সিলেটে জঙ্গি আস্তানা ঘেরাও
সিলেট
নগরীর দক্ষিণ সুরমা থানার শিববাড়ি এলাকায় মিলল আরেক জঙ্গি আস্তানার
সন্ধান। ‘আতিয়া মহল’ নামে পাঁচতলা বাড়িটি শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে ঘিরে রাখে
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে, এ বাড়ির নিচতলায় অবস্থান
করছে নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা মুসাসহ ৪ জঙ্গি। পুলিশ জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের
আহ্বান জানালে তারা গ্রেনেড ছুড়ে মারে। জবাবে পুলিশও বেশ কয়েক রাউন্ড
ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এর আগে পুলিশ বাড়িটির প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়।
বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে ওই বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন একজন
পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী-সন্তানসহ ১৬টি পরিবার। রাত ১টায় এ রিপোর্ট লেখা
পর্যন্ত প্রায় ২০ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন তারা। ফলে সারা দিন কারও ঘরের চুলা
জ্বলেনি। শুকনো খাবার খেয়েই দিন পার করেন তারা। অন্যদিকে দিনভর অভিযানের
প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন যৌথবাহিনীর সদস্যরা।
কখন অভিযান শুরু হবে এ
ব্যাপারে জানতে চাইলে রাতে সিলেট পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ
না করে বলেন, ‘আমরা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে।
জঙ্গিদের অবস্থান, কিভাবে অভিযান হবে এসব নিয়ে কৌশল ঠিক করা হচ্ছে। ঢাকা
থেকে বিশেষ টিম সোয়াত যোগ দিয়েছে। জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট থেকে
সেনাবাহিনীর একটি অগ্রবর্তী টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। খুব সম্ভব ভোরের
দিকে আমরা অভিযান শুরু করব।’ সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রোকন
উদ্দিন জানান, আতিয়া মহলের নিচতলায় ৪ জঙ্গি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের ধারণা, চট্টগ্রাম ও ঢাকায়
সাম্প্রতিক জঙ্গিবিরোধী অভিযানের পর নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা মুসা ও নারী
জঙ্গি মর্জিনা এখানে আস্তানা গেড়েছে। পুলিশ জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রামে আটক
জঙ্গিদের দেয়া তথ্যে আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। এতে
অভিযানের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাতেই সিলেট আসে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের
(সিটিটিসি) একটি দল। আতিয়া মহলের মালিক উস্তার আলী যুগান্তরকে জানান, ভোরে
ফজরের নামাজের সময় পুলিশ তার বাসায় আসে। তার কাছে জানতে চায় ভাড়াটিয়াদের
তথ্য। তিনি সব ভাড়াটিয়ার তথ্য পুলিশকে দেন। পুলিশ সবকিছু দেখে নিচতলায় ভাড়া
থাকা মর্জিনা বেগমকে জঙ্গি হিসেবে শনাক্ত করে। এরপর উস্তার আলীকে সঙ্গে
নিয়ে পুলিশ বাসার গেটে তালা লাগিয়ে দেয়।
এর আগেই ভবনের চারদিক ঘিরে ফেলেন
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তিনি আরও জানান, তার পাঁচতলা ভবনে
২০টি ফ্ল্যাট। এর মধ্যে ভাড়াটিয়া থাকেন ১৭টিতে। বাকি তিনটি খালি। এর মধ্যে
নিচতলার একটি ফ্ল্যাট মর্জিনা ও কাউসার স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে
ফেব্রুয়ারিতে ভাড়া নেয়। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারণা, জঙ্গি মুসা নাম
বদলে কাওসার নাম নিয়ে ওই বাসায় উঠেছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ভবনটি
ঘেরাও করার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিন দফা গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতংক
সৃষ্টি করে জঙ্গিরা। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এরপর
দিনভর থেমে থেমে ফাঁকা গুলির শব্দ পাওয়া যায়। বিকাল ৪টায় ঢাকা থেকে
ঘটনাস্থলে আসে সোয়াতের টিম। এর পরপরই যোগ দেয় বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল। রাত
৮টার দিকে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্টের সেনাবাহিনীর একটি অগ্রবর্তী টিম
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। এর আগে দেশের শীর্ষ জঙ্গি শায়খ আবদুর রহমান
গ্রেফতার হয়েছিলেন নগরীর শাপলাবাগের ‘সূর্যদীঘল বাড়ি’ থেকে।
আত্মসমর্পণের আহ্বান : আতিয়া মহলে থাকা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে দফায় দফায় আহ্বান জানায় পুলিশ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বারবার হ্যান্ডমাইকে তাদের আহ্বান জানানো হয়। বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে থাকা সন্দেহভাজন চার জঙ্গিকে উদ্দেশ করে হ্যান্ডমাইকে পুলিশ বলে- মর্জিনা বেগম, আপনি শুনতে পারছেন? আপনারা বেরিয়ে আসুন। আত্মসমর্পণ করুন। আপনাদের কোনো সমস্যা হবে না। এ সময় পুলিশ তাদের একটি ফোন নম্বর দিয়ে বলে, এই নাম্বারে ফোন করে আত্মসমর্পণ করুন।
শায়খের ভাষায় কথা বলল জঙ্গিরা : পুলিশের আত্মসমর্পণের আহ্বানের জবাবে জঙ্গিরা জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমানের ভাষায় কথা বলেন। এক নারী চিৎকার করে বলেন, ‘আমরা আল্লাহর পথে আছি, আর পুলিশ শয়তানের পথে।’ বাড়ির জানালা দিয়ে পুলিশকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘তাড়াতাড়ি সোয়াত পাঠান। দেরি করছেন কেন? আমাদের সময় কম। ফোর্স পাঠান।’ ২০০৬ সালে সূর্যদীঘল বাড়িতে পুলিশের আত্মসমর্পণের আহ্বানের জবাবে জেএমবির তৎকালীন প্রধান শায়খ আবদুর রহমানও একই ভাষায় কথা বলেছিলেন।
আতংক উদ্বেগ : সন্দেহভাজন জঙ্গিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে পুলিশ আতিয়া মহলের চারদিকে অবস্থানের পর এলাকাজুড়ে উদ্বেগ-আতংক দেখা দেয়। ভবনটির চারপাশের রাস্তায় যানবাহনসহ লোক চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। আশপাশের বাসাবাড়ির কাউকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হয়নি। পাশাপাশি এলাকার দোকানপাটও বন্ধ ছিল।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি : সন্দেহভাজন জঙ্গিদের অবস্থান জেনে ভোর থেকেই বাসার চারদিক ঘিরে ফেলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিভিন্ন বাসাবাড়ির ছাদে উঠে অস্ত্র তাক করে সতর্ক অবস্থান নেয় তারা। এছাড়াও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, র্যাব, পিবিআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এলাকায় অবস্থান নেন। বিকালে বিশেষ অস্ত্র ও কৌশল বাহিনী সোয়াত সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। এরপর আসে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যায় সেনাবাহিনীর একটি অগ্রবর্তী টিম। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয় ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ও অ্যাম্বুলেন্স।
সরিয়ে দেয়া হয় পাশের ভবনের লোকজন : আতিয়া মহলের পাশের ভবন থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয় লোকজনকে। নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ২২ জনকে সকালে আতিয়া মহলের পার্শ্ববর্তী একটি চারতলা ভবন থেকে বের করে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তাদের পুলিশি হেফাজতে জহির তাহির মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হয়। রাতে বাসায় না ওঠার পরামর্শ দিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
একজন আটক : শিববাড়ির জঙ্গি আস্তানার পার্শ^বর্তী একটি ঘর থেকে একজনকে আটক করে নিয়ে গেছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। সোয়াত সদস্যরা তাকে হাতকড়া ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে নিয়ে যান। কে ওই ব্যক্তি? জানতে চাইলে এ বিষয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তাই মুখ খোলেননি।
আত্মসমর্পণের আহ্বান : আতিয়া মহলে থাকা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে দফায় দফায় আহ্বান জানায় পুলিশ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বারবার হ্যান্ডমাইকে তাদের আহ্বান জানানো হয়। বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে থাকা সন্দেহভাজন চার জঙ্গিকে উদ্দেশ করে হ্যান্ডমাইকে পুলিশ বলে- মর্জিনা বেগম, আপনি শুনতে পারছেন? আপনারা বেরিয়ে আসুন। আত্মসমর্পণ করুন। আপনাদের কোনো সমস্যা হবে না। এ সময় পুলিশ তাদের একটি ফোন নম্বর দিয়ে বলে, এই নাম্বারে ফোন করে আত্মসমর্পণ করুন।
শায়খের ভাষায় কথা বলল জঙ্গিরা : পুলিশের আত্মসমর্পণের আহ্বানের জবাবে জঙ্গিরা জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমানের ভাষায় কথা বলেন। এক নারী চিৎকার করে বলেন, ‘আমরা আল্লাহর পথে আছি, আর পুলিশ শয়তানের পথে।’ বাড়ির জানালা দিয়ে পুলিশকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘তাড়াতাড়ি সোয়াত পাঠান। দেরি করছেন কেন? আমাদের সময় কম। ফোর্স পাঠান।’ ২০০৬ সালে সূর্যদীঘল বাড়িতে পুলিশের আত্মসমর্পণের আহ্বানের জবাবে জেএমবির তৎকালীন প্রধান শায়খ আবদুর রহমানও একই ভাষায় কথা বলেছিলেন।
আতংক উদ্বেগ : সন্দেহভাজন জঙ্গিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে পুলিশ আতিয়া মহলের চারদিকে অবস্থানের পর এলাকাজুড়ে উদ্বেগ-আতংক দেখা দেয়। ভবনটির চারপাশের রাস্তায় যানবাহনসহ লোক চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। আশপাশের বাসাবাড়ির কাউকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হয়নি। পাশাপাশি এলাকার দোকানপাটও বন্ধ ছিল।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি : সন্দেহভাজন জঙ্গিদের অবস্থান জেনে ভোর থেকেই বাসার চারদিক ঘিরে ফেলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিভিন্ন বাসাবাড়ির ছাদে উঠে অস্ত্র তাক করে সতর্ক অবস্থান নেয় তারা। এছাড়াও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, র্যাব, পিবিআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এলাকায় অবস্থান নেন। বিকালে বিশেষ অস্ত্র ও কৌশল বাহিনী সোয়াত সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। এরপর আসে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যায় সেনাবাহিনীর একটি অগ্রবর্তী টিম। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয় ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ও অ্যাম্বুলেন্স।
সরিয়ে দেয়া হয় পাশের ভবনের লোকজন : আতিয়া মহলের পাশের ভবন থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয় লোকজনকে। নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ২২ জনকে সকালে আতিয়া মহলের পার্শ্ববর্তী একটি চারতলা ভবন থেকে বের করে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তাদের পুলিশি হেফাজতে জহির তাহির মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হয়। রাতে বাসায় না ওঠার পরামর্শ দিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
একজন আটক : শিববাড়ির জঙ্গি আস্তানার পার্শ^বর্তী একটি ঘর থেকে একজনকে আটক করে নিয়ে গেছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। সোয়াত সদস্যরা তাকে হাতকড়া ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে নিয়ে যান। কে ওই ব্যক্তি? জানতে চাইলে এ বিষয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তাই মুখ খোলেননি।
No comments