সাগর নদী অরণ্যের শহর by আব্দুল কুদ্দুস

শুধু বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতই নয়, কক্সবাজারে দেখার আছে অনেক কিছু। আশপাশের সবুজ পাহাড়, অরণ্য, ঝরনা, নদী, পার্ক, মন্দির আর প্যাগোডা দেখতে চলে আসুন এখনই। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ঢাকা থেকে বিমানে অথবা চেয়ারকোচে সরাসরি কক্সবাজার। শহরে থাকার জন্য তিন শতাধিক হোটেল, মোটেল ও কটেজ রয়েছে।


ভাড়া ২০০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। হোটেল থেকে হেঁটে সৈকতভ্রমণ, সমুদ্রে নেমে গোসল, স্পিডবোটে চড়ে সমুদ্রভ্রমণ, স্পিডবোটে ১০ মিনিটে মহেশখালী দ্বীপ ও সোনাদিয়ায় ভ্রমণ করা যায়। ভাড়া জনপ্রতি আসা-যাওয়া ১৬০-২০০ টাকা। রিজার্ভ ১৫০০-২০০০ টাকা। এ ছাড়া শহরের টেকপাড়ায় রাখাইনদের বার্মিজ মার্কেট, পাশের পাহাড়ে স্থাপিত মন্দির-প্যাগোডা, আট কিলোমিটার দূরে দরিয়ানগর পর্যটনকেন্দ্র, শাহেনশাহ গুহা, হিমছড়ির ঝরনাসহ বিভিন্ন স্থান দেখা যায়। ব্যাটারিচালিত টমটম, অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে কয়েক ঘণ্টায় এসব ঘুরে দেখতে পারেন। ভাড়া নেবে ৩০০-১০০০ টাকা। দরিয়ানগর অথবা হিমছড়ি থেকে দক্ষিণ দিকে আরও ১০ কিলোমিটার গেলে পাথুরে সৈকত ইনানী। দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানীতে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। রাজকাঁকড়ার মিছিল দেখতে হলে হিমছড়ি থেকে পশ্চিম দিকে হেঁটে প্যাঁচারদ্বীপ সৈকতে নামতে হবে। এখানে কচ্ছপ প্রজননের কয়েকটি হ্যাচারিও রয়েছে। ইনানী সৈকতের পাশে পাটুয়ারটেক পাহাড়ের নিচে রয়েছে ৩০০ বছরের পুরোনো ‘কানা রাজার গুহা’।

নাফ নদী, মাথিন কূপ
টেকনাফ থানা প্রাঙ্গণে মগ জমিদারকন্যা মাথিনের প্রেমের গল্প জুড়ে আছে মাথিন কূপের সঙ্গে। নাফ নদীর পাড়ে নেটং (দেবতার) পাহাড়ে রয়েছে ঐতিহাসিক ব্রিটিশ বাংকার। এখানে দেখতে পাবেন অরণ্যেঘেরা পাহাড়, নাফ নদীর মাঝে জালিয়ার দ্বীপ, এলিফ্যান্ট পয়েন্ট, মিয়ানমার সীমান্ত, বৌদ্ধমন্দির, নেচার পার্ক, হাতি খেদা, কুদুম গুহা ইত্যাদি। টেকনাফে থাকার জন্য ৩০টির মতো হোটেল রয়েছে। ভাড়া ২০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে টেকনাফের সঙ্গে সারাসরি বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। ভাড়া ১০০-১০০০ টাকা।

হেঁটে ছেঁড়াদিয়া
টেকনাফ থেকে জাহাজে করে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে যেতে হয় সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। ভাড়া আসা-যাওয়ায় ৪৫০-৭০০ টাকা। সেন্ট মার্টিনে থাকার জন্য ৩০টির বেশি হোটেল-মোটেল রয়েছে। ভাড়া ৪০০-৩০০০ টাকা। সেন্ট মার্টিন থেকে ভাটার সময় হেঁটে যাওয়া যায় আরেক দ্বীপ ছেঁড়াদিয়ায়। সেখানে দেখতে পাবেন সারিবদ্ধ কেয়াগাছ, কাঁকড়া, কচ্ছপ, চুনাপাথর, মুক্তা, নানা প্রজাতির সামুদ্রিক ও জলজ প্রাণী। এখানে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই।

সাফারি পার্ক, রামকোট
কক্সবাজার শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে চকরিয়ার ডুলাহাজরায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। ৯০০ হেক্টর বনাঞ্চল নিয়ে তৈরি এই সাফারি পার্কে বাঘ, সিংহ, ভালুক, হাতি, কুমির, হরিণসহ নানা প্রজাতির বন্য প্রাণীর দৌড়ঝাঁপ দেখতে পাবেন। কক্সবাজার থেকে সকালে গিয়ে পার্কে ঘুরে বিকেলে ফিরে আসা যায়। পার্কের ভেতরে বন বিভাগের দুটি বাংলো ও শিক্ষার্থীদের একটি ডরমেটরি রয়েছে। থাকতে গেলে পূর্বানুমতি লাগে।
চকরিয়া থেকে ফিরে আসার সময় রামুতে দেখতে পাবেন শত বছরের পুরোনো ১০টির বেশি বৌদ্ধমন্দির, প্যাগোডা, জাদি, ক্যাং। দেখতে পাবেন ১০০ ফুট লম্বা বুদ্ধমূর্তি। এ ছাড়া সবুজে ঘেরা রাবার বাগান, শাহসুজা সড়ক, রামকোট, জগৎজ্যোতি শিশু আশ্রম, বাঁকখালী নদীর অপরূপ দৃশ্য তো আছেই।
কক্সবাজার শহর থেকে সড়কপথে রামুর দূরত্ব আধা ঘণ্টা। সকাল ছয়টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এ সড়কে সব ধরনের বাস চলাচল রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.