‘আতিয়া মহলে’ আটকা মেয়ে, পথ চেয়ে পঙ্গু বাবা
সন্দেহে থাকা জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলের’ তিন তলায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে আটকা মেয়ে-জামাই। সঙ্গে শিশু দুই নাতি-নাতনি। একজনের বয়স পাঁচ বছর, আরেকজনের নয়। বাসায় বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস নেই। অন্ধকারে কান্নাকাটি করছে শিশুরা। আতিয়া মহলের কাছাকাছি একটি চায়ের দোকানে বসে এসব কথা জানান পঙ্গু মহসিন হোসেন। খবর পেয়ে গতকাল শুক্রবার দুপুরেই ঢাকা থেকে রওনা হয়েছেন। রাত থেকেই মেয়ে-জামাইয়ের অপেক্ষায় চায়ের দোকানে বসে আছেন। চোখে কান্নার নহর। আজ শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে মেয়ে-জামাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে মহসিনের। তাঁরা জানিয়েছেন, বাচ্চারা ভীষণ ভয় পাচ্ছে। দরজা-জানালা বন্ধ করে তাঁরা ভেতরে বসে আছেন। ফোনের নেটওয়ার্কেও সমস্যা হচ্ছে। ঘর অন্ধকার থাকায় বাচ্চারা বেশি ভয় পাচ্ছে। মহসিন হাঁটতে পারেন না। ২০০৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী। জামাতা আর নাতি-নাতনির দুশ্চিন্তায় অস্থির তিনি। কিছুতেই স্থির হতে পারছেন না।
একবার এ চায়ের দোকানে বসেন তো আরেকবার অন্য চায়ের দোকানে যান। মহসিনের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর ভাগনিজামাই ও ছেলে। একই চায়ের দোকানে দেখা মেলে বীথি আক্তারের। কোলে ঘুমিয়ে আছে চার বছরের মেয়ে। বীথি বলেন, তিনি ‘জঙ্গি আস্তানার’ পাশের বাড়ি আতিয়া মহল ২-এ ভাড়া থাকেন। গতকাল পুলিশ ভবনটি খালি করতে বলে। এরপর তিনি এক প্রতিবেশীর বাড়িতে যান। সকালে আবার চায়ের দোকানে আসেন। বীথির স্বামী ওরসে গেছেন। তিনি না আসা পর্যন্ত চায়ের দোকানেই থাকবেন। আতিয়া মহলের আশপাশে মহসিন ও বীথির মতো বেশ কয়েকজন এসেছেন স্বজনের খোঁজে। বাড়ির কাছের রাস্তায় কাউকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছে। রাস্তার ওপর সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রস্তুত রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে আতিয়া মহল ঘিরে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ সকাল সাড়ে নয়টার একটু পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়েছে।
No comments