গাড়ি ভাংচুর-নৈরাজ্য নিরাপত্তাহীনতা বাড়ায়
টঙ্গী পৌরসভার এক কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে যেভাবে গুলি ছোড়া হয়েছে তা অন্যদেরও আতঙ্কিত করবে সন্দেহ নেই। জনপ্রতিনিধিকেই যদি দৌড়ে পালিয়ে প্রাণরক্ষা করতে হয়; সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা কতটা নাজুক সে প্রশ্নও উঠবে। রোববার সন্ধ্যার ওই অঘটন সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য ইতিবাচক নয় এবং তাতে জনবিক্ষোভও স্বাভাবিক।
কিন্তু তাই বলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ এবং নির্বিচারে গাড়ি ভাংচুর কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। মোটরসাইকেলে করে এসে কারও ওপর গুলি চালানো এবং লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাংচুরের মধ্যে তফাত কতটুকু? দুই ঘটনার মধ্য দিয়েই কারও না কারও ঘরে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। সন্ত্রাসীর মুখোমুখি দাঁড়ানো কাউন্সিলর এবং ইটপাটকেল হাতে উন্মত্ত জনতার রোষে পড়া যাত্রীর মধ্যে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়, তার ভেদরেখা খুঁজে পাওয়া কঠিন। ভাংচুরের কবলে পড়ে কিংবা আতঙ্কে কারও প্রাণহানি ঘটলে এর দায় কে নিত? বড় কথা, দুর্বৃত্তের সৃষ্টি করা আতঙ্কের জবাব পাল্টা আতঙ্ক সৃষ্টি করার মাধ্যমে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিই বরং সন্ত্রাসের উর্বর ক্ষেত্র প্রস্তুত করে। কাউন্সিলরের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পাশাপাশি আমরা গাড়ি ভাংচুর ও সড়ক অবরোধের নিন্দা জানাই। আমরা আশা করি, গুলিবর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হবে। সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও ঝুট ব্যবসার কারণেই কাউন্সিলরের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। কে বা কারা এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে, প্রশাসন আন্তরিক হলে তা উদ্ঘাটন কঠিন নয়। আইনের শাসনের জন্য এর বিকল্প নেই। একই সঙ্গে গাড়ি ভাংচুরে জড়িতদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে আইন-শৃঙ্খলার আরও বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। এও মনে রাখা জরুরি, নাগরিকের দায়িত্বশীলতা ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়। কথায় কথায় গাড়ি ভাংচুরের মধ্য দিয়ে আর যাই হোক, নিরাপদ সমাজ গড়ে উঠতে পারে না। অথচ গত কয়েক দশকে সড়ক ও যানবাহনই ক্ষোভ প্রকাশের সহজ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল সমাজ চাইলে ক্ষোভের প্রকাশ নিয়মতান্ত্রিক হতেই হবে।
No comments