পবিত্র কোরআনের আলো.-মুনাফিকদের জন্য আক্ষেপ এবং রাসুলকে অভয় দিয়ে সুরার সমাপ্তি
১২৬. আওয়া লা-ইয়ারাওনা আন্নাহুম ইউফ্তানূনা ফী কুলি্ল আ'-মিম্ মার্রাতান আও মার্রাতাইনি ছুম্মা লা-ইয়াতূবূনা ওয়ালা-হুম ইয্যাক্কারূন। ১২৭. ওয়া ইযা মা- উনযিলাত্ ছূরাতুন্ নাযারা বা'দ্বুহুম ইলা বা'দ্বিন; হাল্ ইয়ারা-কুম্ মিন আহাদিন ছুম্মান সারাফূ; সারাফাল্লা-হু ক্বুলূবাহুম বিআন্নাহুম ক্বাওমুন লা-ইয়াফ্ক্বাহূন।
১২৮. লাক্বাদ জা-আকুম রাছূলুম্ মিন আনফুছিকুম আ'যীযুন আ'লাইহি মা আ'নিত্তুম হারীসুন আ'লাইকুম বিলমু'মিনীনা রাঊফুর্ রাহীম।
১২৯. ফাইন তাওয়াল্লাও ফাক্বুল হাছবিইয়াল্লা-হু লা- ইলা-হা ইল্লা হুওয়া; আ'লাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুওয়া রাব্বুল আ'রশিল আ'যীম।
[সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ১২৬-১২৯]
অনুবাদ
১২৬. তারা কি দেখে না যে প্রতিবছরই কিভাবে তাদের দু-একবার (পরীক্ষায় ফেলে) বিপর্যস্ত করা হচ্ছে? এর পরও তারা তওবা করে না এবং কোনো শিক্ষাও গ্রহণ করে না।
১২৭. আর যখনই কোনো নতুন সুরা নাজিল হয় তখনই তারা পরস্পর চোখ চাওয়া-চাওয়ি করে (এই চোখ চাওয়া-চাওয়ির অর্থ), কেউ কি তোমাদের দেখতে পাচ্ছে? এরপর তারা সেখান থেকে কেটে পড়ে। আল্লাহ তায়ালাও তাদের অন্তর এভাবেই ঘুরিয়ে দেন। এরা এমন এক জনগোষ্ঠী, যাদের কোনো বিবেক-বুদ্ধি নেই।
১২৮. (হে মানব জাতি!) তোমাদের কাছে এমন এক রাসুল এসেছেন, যিনি তোমাদেরই লোক। তোমাদের যেকোনো কষ্ট তাঁর জন্য পীড়াদায়ক। তিনি সব সময় তোমাদের কল্যাণকামী। তিনি মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত সহমর্মী ও পরম দয়ালু।
১২৯. এর পরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় (অর্থাৎ এমন আপনজন ও কল্যাণকামী রাসুলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়), তবে আপনি বলে দিন, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো মা'বুদ নেই। আমি (সর্বাবস্থায়) তাঁরই ওপর ভরসা রাখি এবং তিনিই হচ্ছেন মহান আরশের অধিপতি।
ব্যাখ্যা
ইসলামে আবির্ভাবের যুগে কাফির বা আল্লাহর অবাধ্যদের বিরুদ্ধে রাসুল (সা.) ও মুসলমানদের সংগ্রামের ক্ষেত্রে মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র ও ছলচাতুরী ছিল সবচেয়ে বিব্রতকর। এই সুরার শুরু হয় কাফিরদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে। মক্কা বিজয় ও হোনায়নের যুদ্ধের পরই এই ঘোষণা দেওয়া হয়। আসলে তখনই আরব ভূমি থেকে আল্লাহর দুশমনদের বিতাড়িত করে ইসলামের শান্তি ও সুশাসনের সমাজ কায়েম করার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয় এবং পরিস্থিতি সেদিকেই এগোতে থাকে। মুসলমান সমাজ তখনই শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং তৎকালীন বিশ্বের যেকোনো শক্তির মোকাবিলার সামর্থ্য তাদের অর্জিত হতে থাকে। এ অবস্থায় মুনাফিকরা ছিল মুসলমানদের জন্য বিষকাঁটার মতো। এই সুরা শেষ করা হচ্ছে মুনাফিকদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশের মধ্য দিয়ে।
১২৬ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, মুনাফিকদের ওপর প্রায়ই তাদের মুনাফিকির কারণে বিপর্যয় নেমে আসত, ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে তারা ধরা খেয়ে যেত, সন্দেহ ও অপমানের বোঝা তাদের বইতে হতো। এর পরও এসব ঘটনা থেকে তারা কোনো শিক্ষা লাভ করত না। এ জন্য তাদের প্রতি নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
১২৭ নম্বর আয়াতে কোরআনের প্রতি তাদের আতঙ্ক, ভয় ও বিদ্বেষের বিষয়টা বর্ণনা করা হয়েছে। আসলে সত্যকে পরিহার করে মিথ্যা ছলচাতুরীকে আশ্রয় করে চলার ফলেই তাদের এ অবস্থা হয়। রাসুল (সা.)-এর কাছে নতুন ওহি এলেই তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ত, না জানি কোনো গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। তাই তারা চুপিসারে রাসুলের দরবার থেকে কেটে পড়ার চেষ্টা করত। ১২৮ ও ১২৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিজের এবং তাঁর রাসুলের প্রকৃত পরিচয় অত্যন্ত জোরালো ভাষায় বর্ণনা করেছেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১২৯. ফাইন তাওয়াল্লাও ফাক্বুল হাছবিইয়াল্লা-হু লা- ইলা-হা ইল্লা হুওয়া; আ'লাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুওয়া রাব্বুল আ'রশিল আ'যীম।
[সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ১২৬-১২৯]
অনুবাদ
১২৬. তারা কি দেখে না যে প্রতিবছরই কিভাবে তাদের দু-একবার (পরীক্ষায় ফেলে) বিপর্যস্ত করা হচ্ছে? এর পরও তারা তওবা করে না এবং কোনো শিক্ষাও গ্রহণ করে না।
১২৭. আর যখনই কোনো নতুন সুরা নাজিল হয় তখনই তারা পরস্পর চোখ চাওয়া-চাওয়ি করে (এই চোখ চাওয়া-চাওয়ির অর্থ), কেউ কি তোমাদের দেখতে পাচ্ছে? এরপর তারা সেখান থেকে কেটে পড়ে। আল্লাহ তায়ালাও তাদের অন্তর এভাবেই ঘুরিয়ে দেন। এরা এমন এক জনগোষ্ঠী, যাদের কোনো বিবেক-বুদ্ধি নেই।
১২৮. (হে মানব জাতি!) তোমাদের কাছে এমন এক রাসুল এসেছেন, যিনি তোমাদেরই লোক। তোমাদের যেকোনো কষ্ট তাঁর জন্য পীড়াদায়ক। তিনি সব সময় তোমাদের কল্যাণকামী। তিনি মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত সহমর্মী ও পরম দয়ালু।
১২৯. এর পরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় (অর্থাৎ এমন আপনজন ও কল্যাণকামী রাসুলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়), তবে আপনি বলে দিন, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো মা'বুদ নেই। আমি (সর্বাবস্থায়) তাঁরই ওপর ভরসা রাখি এবং তিনিই হচ্ছেন মহান আরশের অধিপতি।
ব্যাখ্যা
ইসলামে আবির্ভাবের যুগে কাফির বা আল্লাহর অবাধ্যদের বিরুদ্ধে রাসুল (সা.) ও মুসলমানদের সংগ্রামের ক্ষেত্রে মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র ও ছলচাতুরী ছিল সবচেয়ে বিব্রতকর। এই সুরার শুরু হয় কাফিরদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে। মক্কা বিজয় ও হোনায়নের যুদ্ধের পরই এই ঘোষণা দেওয়া হয়। আসলে তখনই আরব ভূমি থেকে আল্লাহর দুশমনদের বিতাড়িত করে ইসলামের শান্তি ও সুশাসনের সমাজ কায়েম করার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয় এবং পরিস্থিতি সেদিকেই এগোতে থাকে। মুসলমান সমাজ তখনই শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং তৎকালীন বিশ্বের যেকোনো শক্তির মোকাবিলার সামর্থ্য তাদের অর্জিত হতে থাকে। এ অবস্থায় মুনাফিকরা ছিল মুসলমানদের জন্য বিষকাঁটার মতো। এই সুরা শেষ করা হচ্ছে মুনাফিকদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশের মধ্য দিয়ে।
১২৬ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, মুনাফিকদের ওপর প্রায়ই তাদের মুনাফিকির কারণে বিপর্যয় নেমে আসত, ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে তারা ধরা খেয়ে যেত, সন্দেহ ও অপমানের বোঝা তাদের বইতে হতো। এর পরও এসব ঘটনা থেকে তারা কোনো শিক্ষা লাভ করত না। এ জন্য তাদের প্রতি নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
১২৭ নম্বর আয়াতে কোরআনের প্রতি তাদের আতঙ্ক, ভয় ও বিদ্বেষের বিষয়টা বর্ণনা করা হয়েছে। আসলে সত্যকে পরিহার করে মিথ্যা ছলচাতুরীকে আশ্রয় করে চলার ফলেই তাদের এ অবস্থা হয়। রাসুল (সা.)-এর কাছে নতুন ওহি এলেই তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ত, না জানি কোনো গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। তাই তারা চুপিসারে রাসুলের দরবার থেকে কেটে পড়ার চেষ্টা করত। ১২৮ ও ১২৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিজের এবং তাঁর রাসুলের প্রকৃত পরিচয় অত্যন্ত জোরালো ভাষায় বর্ণনা করেছেন।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments