সমসময়-'জুজু'র ভয়... by আতাউস সামাদ
শোনা যাচ্ছে আগামী মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রস্তাবিত বাংলাদেশ সফরের আগে দুটি কাজ হতে হবে। একটি হচ্ছে, ভারতীয় প্রদেশ আসামের বহুল আলোচিত বিদ্রোহী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম বা উলফার নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের হাতে তুলে দিতে হবে। অনুপ চেটিয়া বহু বছর ধরে বাংলাদেশের কারাগারে
আটক আছেন। ভারত সরকার অনেক দিন ধরেই তাকে নিজেদের কবলে পেতে চাইছে। বর্তমানে ক্ষমতাসীন মহাজোট তথা আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯-এর জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণ করার পরপরই বাংলাদেশে আত্মগোপনকারী উলফা নেতাদের ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বর্তমান সরকার যাত্রা শুরু করার মাস কয়েকের মধ্যেই সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক ঢাকার হলিডে পত্রিকায় লিখেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উলফা নেতাদের সংকেত পাঠিয়েছেন তারা যেন ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে রাজি হয়। আর তা না হলে তাদের বাংলাদেশের ভূমি ছাড়তে হবে। এখন দেখা যাচ্ছে, যেসব উলফা নেতাকে ভারত হাতে পেয়েছে তাদের সঙ্গে এক ধরনের আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে গোড়া থেকেই বোঝা গেছে, আলোচনায় অংশগ্রহণকারী নেতারা পুরো উলফার প্রতিনিধিত্ব করতে পারছেন না। বিশেষ করে উলফার সামরিক শাখার নেতা পরেশ বড়ূয়া নির্বাসনে থেকেও অন্তত কিছুসংখ্যক গেরিলাকে আবার সংগঠিত ও অস্ত্রসজ্জিত করতে পেরেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অনুপ চেটিয়াকে হাতের মুঠোয় পাওয়ার জন্য ভারত সরকারের ব্যগ্রতা হতে পারে তিন কারণে_ ১. তাকেও আলোচনায় অংশীদার করে এ প্রক্রিয়াকে কিছুটা অর্থপূর্ণ করে তোলা; ২. উলফা সভাপতি রাজখোয়াসহ যারা আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন তাদের মনে কিছুটা জোর বাড়ানো ও এতে করে উলফা সমর্থকদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পর্কে আস্থা তৈরি করা এবং ৩. অনুপ চেটিয়ার মাধ্যমে কোনোভাবে পরেশ বড়ূয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা। এগুলোর একটিও না হলে অনুপ চেটিয়াকে অত্যাচার করে তার কাছ থেকে তথ্য বের করে উলফার গেরিলা বাহিনীকে ধ্বংস করা ভারত সরকারের লক্ষ্য বলে ধরে নিতে হবে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরে আসার আগে নয়াদিলি্ল আর যে কাজটি সম্পন্ন দেখতে চায় তা হলো_ বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতীয় যানবাহন, পণ্য ও যাত্রী আসামসহ সে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের অবশিষ্টাংশের মধ্য দিয়ে চলাচল করার সুবিধা সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা। ভারত ও বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় পণ্য পরিবহন এবং যান ও যাত্রী চলাচলের সুযোগকে ট্রানজিট সুবিধা বলে আখ্যায়িত করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে যারা এর বিরোধিতা করছেন তারা একে 'বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের করিডোর' বলে বর্ণনা করছেন। বিরোধীদের বক্তব্য হচ্ছে_ এক দেশের পণ্য, যাত্রী ও বাহন যখন সেই দেশের এক জায়গা থেকে অন্য দ্বিতীয় একটি দেশের মধ্য দিয়ে সেই প্রথমোক্ত দেশটিরই অন্যত্র চলাচল করে তখন সে সুবিধা আর ট্রানজিট থাকে না, সেটি করিডোর হয়ে যায়। ভারত একবার সে সুবিধা পেলে তারা আর কোনোদিন এটি ছাড়বে না বলে তাদের আশঙ্কা। তারা এও বলছেন, ভারত শেষ পর্যন্ত এই করিডোর-ট্রানজিট সুবিধা সামরিক অস্ত্র, রসদ ও সেনা চলাচলের জন্য ব্যবহার করবে। এ রসদ ও সৈন্য ব্যবহার করবে তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে বিদ্রোহ দমন করার জন্য অথবা চীনের সঙ্গে সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতির জন্য। তাদের অভিমত হলো_ এর ফলে বাংলাদেশ ওই বিদ্রোহীদের এবং চীনের শত্রুতে পরিণত হবে। ফলে আমাদের দেশের নিরাপত্তা বিঘি্নত হবে; আর কিছু না হোক ভারতীয় বিদ্রোহীরা বাংলাদেশে গোপন হামলা চালাতে প্ররোচিত হবে।
ভারতকে তারই এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে, বিশেষ করে সড়কপথে চলাচলের সুবিধা দিলে তা আমাদের জন্য নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি করবে এ আশঙ্কা আমাদের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি 'জুজুর ভয় দেখানো' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ভয় অনেক দিন দেখানো হয়েছে। কিন্তু তা করা আর চলবে না (সূত্র : আমার দেশ, ২৯ জুলাই, ২০১১)। এখানে প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, 'জুজু' কী? সংসদ বাঙ্গালা অভিধানে 'জুজু' শব্দটির অর্থ বলা হয়েছে, 'শিশুদিগকে ভয় দেখাইবার জন্য কল্পিত পিশাচ। অতএব, দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো_ ভারতকে ট্রানজিট-করিডোর দেওয়ার ব্যাপারে যাদের কাছ থেকে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তারা কি কল্পিত কিছু? উত্তর হলো, 'না', মোটেও না। গত দুই-চারদিনের পত্রিকায় ভারত থেকে পাঠানো খবরে বলা হচ্ছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থারা সে দেশের কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছে, আগামী ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে উপলক্ষ করে উলফা এবং সে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার বিদ্রোহীরা অন্তর্ঘাতমূলক ঘটনা ঘটাতে পারে অর্থাৎ বিস্ফোরণ, হামলা এসব করতে পারে। বিদ্রোহীরা কতদূর কী করতে পারবে সেটা আগামীতে দেখার ব্যাপার। তবে আমরা ভারতীয় গোয়েন্দা ও আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর সূত্রে একথা নিশ্চিতভাবে জানতে পারছি যে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ আছে, বেশকিছু বিদ্রোহী সংগঠনও আছে। অর্থাৎ এই বিদ্রোহীরা রক্ত-মাংসের মানুষ, এরা ভূত-প্রেত বা 'জুজু' নয় এবং এ রকম বিদ্রোহী সংগঠন একাধিক। আমার এক তরুণ বন্ধু বাংলাদেশ ফার্স্ট অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক ইন্টারনেট ঘেঁটে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আটটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নাম পেয়েছেন। এগুলো হলো_ ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অব বোরোল্যান্ড, ন্যাশনাল ইউনাইটেড লিবারেশন টাইগার অব আসাম, ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা, অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স, অরুণাচল ড্রাগন ফোর্স, নাগা ন্যাশনাল কাউন্সিল এবং এনএসসিএন। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক ও সমরবিশারদদের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা এই সংগঠনগুলোর খোঁজখবর নিয়ে জাতিকে জানান, এরা কেমন, কেন এরা বিদ্রোহ করেছে এবং কী এদের শক্তি। এখানে সবাইকে মনে রাখতে অনুরোধ করব_ ইউরোপের অভিজ্ঞতায় বলে, যে কোনো গোপন সংগঠন চার-পাঁচশ' সদস্য নিয়েও খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। যেমন_ বাস্ক সংগঠন ইটিএ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে শ্বেতাঙ্গ জঙ্গিদের সম্পর্কে তথ্য আছে।
বাংলাদেশ সরকারকে আরেকটি হুমকির দিকে নজর দিতে অনুরোধ করব। সেটি হলো উগ্রতাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি। সম্প্রতি ওই দলের নিরাপত্তা চিন্তাবিদ সুব্রামানিয়াম একটি ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় এক নিবন্ধ লিখে দাবি করেছেন, ভারতে 'মুসলিম সন্ত্রাসী'দের হামলা চিরতরে বন্ধ করে একটি পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের প্রয়োজন বাংলাদেশের সিলেট থেকে খুলনা পর্যন্ত দখল করে নেওয়া। এ সম্পর্কে তার অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, ভারত কর্তৃক পাক-অধিকৃত কাশ্মীর দখল করা। ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া এবং ভারতের মুসলিমদের হিন্দুধর্ম গ্রহণ করতে বলে। যেহেতু সুব্রামানিয়ামের দল বিজেপি একবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় নির্বাচিত হয়েছিল তাই সুব্রামানিয়ামের কথাকে কোনো জুজুর ভয় দেখানো বলে ধরে নেওয়া ভুল হবে। এখানে বলে রাখি, ভারতের হায়দ্রাবাদ, কাশ্মীর ও সিকিম দখল কোনো জুজুর গল্প নয়। যেমন জুজু নয় বাংলাদেশের তিনদিকের সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সবকিছুই ভেবে দেখা ভালো। এদিকে গত বুধবার ৩ আগস্ট দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ভারতকে সড়ক ও নদীপথে ট্রানজিট দেওয়ার প্রস্তাবের একটি মানচিত্র প্রকাশিত হয়েছে ওই পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মন্তব্য প্রতিবেদনের সঙ্গে। মানচিত্রটি দেখলে মনে হয় ভারত ট্রানজিট চাইছে না বাংলাদেশে, চাইছে দেশজুড়ে অবাধ বিচরণক্ষেত্র। আমাদের দাবি, বাংলাদেশ সরকার অবিলম্বে দেশবাসীকে জানাক, ট্রানজিট-করিডোর নিয়ে কী করা হচ্ছে।
আতাউস সামাদ : সাংবাদিক ও কলাম লেখক
ভারতকে তারই এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে, বিশেষ করে সড়কপথে চলাচলের সুবিধা দিলে তা আমাদের জন্য নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি করবে এ আশঙ্কা আমাদের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি 'জুজুর ভয় দেখানো' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ভয় অনেক দিন দেখানো হয়েছে। কিন্তু তা করা আর চলবে না (সূত্র : আমার দেশ, ২৯ জুলাই, ২০১১)। এখানে প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, 'জুজু' কী? সংসদ বাঙ্গালা অভিধানে 'জুজু' শব্দটির অর্থ বলা হয়েছে, 'শিশুদিগকে ভয় দেখাইবার জন্য কল্পিত পিশাচ। অতএব, দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো_ ভারতকে ট্রানজিট-করিডোর দেওয়ার ব্যাপারে যাদের কাছ থেকে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তারা কি কল্পিত কিছু? উত্তর হলো, 'না', মোটেও না। গত দুই-চারদিনের পত্রিকায় ভারত থেকে পাঠানো খবরে বলা হচ্ছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থারা সে দেশের কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছে, আগামী ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে উপলক্ষ করে উলফা এবং সে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার বিদ্রোহীরা অন্তর্ঘাতমূলক ঘটনা ঘটাতে পারে অর্থাৎ বিস্ফোরণ, হামলা এসব করতে পারে। বিদ্রোহীরা কতদূর কী করতে পারবে সেটা আগামীতে দেখার ব্যাপার। তবে আমরা ভারতীয় গোয়েন্দা ও আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর সূত্রে একথা নিশ্চিতভাবে জানতে পারছি যে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ আছে, বেশকিছু বিদ্রোহী সংগঠনও আছে। অর্থাৎ এই বিদ্রোহীরা রক্ত-মাংসের মানুষ, এরা ভূত-প্রেত বা 'জুজু' নয় এবং এ রকম বিদ্রোহী সংগঠন একাধিক। আমার এক তরুণ বন্ধু বাংলাদেশ ফার্স্ট অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক ইন্টারনেট ঘেঁটে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আটটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নাম পেয়েছেন। এগুলো হলো_ ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অব বোরোল্যান্ড, ন্যাশনাল ইউনাইটেড লিবারেশন টাইগার অব আসাম, ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা, অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স, অরুণাচল ড্রাগন ফোর্স, নাগা ন্যাশনাল কাউন্সিল এবং এনএসসিএন। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক ও সমরবিশারদদের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা এই সংগঠনগুলোর খোঁজখবর নিয়ে জাতিকে জানান, এরা কেমন, কেন এরা বিদ্রোহ করেছে এবং কী এদের শক্তি। এখানে সবাইকে মনে রাখতে অনুরোধ করব_ ইউরোপের অভিজ্ঞতায় বলে, যে কোনো গোপন সংগঠন চার-পাঁচশ' সদস্য নিয়েও খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। যেমন_ বাস্ক সংগঠন ইটিএ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে শ্বেতাঙ্গ জঙ্গিদের সম্পর্কে তথ্য আছে।
বাংলাদেশ সরকারকে আরেকটি হুমকির দিকে নজর দিতে অনুরোধ করব। সেটি হলো উগ্রতাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি। সম্প্রতি ওই দলের নিরাপত্তা চিন্তাবিদ সুব্রামানিয়াম একটি ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় এক নিবন্ধ লিখে দাবি করেছেন, ভারতে 'মুসলিম সন্ত্রাসী'দের হামলা চিরতরে বন্ধ করে একটি পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের প্রয়োজন বাংলাদেশের সিলেট থেকে খুলনা পর্যন্ত দখল করে নেওয়া। এ সম্পর্কে তার অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, ভারত কর্তৃক পাক-অধিকৃত কাশ্মীর দখল করা। ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া এবং ভারতের মুসলিমদের হিন্দুধর্ম গ্রহণ করতে বলে। যেহেতু সুব্রামানিয়ামের দল বিজেপি একবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় নির্বাচিত হয়েছিল তাই সুব্রামানিয়ামের কথাকে কোনো জুজুর ভয় দেখানো বলে ধরে নেওয়া ভুল হবে। এখানে বলে রাখি, ভারতের হায়দ্রাবাদ, কাশ্মীর ও সিকিম দখল কোনো জুজুর গল্প নয়। যেমন জুজু নয় বাংলাদেশের তিনদিকের সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সবকিছুই ভেবে দেখা ভালো। এদিকে গত বুধবার ৩ আগস্ট দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ভারতকে সড়ক ও নদীপথে ট্রানজিট দেওয়ার প্রস্তাবের একটি মানচিত্র প্রকাশিত হয়েছে ওই পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মন্তব্য প্রতিবেদনের সঙ্গে। মানচিত্রটি দেখলে মনে হয় ভারত ট্রানজিট চাইছে না বাংলাদেশে, চাইছে দেশজুড়ে অবাধ বিচরণক্ষেত্র। আমাদের দাবি, বাংলাদেশ সরকার অবিলম্বে দেশবাসীকে জানাক, ট্রানজিট-করিডোর নিয়ে কী করা হচ্ছে।
আতাউস সামাদ : সাংবাদিক ও কলাম লেখক
No comments