পাষণ্ডদের শাস্তি হোক
শিশু-কিশোরদের ধরে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে পঙ্গু করে ভিক্ষা করানো সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ধারণা ছিল। জানা ছিল যে এমন ঘটনা অতি গোপনে ঘটছে।
কিন্তু কী সেই নির্যাতনের ধরন, একটি শিশুকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামিয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য কতটা নিষ্ঠুরতার আশ্রয় কিছু বিকৃত মনের অধিকারী নিতে পারে, সে সম্পর্কে মানুষের এতকাল এমন সুস্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। ভারতের সাড়াজাগানো চলচ্চিত্র স্লামডগ মিলেনিয়ামে কিছুটা ধারণা দেওয়া হলে বিশ্বব্যাপী দর্শকরা হতবাক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের শিশু নির্যাতনের এমনি একটি উদ্ঘাটিত কাহিনী যেন সেই চলচ্চিত্রকেও হার মানিয়েছে। একটি বেসরকারি চ্যানেলের অনুসন্ধানী রিপোর্টের ভিত্তিতে র্যাব ১-এর একটি দল রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে এসব ঘটনার এক হোতা শরীফুল ইসলাম কোরবান নামক এক পাষণ্ডকে। তার বক্তব্য থেকে বের হয়ে আসে লোমহর্ষক সব কাহিনী। র্যাবের কাছে স্বীকারোক্তিতে সে চরম নিষ্ঠুরতার বর্ণনা দিয়ে জানিয়েছে, কিভাবে শিশুদের ধরে নিয়ে হাত পা, শিশ্ন কেটে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামানো হয়; শিশুকে অ্যালুমিনিয়ামের পাতিলে পাঁচ বা ছয় মাস রেখে পঙ্গু করে ভিক্ষায় নামানো হয়। র্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে কোরবান জানিয়েছে, ২০০৪ সালে শরীফ নামের কিশোরকে কামরাঙ্গীরচরের বেড়িবাঁধ থেকে ধরে নিয়ে বাঁ হাতের কবজি কেটে, ২০০৬ সালে রাহাত নামের কিশোরকে একই এলাকা থেকে ধরে নিয়ে পায়ের রগ কেটে পঙ্গু করে এবং ২০০৬ সালে ৮-৯ বছরের এক অজ্ঞাতনামা বালককে ধরে নিয়ে পাতিলের মধ্যে আটকে রেখে হাত-পা বিকল করে তারপর ভিক্ষায় নামানো হয়! শুধু তাই নয়, এ চক্র কামরাঙ্গীরচর এলাকার বেড়িবাঁধ দিয়ে হেঁটে যাওয়া নারীদের ধরে নিয়ে শ্লীলতাহানি করে যৌন ব্যবসায় নামানোর মতো ঘটনাও ঘটাত। কথা না শোনায় কাউকে কাউকে হত্যা করা হয়েছে বলেও কোরবান আলী স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
এসব অপরাধের শাস্তি কী? এমন বর্বর, বিকৃত, পাশবিক কর্মকাণ্ডের কী বিচার হলে দেশের মানুষের জ্বালা মিটতে পারে? এ আসামিকে হাজির করা হবে আদালতে। আমরা এমন নারকীয় ঘটনার কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এমন শাস্তি প্রদান করতে হবে, যাতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে কেউ আর উৎসাহিত না হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আমাদের আহ্বান, এ চক্রের অন্যান্য সদস্য এবং এ ধরনের সব চক্র খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করুন। এটি শুধু আপনাদের পেশাগত দায়িত্ব নয়, নিষ্ঠুর এ নির্যাতন থেকে মানব সন্তানদের রক্ষা করার এক গুরুদায়িত্বও।
এসব অপরাধের শাস্তি কী? এমন বর্বর, বিকৃত, পাশবিক কর্মকাণ্ডের কী বিচার হলে দেশের মানুষের জ্বালা মিটতে পারে? এ আসামিকে হাজির করা হবে আদালতে। আমরা এমন নারকীয় ঘটনার কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এমন শাস্তি প্রদান করতে হবে, যাতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে কেউ আর উৎসাহিত না হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আমাদের আহ্বান, এ চক্রের অন্যান্য সদস্য এবং এ ধরনের সব চক্র খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করুন। এটি শুধু আপনাদের পেশাগত দায়িত্ব নয়, নিষ্ঠুর এ নির্যাতন থেকে মানব সন্তানদের রক্ষা করার এক গুরুদায়িত্বও।
No comments