গুণে ভরা স্বর্ণলতা

স্বর্নলতা বা আলোকলতা একটি পরজীবী উদ্ভিদ। এ লতা নিয়ে মানুষের বিস্ময় বা কৌতূহলের শেষ নেই। হলুদ-সোনালি রঙের, নরম ও সরু। কোন পাতা নেই, লতাই এর দেহ- কান্ড- মূল সব। লতা থেকেই বংশ বিস্তার করে। সোনালী রং এর চিকন লতার মত বলে নাম হয়েছে স্বর্ণলতা। বীজ ও কাণ্ড নানাবিধ ঔষধি গুণে ভরা। মানিকগঞ্জের প্রায় সব এলাকাতেই এটি সহজলভ্য। উদ্ভিদ বিষয়ক জার্নাল মারফত জানা যায়, সাধারণত ছোট ও মাঝারি উচ্চতার গাছ বা বেড়ার গাছে জোঁকের মতো জড়িয়ে থাকে। আশ্রয়দাতা গাছের কাণ্ডে নিজের মূল কাণ্ড গেঁথে তার সাহায্যে খাদ্য সংগ্রহ করে। তারপর নিজের শাখা-প্রশাখায় জড়িয়ে নেয় গাছটিকে। একসময় মূল কাণ্ড খুঁজে পাওয়া যায় না। অনেক ক্ষেত্রে আশ্রয় দাতা গাছের মৃত্যুও ঘটিয়ে থাকে। তাই অনেকেই বাড়ির আঙিনা কিংবা বাগানের ফলবতী গাছে এটির অস্তিত্ব ঝামেলার চোখে দেখে। অনেক সময় বাধ্য হয়েই এ লতার উপক্রম থেকে বাঁচার জন্য গাছের কান্ড কেটে ফেলে। স্বর্ণলতার বৈজ্ঞানিক নাম- জবভষবীধ।
লতার তুলনায় ফুল ততটা সহজলভ্য নয়। গাছের বীজ ও কাণ্ড ঔষধি গুণে ভরা। লতার স্বাদ তেতো, কচলালে আঠালো ধরনের হয়। বসন্ত-গ্রীষ্মে পত্রহীন লতায় ছোট মঞ্জরীদণ্ডে সাদা রঙের ফুল ফোটে। দেখতে অনেকটা ছোট বাতির মতো, মাথায় পাঁচ পাপড়ি, পরাগকেশর অনেকটাই অদৃশ্য। বোঁটা বেশ ছোট এবং গুচ্ছবদ্ধ। ফল পাকে বসন্তের শেষে বা বর্ষায়। সাধারনত চার প্রজাতির লতা দেখা যায়। পৃথিবীতে হলুদ, কমলা ও লাল রঙের ১০০ থেকে ১৭০ প্রজাতির সন্ধান পাওয়া যায়। সাধনা ঔষধালয়ের হেকিম উত্তম পালিত বলেন, মোটা লতা পিত্তজনিত রোগে, সরু লতা দূষিত ক্ষতে, ডায়াবেটিস ও জন্ডিসে এবং বীজ কৃমি ও পেটের বায়ু নাশে খাওয়ানো হয়। এ ছাড়া পাণ্ডুরোগ, পক্ষাঘাত, মাংসপেশির ব্যথা, যকৃৎ ও পিলে রোগে এর বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়।

No comments

Powered by Blogger.