝুঁকির কথা জেনেও কেউ যদি কিডনি দানে উৎসাহী থাকেন, তবে চিকিৎসকের দায়দায়িত্ব কমে যাবে। আর যিনি কিডনি গ্রহণ করবেন, তাঁকেও জানাতে হবে যে কিডনি নিলেই যে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকবেন, তা নয়, তাঁকে নিয়মিত চেকআপ করাতে হবে এবং কিছু ওষুধ সারা জীবন খেতে হবে। এসব ওষুধের দামও কম নয় এবং এরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। কাজেই কিডনি প্রতিস্থাপনের আগেই সবকিছু চিন্তাভাবনা করে দাতা এবং গ্রহীতা উভয়েরই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
চিকিৎসা একটি সংবেদনশীল বিষয়। এ ক্ষেত্রে অবহেলা যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, তেমনি প্রমাণ ছাড়াই সন্দেহ বা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রচারণাও কাম্য নয়। এতে লাভ কারোরই হবে না, বরং ক্ষতি হবে রোগীদের।
ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ: ডিন, মেডিসিন অনুষদ, অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments