ভাঙাচোরা বেঞ্চ, আবর্জনায় ভরা তাজমহল রোড পার্ক
মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড পার্কটি সংস্কার হয় না প্রায় ২০ বছর। ভেতরে আবর্জনায় ভরা। বসার জায়গাগুলোও ভাঙা। স্থানীয় লোকজন বলছেন, পার্কটি সংস্কার করা হলে এলাকাবাসীর বিনোদনের সুযোগ হবে। রাইড থাকলে শিশুরা খেলতে পারবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তাজমহল রোড পার্কটি খুব বেশি বড় নয়। সি ব্লকের ওই পার্কে গাছপালা আছে প্রচুর। সিমেন্টের তৈরি ভাঙাচোরা কয়েকটি বেঞ্চ আর মাঝখানে অকেজো একটি ফোয়ারা পার্কের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। শিশুদের খেলার জন্য কোনো রাইড না থাকায় পার্কে এলে তাদের সময় কাটে গল্প করে, কানামাছি খেলে, সাইকেল চালিয়ে। গতকাল শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, পুরো পার্কেই আবর্জনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। পড়ে আছে খাবারের খালি প্যাকেট, নানা রকম কাগজ। পার্কে হাঁটতে আসা মোমেন হক বলেন, ‘সপ্তাহে এক দিনও পরিষ্কার করতে কেউ আসে কি না, সন্দেহ।’ পার্কের এক পাশে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পরিষ্কারের সামগ্রী রাখা। জানা গেল, এগুলো আশপাশের সড়ক পরিষ্কারের সরঞ্জাম। কাজ শেষে পার্কে এনে রাখা হয়। পার্কটিতে বসার জন্য সিমেন্টের যে বেঞ্চগুলো আছে, এর বেশ কয়েকটিই ভাঙা। ভেতরের রড বের হয়ে আছে। কয়েকটিতে আবার ময়লাও জমে আছে। পার্কটি স্যাঁতসেঁতে। হাঁটার জায়গাগুলোয় শেওলা জমে আছে। কয়েকজন বলেন, বৃষ্টি হলে পিচ্ছিল থাকে, হাঁটা যায় না। একটি বেঞ্চে বসে ১০ বছরের সাবিহা ও ৮ বছরের সুষমা চকলেট খাচ্ছিল।
ওরা বলে, বসার মতো বেঞ্চ পেলে বসে থাকে বা কানামাছি খেলে। পাশেই সাইকেল চালাচ্ছিল এক শিশু। পথ মসৃণ না হওয়ায় চালাতে গিয়ে বারবার ওঠানামা করতে হচ্ছিল তাকে। পার্কের ঠিক মাঝখানে একটি ফোয়ারা। দেখেই বোঝা যায়, সেখানে পানি নেই দীর্ঘদিন। খেলতে থাকা কয়েকজন শিশু বলে, ওরা কখনো ফোয়ারায় পানি দেখেনি। ফোয়ারাটি মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল-সংবলিত। চারদিক নোংরা হয়ে আছে। ফোয়ারার চারপাশের গাছগুলোর কোনো যত্ন নেওয়া হয় না। জানা গেল, ১৯৯৭ সালের পর পার্কে আর সংস্কার করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনা আক্তার বলেন, ‘পার্কে শিশুদের খেলার রাইড থাকলে ভালো হতো। পরিষ্কার থাকলে মানুষ সময় কাটানোরও জায়গা পেত।’ ডিএনসিসির উন্মুক্ত স্থানসমূহের আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়নের জন্য প্রায় ২৮০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ৭ মার্চ একনেকে অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্পের আওতায় জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী করে ২২টি পার্ক, ৪টি খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থানের আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন করা হবে। এই ২২টি পার্কের মধ্যে তাজমহল রোডের পার্কটিও আছে। ডিএনসিসির পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক বিন ইউসুফ বলেন, এই প্রকল্পের বাইরেও ডিএনসিসির নিজস্ব অর্থায়নে ইতিমধ্যে কয়েকটি পার্কের উন্নয়নকাজ শুরু হয়েছে। একনেকে প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ায় এখন নকশা প্রণয়ন ও আনুষঙ্গিক কাজ শুরু করা হয়েছে। এই অর্থবছরের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শুরুর চেষ্টা করা হবে।
No comments