অর্থনীতিতে অগ্রগতি সাম্য মেলেনি
মহান
স্বাধীনতার ৪৭তম বার্ষিকী পালন করছে দেশ। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতার
ঘোষণার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। পাকিস্তানি
হানাদার বাহিনীর শোষণ-বঞ্চনার নাগপাশ ছিন্ন করে সদ্য ভূমিষ্ঠ রাষ্ট্রটি
নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ প্রস্ফুটিত আলোর মধ্যগগনে। ৪৭ বছরের এই পথচলায়
বহু অর্জনে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশ। অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করে বিশ্বের বুকে
দেশের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছে এদেশের কর্মপাগল মানুষ। স্বাধীনতার ৪৭তম
বার্ষিকীর ঠিক আগে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার যোগ্যতার স্বীকৃতি দিয়েছে
জাতিসংঘ। নানা সূচকে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের সামনে এখনো অর্থনৈতিক সমতা,
সুশাসন ও কার্যকর গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পাশাপাশি বৈষম্য বেড়ে চলেছে সমানতালে
যা স্বাধীনতার মূল চেতনার পরিপন্থি। একইসঙ্গে সুশাসন ও জবাবদিহিতা পুরো
নিশ্চিত না হলে মানুষের মধ্যে সাম্য প্রতিষ্ঠা করাটাও কঠিন। কার্যকর
গণতন্ত্র আর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও সামনে নিরবচ্ছিন্ন উন্নয়নের জন্য জরুরি
বলে মনে করেন তারা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন স্বাধীনতার এতো বছরে আমাদের অর্জন ও সম্ভাবনা অনেক। তবে স্বাধীনতার পর থেকে যে ধারাবাহিকতায় অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছিল তা এক সময় ধীর হয়ে যায়। বাংলাদেশের গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বহুদূর এগিয়েছে দেশ। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এগুলো বড় প্রাপ্তি। তবে সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তিনি বলেন, সব থেকে বড় দুচিন্তার বিষয় হলো রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা জিইয়ে আছে। দেশের বড় দলগুলো আলোচনায় বসছে না। আর আলোচনায় বসবে- এমন সম্ভাবনাও খুব বেশি নেই। ফলে আগামীর দিনগুলো সুখকর নাও হতে পারে। অর্থনীতির উন্নয়নের ধারাবাহিকতা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের জন্য প্রথমে দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। যা আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। অন্য চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে আছি। এখন দরকার দারিদ্র্যবিমোচনে বেশি মনোযোগ দেয়া। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ গত কয়েক বছর ধরে একই জায়গায় স্থির রয়েছে। এই ধারা থেকে বের হতে হবে। এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। তিনি বলেন, আমাদের সুশাসনের অভাব রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করতে হবে। সহজেই ব্যবসা করা যায় এমন তালিকায় বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ১৭৭ নম্বরে। এতে বোঝাই যাচ্ছে দেশের ব্যবসার পরিবেশ কোথায়? এই জায়গা থেকে উত্তরণে আমাদের কাজ করতে হবে। এসব বিষয় আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। ৪৭ বছর পর সেই বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নেই। অনেকে এগিয়েছে। ইতিমধ্যেই উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে। এগুলো ভালো অর্জন। এটাকে ধরে রাখতে হবে। টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, এখন দরকার সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন। প্রয়োজন সমতাভিত্তিক উন্নয়ন। যেন সবাই সমান সুযোগ পায়। তিনি বলেন, দিন দিন বৈষম্য বাড়ছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে দক্ষ লোকের অভাব। এগুলোকে দক্ষ করতে হবে। শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। প্রশাসনকে রাজনীতি মুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, ক্ষমতার কাছাকাছি যারা আছে তারাই বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। এ কারণে টেকসই উন্নয়নের জন্য দরকার সমতাভিত্তিক কার্যকর উদ্যোগ।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পর আমাদের অর্জন অনেক। দেশের রপ্তানি খাত বিশ্ব বাজারে এখন একটি উজ্জ্বল নাম। এছাড়া দেশের অর্থনীতিকে আরো অগ্রসর করতে সামনে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে দেশের ব্যবসায়ীরা অনেক পরিকল্পনা করছেন, যা দেশের অর্থনীতিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। এখন মানুষ আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে। সরকারের নীতিগত সহায়তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পেলে দেশ আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শুরু হয়েছিল ঋণাত্মক দিয়ে। সর্বশেষ ২০১৫ থেকে ১৬ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.১১ শতাংশে। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬০২ ডলার। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ১২৯ ডলার। ১৯৭৩ সালে দেশের রিজার্ভ ছিল ১৭৩ মিলিয়ন ডলার বা ১৭ কোটি ৩ লাখ ডলার। গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে রিজার্ভ।
১৯৭২-৭৩ থেকে ২০১৬-১৭ দেশে জাতীয় বাজেটের আকার বেড়েছে ৪৩২ গুণ। স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় ছিল ১৬.৩৫ মিলিয়ন বা এক কোটি ৬০ লাখ ডলার। গত সাড়ে চার দশকে তা বেড়েছে কয়েক’শ গুণ।
স্বাধীনতার পর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৪২ কোটি টাকা। আর এখন রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। সর্বশেষ করদাতার সংখ্যা ২৫ লাখ ছাড়িয়েছে।
স্বাধীনতার পর প্রথম অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ২৬০ কোটি টাকা। সর্বশেষ ইপিবি রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৪২৪ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার ডলার। সরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে ব্যাপক। সেইসঙ্গে বেড়েছে বেসরকারি বিনিয়োগও। গত এক দশকে বেসরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৪ থেকে ৫ গুণ।
নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে এক সম্ভাবনার নাম। স্বাধীনতার ৪৭তম বার্ষিকীর দিনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে বাণী দিয়েছেন। বাণীতে দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি তারা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের তাগিদ দিয়ে প্রেসিডেন্ট তার বাণীতে বলেন, গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য সংযম ও পরমতসহিষ্ণুতা খুবই জরুরি। এ জন্য জাতীয় জীবনে সকলের আরো ধৈর্য্য, সংযম ও সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। জাতীয় সংসদ হবে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। এ জন্য সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’। সারাবিশ্ব আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে। ২০২১ সালের আগেই আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন স্বাধীনতার এতো বছরে আমাদের অর্জন ও সম্ভাবনা অনেক। তবে স্বাধীনতার পর থেকে যে ধারাবাহিকতায় অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছিল তা এক সময় ধীর হয়ে যায়। বাংলাদেশের গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বহুদূর এগিয়েছে দেশ। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এগুলো বড় প্রাপ্তি। তবে সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তিনি বলেন, সব থেকে বড় দুচিন্তার বিষয় হলো রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা জিইয়ে আছে। দেশের বড় দলগুলো আলোচনায় বসছে না। আর আলোচনায় বসবে- এমন সম্ভাবনাও খুব বেশি নেই। ফলে আগামীর দিনগুলো সুখকর নাও হতে পারে। অর্থনীতির উন্নয়নের ধারাবাহিকতা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের জন্য প্রথমে দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। যা আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। অন্য চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে আছি। এখন দরকার দারিদ্র্যবিমোচনে বেশি মনোযোগ দেয়া। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ গত কয়েক বছর ধরে একই জায়গায় স্থির রয়েছে। এই ধারা থেকে বের হতে হবে। এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। তিনি বলেন, আমাদের সুশাসনের অভাব রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করতে হবে। সহজেই ব্যবসা করা যায় এমন তালিকায় বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ১৭৭ নম্বরে। এতে বোঝাই যাচ্ছে দেশের ব্যবসার পরিবেশ কোথায়? এই জায়গা থেকে উত্তরণে আমাদের কাজ করতে হবে। এসব বিষয় আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। ৪৭ বছর পর সেই বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নেই। অনেকে এগিয়েছে। ইতিমধ্যেই উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে। এগুলো ভালো অর্জন। এটাকে ধরে রাখতে হবে। টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, এখন দরকার সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন। প্রয়োজন সমতাভিত্তিক উন্নয়ন। যেন সবাই সমান সুযোগ পায়। তিনি বলেন, দিন দিন বৈষম্য বাড়ছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে দক্ষ লোকের অভাব। এগুলোকে দক্ষ করতে হবে। শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। প্রশাসনকে রাজনীতি মুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, ক্ষমতার কাছাকাছি যারা আছে তারাই বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। এ কারণে টেকসই উন্নয়নের জন্য দরকার সমতাভিত্তিক কার্যকর উদ্যোগ।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পর আমাদের অর্জন অনেক। দেশের রপ্তানি খাত বিশ্ব বাজারে এখন একটি উজ্জ্বল নাম। এছাড়া দেশের অর্থনীতিকে আরো অগ্রসর করতে সামনে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে দেশের ব্যবসায়ীরা অনেক পরিকল্পনা করছেন, যা দেশের অর্থনীতিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। এখন মানুষ আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে। সরকারের নীতিগত সহায়তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পেলে দেশ আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শুরু হয়েছিল ঋণাত্মক দিয়ে। সর্বশেষ ২০১৫ থেকে ১৬ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.১১ শতাংশে। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬০২ ডলার। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ১২৯ ডলার। ১৯৭৩ সালে দেশের রিজার্ভ ছিল ১৭৩ মিলিয়ন ডলার বা ১৭ কোটি ৩ লাখ ডলার। গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে রিজার্ভ।
১৯৭২-৭৩ থেকে ২০১৬-১৭ দেশে জাতীয় বাজেটের আকার বেড়েছে ৪৩২ গুণ। স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় ছিল ১৬.৩৫ মিলিয়ন বা এক কোটি ৬০ লাখ ডলার। গত সাড়ে চার দশকে তা বেড়েছে কয়েক’শ গুণ।
স্বাধীনতার পর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৪২ কোটি টাকা। আর এখন রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। সর্বশেষ করদাতার সংখ্যা ২৫ লাখ ছাড়িয়েছে।
স্বাধীনতার পর প্রথম অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ২৬০ কোটি টাকা। সর্বশেষ ইপিবি রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৪২৪ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার ডলার। সরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে ব্যাপক। সেইসঙ্গে বেড়েছে বেসরকারি বিনিয়োগও। গত এক দশকে বেসরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৪ থেকে ৫ গুণ।
নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে এক সম্ভাবনার নাম। স্বাধীনতার ৪৭তম বার্ষিকীর দিনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে বাণী দিয়েছেন। বাণীতে দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি তারা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের তাগিদ দিয়ে প্রেসিডেন্ট তার বাণীতে বলেন, গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য সংযম ও পরমতসহিষ্ণুতা খুবই জরুরি। এ জন্য জাতীয় জীবনে সকলের আরো ধৈর্য্য, সংযম ও সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। জাতীয় সংসদ হবে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। এ জন্য সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’। সারাবিশ্ব আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে। ২০২১ সালের আগেই আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব।
No comments