প্রবাসীদের বিনিয়োগের উপযুক্ত ক্ষেত্র সিলেটের পর্যটন শিল্প by ফজলে এলাহী মোহাম্মদ ফয়সাল
কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে বিনিয়োগের সম্পর্ক রয়েছে। বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদন, কর্মসংস্থান, মাথাপিছু আয় এবং জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সিলেট অঞ্চলের ব্যাংকগুলোয় রক্ষিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৮ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা।
এর মধ্যে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে মাত্র পাঁচ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। ব্যাংকে রক্ষিত আমানতের প্রায় ২৭ শতাংশ মাত্র এ অঞ্চলে বিনিয়োগ হচ্ছে। বিভিন্নমুখী সমস্যার কারণে দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় সিলেট অঞ্চলে বিনিয়োগের পরিমাণ কম। প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ, প্রবাসী-অধ্যুষিত সিলেটে আজও বিভিন্ন শিল্পে বিনিয়োগ উৎসাহব্যঞ্জক নয়। জনগণ তাদের অর্থ বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণে, কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠায়, জমি ক্রয়ে, মার্কেট নির্মাণে এবং গাড়ি ক্রয়ে ব্যয় করছে।
বিভিন্নমুখী সমস্যার কারণে প্রবাসীদের মধ্যে উৎপাদনমুখী বিনিয়োগে আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রবাসীদের অর্থ যদি সঠিক খাতে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়, তবে পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক অটুট থাকবে, অন্যথায় পরবর্তী সময়ে অর্থ পাঠানো কমে যাবে। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল পর্যটন শিল্পের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় অঞ্চল। এখানকার পাহাড়, চা বাগান, হাওর, ঝরনা ইত্যাদি পর্যটক আকর্ষণ করতে সক্ষম। সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের আরো উন্নয়ন সম্ভব এবং এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান এবং রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।
এ অঞ্চলে বেশ কিছু আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে। এসব স্থান খুঁজে বের করে যথাযথ প্রচারের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো সম্ভব। এ অঞ্চলে ক্রমেই দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া হলে স্বল্প বিনিয়োগে প্রচুর মুনাফা অর্জনের সম্ভাব্য ক্ষেত্র হতে পারে সিলেট অঞ্চলের পর্যটন শিল্প। সিলেট অঞ্চলের ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী এ অঞ্চলের পর্যটন সেক্টরে বিনিয়োগ করা যায়। তবে প্রচুর মুনাফা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া প্রবাসীদের অর্থ বিনিয়োগের একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে পর্যটন শিল্পকে বিবেচনায় আনা প্রয়োজন। এতে প্রবাসীদের সঙ্গে দেশের সম্পর্কের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গে সম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে। এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্প বিকাশে বৈদেশিক বিনিয়োগ কার্যকর হবে।
বিনিয়োগকে উৎসাহী করার লক্ষ্যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করা প্রয়োজন। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের টুরিস্ট স্পটগুলোর মধ্যে জাফলং, মাধবকুণ্ড, লাউয়াছড়া, লালাখাল, শ্রীমঙ্গল, সারি নদী প্রভৃতি অন্যতম। এ ছাড়া হামহাম জলপ্রপাত, টাঙ্গুয়ার হাওর, হাকালুকি হাওর, মাধবপুর লেক, ভোলাগঞ্জ প্রভৃতি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় টুরিস্ট স্পট। এসব স্থানকে টার্গেট করে সিলেট তথা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো সম্ভব।
যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বৃহত্তর সিলেটের পর্যটন শিল্প প্রত্যাশা অনুযায়ী বিকশিত না হওয়ার কারণ- অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, নিরাপত্তার অভাব, স্পটগুলোতে আবাসনের স্বল্পতা, প্রচারের অভাব, প্যাকেজ ট্যুরের অভাব, প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব, স্পটসংক্রান্ত তথ্যকেন্দ্রের অভাব, সুষ্ঠু নীতিমালা ও পরিকল্পনার অভাব, বেসরকারি উদ্যোগে বিনিয়োগের অনীহা প্রভৃতি। এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্প উন্নয়নে স্পটগুলোতে কৃত্রিম বিনোদনের ব্যবস্থা, পর্যটন পুলিশ প্রদান, যোগাযোগের উন্নয়ন, পর্যটনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ, পর্যটকদের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা, দক্ষ জনবলের জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র, আবাসন বৃদ্ধি, প্যাকেজ ট্যুর চালু প্রভৃতি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে। সিলেট অঞ্চলের পর্যটন শিল্প উন্নত করার মাধ্যমে রাজস্ব আয় এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো সম্ভব। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের পর্যটন শিল্প বিকশিত হলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
বিভিন্নমুখী সমস্যার কারণে প্রবাসীদের মধ্যে উৎপাদনমুখী বিনিয়োগে আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রবাসীদের অর্থ যদি সঠিক খাতে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়, তবে পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক অটুট থাকবে, অন্যথায় পরবর্তী সময়ে অর্থ পাঠানো কমে যাবে। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল পর্যটন শিল্পের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় অঞ্চল। এখানকার পাহাড়, চা বাগান, হাওর, ঝরনা ইত্যাদি পর্যটক আকর্ষণ করতে সক্ষম। সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের আরো উন্নয়ন সম্ভব এবং এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান এবং রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।
এ অঞ্চলে বেশ কিছু আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে। এসব স্থান খুঁজে বের করে যথাযথ প্রচারের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো সম্ভব। এ অঞ্চলে ক্রমেই দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া হলে স্বল্প বিনিয়োগে প্রচুর মুনাফা অর্জনের সম্ভাব্য ক্ষেত্র হতে পারে সিলেট অঞ্চলের পর্যটন শিল্প। সিলেট অঞ্চলের ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী এ অঞ্চলের পর্যটন সেক্টরে বিনিয়োগ করা যায়। তবে প্রচুর মুনাফা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া প্রবাসীদের অর্থ বিনিয়োগের একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে পর্যটন শিল্পকে বিবেচনায় আনা প্রয়োজন। এতে প্রবাসীদের সঙ্গে দেশের সম্পর্কের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গে সম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে। এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্প বিকাশে বৈদেশিক বিনিয়োগ কার্যকর হবে।
বিনিয়োগকে উৎসাহী করার লক্ষ্যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করা প্রয়োজন। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের টুরিস্ট স্পটগুলোর মধ্যে জাফলং, মাধবকুণ্ড, লাউয়াছড়া, লালাখাল, শ্রীমঙ্গল, সারি নদী প্রভৃতি অন্যতম। এ ছাড়া হামহাম জলপ্রপাত, টাঙ্গুয়ার হাওর, হাকালুকি হাওর, মাধবপুর লেক, ভোলাগঞ্জ প্রভৃতি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় টুরিস্ট স্পট। এসব স্থানকে টার্গেট করে সিলেট তথা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো সম্ভব।
যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বৃহত্তর সিলেটের পর্যটন শিল্প প্রত্যাশা অনুযায়ী বিকশিত না হওয়ার কারণ- অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, নিরাপত্তার অভাব, স্পটগুলোতে আবাসনের স্বল্পতা, প্রচারের অভাব, প্যাকেজ ট্যুরের অভাব, প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব, স্পটসংক্রান্ত তথ্যকেন্দ্রের অভাব, সুষ্ঠু নীতিমালা ও পরিকল্পনার অভাব, বেসরকারি উদ্যোগে বিনিয়োগের অনীহা প্রভৃতি। এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্প উন্নয়নে স্পটগুলোতে কৃত্রিম বিনোদনের ব্যবস্থা, পর্যটন পুলিশ প্রদান, যোগাযোগের উন্নয়ন, পর্যটনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ, পর্যটকদের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা, দক্ষ জনবলের জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র, আবাসন বৃদ্ধি, প্যাকেজ ট্যুর চালু প্রভৃতি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে। সিলেট অঞ্চলের পর্যটন শিল্প উন্নত করার মাধ্যমে রাজস্ব আয় এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো সম্ভব। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের পর্যটন শিল্প বিকশিত হলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
No comments