চীনাদের বিশ্বাস করতেন না জওয়াহেরলাল নেহরু -অশোক পার্থসারথীর বইয়ে তথ্য
ভারতের
প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জওয়াহেরলাল নেহরু। চীনের প্রতি তিনি নমনীয়
ছিলেন না। এমন কি চীনকে বিশ্বাসও করতেন না। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধের
অনেক আগে থেকেই বিশ্বস্ত সহযোগীদের মাধ্যমে চীনের বিষয়টি মোকাবিলা করতেন।
তবে ওই সহযোগীকে গোপনীয়তা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হতো বা তাকে শপথ করে
নিতে হতো। ওই সহযোগী এই গোপনীয় বিষয় শুধু জওয়াহেরলাল নেহরুর সঙ্গেই শেয়ার
করতে পারতেন। ফলে ভিতরে ভিতরে কি ঘটছে তার পুরোটা জানতে পারতেন না নেহরুর
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভি কে কৃষ্ণা মেনন। ভারতের তুখোড় কূটনীতিক গোপাল
পার্থসারথীর (যিনি জিপি নামেও পরিচিত) ওপর লেখা একটি বইয়ে এ সব কথা বলা
হয়েছে। গোপাল পার্থসারথী ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর
নীতিনির্ধারণীবিষয়ক উপদেষ্টা ও বহুমুখী কূটনীতিক। তিনি জওয়াহেরলাল নেহরু ও
রাজীব গান্ধীর অধীনেও কাজ করেছেন। বইটির নাম ‘জিপি: ১৯১৫-১৯৯৫’। লিখেছেন
গোপাল পার্থসারথীর ছেলে অশোক পার্থসারথী। তিনিও ভারত সরকারের সাবেক একজন
উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সরকারের
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। ওই বইটি গোপাল পার্থসারথীর
রেখে যাওয়া নোটের ওপর ভিত্তি করে লিখেছেন তার ছেলে অশোক। এতে বলা হয়েছে,
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তখনকার পশ্চিম
পাকিস্তান দখল করে নিতে চেয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। এ জন্য সকল প্রস্তুতি
নিয়ে রেখেছিলেন ভারতের তখনকার সেনাপ্রধান স্যাম মানেকশ। এসবই বলা হয়েছে ওই
বইয়ে। তবে চীন বিষয়ে এতে বলা হয়েছে, গোপাল পার্থসারথীকে ১৯৫৮ সালে চীনের
রাষ্ট্রদূত করে সেখানে পাঠিয়ে দেন তাকে। এ বইয়েই আরেকটি অংশে বলা হয়েছে,
চীনের দেং সিয়াওপিং ও ইন্দিরা গান্ধী চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে
আলোচনা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাতে স্যাবোটাজ করেন একজন সিনিয়র কূটনীতিক।
অশোক পার্থসারথীর পিতা গোপাল পার্থসারথীর রেখে যাওয়া নোটকে উদ্ধৃত করেছেন
এক জায়গা। বেইজিং যাওয়ার আগের দিন ১৮ই মার্চ তার পিতা সাক্ষাৎ করেন নেহরুর
সঙ্গে। এ নিয়ে গোপাল পার্থ সারথী যে নোট রেখে গেছেন তাতে তাদের মধ্যকার
কথোপকথন রয়েছে। গোপাল পার্থসারথীর কাছে নেহরু জানতে চান-
‘সুতরাং জিপি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তোমাকে কি বলেছে? হিন্দু-চায়না ভাই ভাই? তুমি কি এটা বিশ্বাস করো না। আমি কিন্তু চীনাদের সামান্যও বিশ্বাস করি না’। এভাবেই তারা ওইদিনের বৈঠক শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘তারা হলো অহংকারী, অবিশ্বস্ত, ভ্রান্তিময় ও প্রচুর উগ্র। তোমার কাজ হবে শাশ্বত নজরদারি। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা হলো, তুমি শুধু আমাকেই টেলিগ্রাম পাঠাবে। তোমাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে, তোমাকে এই নির্দেশনা আমি দিয়েছে তা যেন কৃষ্ণা (মেনন) জানতে না পারেন। এটা এ জন্য যে, যদিও কৃষ্ণা, আপনি ও আমি আমাদের সবার একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে- বাম ও জোটনিরপেক্ষ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশের সঙ্গে। কৃষ্ণা বিশ্বাস করেন যে, কোনো সমাজতান্ত্রিক দেশ (চায়না) একটি জোট নিরপেক্ষ দেশের (ভারত) ওপর হামলা চালাতে পারে না।
এই কথোপকথনের নোট এখন অশোক পার্থসারথীর কাছে রক্ষিত আছে। এর ওপর ভিত্তি করেই তিনি লিখেছেন ‘জিপি: ১৯১৫-১৯৯৫’। বইটি প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে এ মাসের শেষের দিকে। এতে ভূমিকা লিখেছেন ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জী।
১৯৬২ সাল। তখন চীনের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ আসন্ন। চারদিকে যুদ্ধের রণপ্রস্তুতি। এ সময় গোপাল পার্থসারথীকে ডেকে পাঠানো হলো নয়া দিল্লিতে। তিনি ফিরে এলেন। যুদ্ধের পর ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক হিম শীতল হয়েগেল। তবে ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে সম্পর্ক চালু হলো। গোপাল পার্থসারথীর পরামর্শে এ কাজটি করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, যদিও তখনও দু’দেশের মধ্যে শত্রুতামুলক সম্পর্ক অব্যাহত ছিল। যুদ্ধ শেষ হওয়ার ২০ বছর পরে ১৯৮২ সালে শত্রুতামুলক সম্পর্কের যবনিকা ঘটান সেই গোপাল পার্থসারথী। এর ফলে ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বরে রাজীব গান্ধীর ঐতিহাসিক চীন সফরের পর্থ তৈরি হয়।
১৯৮২ চীনের ‘প্যারামাউন্ট লিডার’ হিসেবে পরিচিত দেং সিয়াওপিংয়ের সঙ্গে ১০৫ মিনিট বৈঠক হয় গোপাল পার্থসারথীর। সেই বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছিল তাদের মধ্যে তা এ যাবত পরিষ্কার জানা যায় নি। তা ছাড়া তা নিয়ে বিতর্কও ছিল। কিন্তু সেই বিষয়টি এবার তার ছেলে অশোক পার্থসারথী তার লেখা বইয়ে প্রকাশ করে দিয়েছেন। ওই বৈঠকে দেং ছিলেন একটি ‘প্যাকেজ ডিল’-এর মুডে। তিনি চাইছিলেন সীমান্ত বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে। ১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীনের কাছে হেরে যায় ভারত। তাই ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় লাদাখ অংশে৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা ১৫ বছরে দখল করে নেয় চীনারা। তবে অরুণাচল প্রদেশের পুরোটাই ছিল ভারতের। অশোক পার্থসারথীর লেখা অনুযায়, দেং সিয়াওপিংয়ের সঙ্গে একমত হয়েছিলেন গোপাল পার্থসারথী। তিনি বলেছিলেন, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দেংকে প্যাকেজ প্রস্তাব করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাজি।
‘সুতরাং জিপি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তোমাকে কি বলেছে? হিন্দু-চায়না ভাই ভাই? তুমি কি এটা বিশ্বাস করো না। আমি কিন্তু চীনাদের সামান্যও বিশ্বাস করি না’। এভাবেই তারা ওইদিনের বৈঠক শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘তারা হলো অহংকারী, অবিশ্বস্ত, ভ্রান্তিময় ও প্রচুর উগ্র। তোমার কাজ হবে শাশ্বত নজরদারি। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা হলো, তুমি শুধু আমাকেই টেলিগ্রাম পাঠাবে। তোমাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে, তোমাকে এই নির্দেশনা আমি দিয়েছে তা যেন কৃষ্ণা (মেনন) জানতে না পারেন। এটা এ জন্য যে, যদিও কৃষ্ণা, আপনি ও আমি আমাদের সবার একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে- বাম ও জোটনিরপেক্ষ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশের সঙ্গে। কৃষ্ণা বিশ্বাস করেন যে, কোনো সমাজতান্ত্রিক দেশ (চায়না) একটি জোট নিরপেক্ষ দেশের (ভারত) ওপর হামলা চালাতে পারে না।
এই কথোপকথনের নোট এখন অশোক পার্থসারথীর কাছে রক্ষিত আছে। এর ওপর ভিত্তি করেই তিনি লিখেছেন ‘জিপি: ১৯১৫-১৯৯৫’। বইটি প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে এ মাসের শেষের দিকে। এতে ভূমিকা লিখেছেন ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জী।
১৯৬২ সাল। তখন চীনের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ আসন্ন। চারদিকে যুদ্ধের রণপ্রস্তুতি। এ সময় গোপাল পার্থসারথীকে ডেকে পাঠানো হলো নয়া দিল্লিতে। তিনি ফিরে এলেন। যুদ্ধের পর ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক হিম শীতল হয়েগেল। তবে ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে সম্পর্ক চালু হলো। গোপাল পার্থসারথীর পরামর্শে এ কাজটি করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, যদিও তখনও দু’দেশের মধ্যে শত্রুতামুলক সম্পর্ক অব্যাহত ছিল। যুদ্ধ শেষ হওয়ার ২০ বছর পরে ১৯৮২ সালে শত্রুতামুলক সম্পর্কের যবনিকা ঘটান সেই গোপাল পার্থসারথী। এর ফলে ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বরে রাজীব গান্ধীর ঐতিহাসিক চীন সফরের পর্থ তৈরি হয়।
১৯৮২ চীনের ‘প্যারামাউন্ট লিডার’ হিসেবে পরিচিত দেং সিয়াওপিংয়ের সঙ্গে ১০৫ মিনিট বৈঠক হয় গোপাল পার্থসারথীর। সেই বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছিল তাদের মধ্যে তা এ যাবত পরিষ্কার জানা যায় নি। তা ছাড়া তা নিয়ে বিতর্কও ছিল। কিন্তু সেই বিষয়টি এবার তার ছেলে অশোক পার্থসারথী তার লেখা বইয়ে প্রকাশ করে দিয়েছেন। ওই বৈঠকে দেং ছিলেন একটি ‘প্যাকেজ ডিল’-এর মুডে। তিনি চাইছিলেন সীমান্ত বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে। ১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীনের কাছে হেরে যায় ভারত। তাই ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় লাদাখ অংশে৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা ১৫ বছরে দখল করে নেয় চীনারা। তবে অরুণাচল প্রদেশের পুরোটাই ছিল ভারতের। অশোক পার্থসারথীর লেখা অনুযায়, দেং সিয়াওপিংয়ের সঙ্গে একমত হয়েছিলেন গোপাল পার্থসারথী। তিনি বলেছিলেন, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দেংকে প্যাকেজ প্রস্তাব করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাজি।
No comments