ভারত সফরে যাচ্ছেন দালাই লামা

চীনের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ সফরে যাচ্ছেন তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা। নোবেল শান্তিজয়ী দালাই লামা আগামী ১ এপ্রিল আসামের গুয়াহাটি পৌঁছাবেন। দুই দিন সেখানে কাটিয়ে তিনি চলে যাবেন অরুণাচল প্রদেশে। সেখানে বেশ কয়েকটি ধর্মীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। চীনের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই দালাই লামার অরুণাচল সফর নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, তিনি ভারতের সম্মানিত অতিথি। তিনি তাঁর খুশিমতো ভারতের যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন। দালাই লামা বিশ্বশান্তির বার্তা নিয়ে আসাম যাচ্ছেন। প্রথম দিন তিনি আসাম ট্রিবিউন পত্রিকার ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তাঁর লেখা ‘মাই ল্যান্ড অ্যান্ড মাই পিপল’ বইটির অসমিয়া ভাষায় ‘মোর দেশ, মোর মানুহ’ প্রকাশিত হবে। পরদিন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা। আসাম থেকে তিনি চলে যাবেন অরুণাচল প্রদেশে। বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রশিক্ষণই তাঁর অরুণাচল সফরের মূল উদ্দেশ্য। চীন সীমান্তবর্তী তাওয়াং যাওয়ার কথা দালাই লামার। আর এটাকেই বড় করে ইস্যু করছে চীন। চীনের বুদ্ধিজীবীরা মনে করছেন,
দালাই লামার অরুণাচল সফর ইন্দো-চীন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে। চীনের তিব্বোতলজি রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক লিয়াং জিয়াংমিন সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘অরুণাচল চীনের অঙ্গ। তাওয়াংয়ে দালাই লামাকে যেতে দিয়ে ঠিক করছে না ভারত। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে এটা ক্ষতিকারক।’ তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ ভারত। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়ে দিয়েছে, দালাই লামা ভারতের সম্মানিত অতিথি। তিনি ভারতের যেখানে খুশি যেতে পারেন। ১৯৬৯ সাল থেকে ভারতের আতিথ্য গ্রহণ করছেন দালাই লামা। তাঁর এই সফরকে স্বাগত জানিয়েছে গুয়াহাটির সামাজিক সংস্থা ব্যতিক্রম। ব্যতিক্রমের সম্পাদক ড. সৌমেন ভরতিয়ার মতে, শান্তির বার্তা ছড়াতে দালাই লামার মতো ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব অত্যন্ত জরুরি। অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চীনের মানসিকতার সমালোচনা করেছেন অধ্যাপক অরুণোদয় সাহা। মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দালাই লামা ধর্মীয় গুরু হিসেবে শান্তির বার্তা ছড়াতে আসছেন। তাঁর কথা শোনার জন্য এই অঞ্চলের মানুষ উদ্‌গ্রীব।

No comments

Powered by Blogger.