দুর্ভিক্ষের মুখে দেশ ছাড়ছেন দক্ষিণ সুদানের মানুষ

দুর্ভিক্ষের মুখে দেশ ছাড়ছেন আফ্রিকার দরিদ্রতম রাষ্ট্র দক্ষিণ সুদানের বাসিন্দারা। খাদ্যপ্রাপ্তির আশায় সীমান্ত পেরিয়ে পাশের দেশ উগান্ডায় আশ্রয় নিচ্ছেন তারা। অনেকেই মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন উগান্ডার শরণার্থী শিবিরগুলোতে। দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত এসব মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে জাতিসংঘ। তবে দক্ষিণ সুদানে চলমান দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতা দেশটির প্রেসিডেন্ট সিলভা কির ‘উপেক্ষা করছেন’ বলে অভিযোগ তুলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এ ছাড়া দেশটির মানবিক সংকট ও দুর্ভিক্ষের কারণে নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা চিন্তা করছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। খবর এএফপি ও আল-জাজিরার। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) মুখপাত্র ফিলিপ্পো গ্রান্ডি জানান, প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার শরণার্থী দক্ষিণ সুদান ছাড়ছেন। সীমান্ত পেরিয়ে তারা উগান্ডার শরণার্থী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সমবেত হচ্ছেন। বিপুল পরিমাণ শরণার্থীর বোঝা সামলানো উগান্ডা সরকারের পক্ষেও সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রুহাকানা রুগুন্ডা। তিনি বলেন, তার দেশ দক্ষিণ সুদানের শরণার্থীদের সাদরে গ্রহণ করছে।
কিন্তু বিপুল শরণার্থীর চাপে উগান্ডাও সমস্যায় পড়েছে। ইতিমধ্যে দেশটি খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকটের মুখে পড়েছে। বাড়তি চাপ পড়ছে দেশের অবকাঠামো খাতেও। শরণার্থীদের জন্য দ্রুত আন্তর্জাতিক সহায়তা কামনা করেছেন তিনি। এদিকে দক্ষিণ সুদানে চলমান দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতায় সরকারের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সুদান ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তিনি বলেন, দুর্ভিক্ষকে ‘উপেক্ষা করছেন’ প্রেসিডেন্ট সিলভা কির। দেশটির সরকারের এ উপেক্ষা এবং সমাধানে অনাগ্রহ সংকটকে আরও বৃদ্ধি করবে। এজন্য বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র এসব মানুষের কল্যাণে দেশটির সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণ এখন সময়ের দাবি। তিনি এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে প্রেসিডেন্ট সিলভার প্রতি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানান এবং দেশটির সব রাজনৈতিক পক্ষকে একযোগে দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় কাজ করতে অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে দুর্ভিক্ষপীড়িত এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশ্ববাসীর প্রতিও আহ্বান জানান গুতেরেস। অন্য দিকে, দক্ষিণ সুদানে দুর্ভিক্ষের কারণে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি তুলেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী ও ১০টি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ৯ রাষ্ট্রের সমর্থন।

No comments

Powered by Blogger.