ঢেলে সাজান চিকিৎসাব্যবস্থা
'ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগী মারা গেল'_এমন কথা প্রবাদের মতো প্রচলিত এ দেশে। আর হালে এ প্রবাদই যেন সত্য হয়ে গেছে। আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা থাকার পরও অনেক রোগীকে ডাক্তারের সাহায্য লাভের আগেই মৃত্যুবরণ করতে হয়। পশ্চাৎপদ অবস্থার কারণেই এমনটা ঘটে।
বিশেষ করে রোগী পরিবহন থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা এবং সেই সঙ্গে চিকিৎসাব্যবস্থার আধুনিকায়ন না হওয়াই এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। পাশাপাশি দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসকদের একটি অংশের দায়িত্বে অবহেলা। এসব নিয়ে লেখালেখির যেন অন্ত নেই। তার পরও কোনো কাজের কাজ হচ্ছে না। কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এ বিষয়ে। অবস্থাটা ভীতিজনকই মনে হয়েছে প্রতিবেদনে পরিবেশিত তথ্য দেখার পর। একটি জেলা হাসপাতালে কোনো জরুরি সুবিধা নেই, চিকিৎসকের অভাব যেন স্বাভাবিক ঘটনা। একবিংশ শতাব্দীতে এসে একটি জেলা হাসপাতালে যদি অজ্ঞান করানোর চিকিৎসকসহ কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকে, তাকে দুর্ভাগ্যজনক বলতেই হবে। এঙ্-রে মেশিন না থাকাটা যেন ধর্তব্যের মধ্যেই নয়। এ দুরবস্থা যে শুধু জেলা হাসপাতালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, তা-ই নয়; ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেরও দুরবস্থা ব্যাপক। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে অধিকতর আধুনিক সুবিধা দিয়ে চিকিৎসাসুবিধা সম্প্রসারিত করার সরকারি প্রতিশ্রুতি এখনো পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়নি।
হাসপাতালের প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে জরুরি বিভাগ। অথচ সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ৬০৫টি হাসপাতালের মধ্যে খুব কমসংখ্যক হাসপাতালেই জরুরি চিকিৎসাসুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে শুধু এসব অসুবিধাই মূল নয়_এখানে সততা ও আন্তরিকতার প্রশ্নটিও জড়িত। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চাকরি করে অনেক চিকিৎসক বেসরকারি চিকিৎসালয়ের তথা সংকীর্ণ ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা করেন। আবার সেখানেও অনেক চিকিৎসক চিকিৎসাকে সেবা খাত হিসেবে না দেখে একান্তই বাণিজ্যিক খাত হিসেবে মূল্যায়ন করেন। এমনও দেখা যায়, কোথাও কোথাও মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত অর্থ আদায় করতে না পারার কারণে। চিকিৎসালাভে ইচ্ছুক কোনো ব্যক্তির প্রতি অমানবিক আচরণও করা হয়। চিকিৎসকদের দায়িত্বসচেতনতার অভাব দূর করতে হলে তাঁদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সরকারি চিকিৎসকদের মধ্যে গ্রামে না যাওয়ার যে প্রবণতা, তা দূর করতে না পারলে এ সেবা খাতের উন্নয়ন সম্ভব হবে না। চিকিৎসাসেবাকে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থেকে সরিয়ে আনার মতো দুরূহ কাজটি যদি করা যায়, তাহলে আমাদের চিকিৎসাসেবার মান অনেকাংশে বেড়ে যাবে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যেভাবে ড্যাব এই খাতকে দলীয়করণের প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল বলে অভিযোগ উত্থাপিত হতো, এখনো স্বাচিপের ক্ষেত্রে তা-ও হচ্ছে। তাদের হস্তক্ষেপ কখনো কখনো রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বলেও মনে হতে পারে।
চিকিৎসা খাতের এসব দুরবস্থার কারণেই মানুষ সাধারণ চিকিৎসার জন্যও বিদেশে চলে যেতে চায়, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য দেশের সব হাসপাতালের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রত্যেক রোগীই চিকিৎসাসেবা পেতে পারে।
হাসপাতালের প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে জরুরি বিভাগ। অথচ সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ৬০৫টি হাসপাতালের মধ্যে খুব কমসংখ্যক হাসপাতালেই জরুরি চিকিৎসাসুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে শুধু এসব অসুবিধাই মূল নয়_এখানে সততা ও আন্তরিকতার প্রশ্নটিও জড়িত। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চাকরি করে অনেক চিকিৎসক বেসরকারি চিকিৎসালয়ের তথা সংকীর্ণ ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা করেন। আবার সেখানেও অনেক চিকিৎসক চিকিৎসাকে সেবা খাত হিসেবে না দেখে একান্তই বাণিজ্যিক খাত হিসেবে মূল্যায়ন করেন। এমনও দেখা যায়, কোথাও কোথাও মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত অর্থ আদায় করতে না পারার কারণে। চিকিৎসালাভে ইচ্ছুক কোনো ব্যক্তির প্রতি অমানবিক আচরণও করা হয়। চিকিৎসকদের দায়িত্বসচেতনতার অভাব দূর করতে হলে তাঁদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সরকারি চিকিৎসকদের মধ্যে গ্রামে না যাওয়ার যে প্রবণতা, তা দূর করতে না পারলে এ সেবা খাতের উন্নয়ন সম্ভব হবে না। চিকিৎসাসেবাকে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থেকে সরিয়ে আনার মতো দুরূহ কাজটি যদি করা যায়, তাহলে আমাদের চিকিৎসাসেবার মান অনেকাংশে বেড়ে যাবে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যেভাবে ড্যাব এই খাতকে দলীয়করণের প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল বলে অভিযোগ উত্থাপিত হতো, এখনো স্বাচিপের ক্ষেত্রে তা-ও হচ্ছে। তাদের হস্তক্ষেপ কখনো কখনো রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বলেও মনে হতে পারে।
চিকিৎসা খাতের এসব দুরবস্থার কারণেই মানুষ সাধারণ চিকিৎসার জন্যও বিদেশে চলে যেতে চায়, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য দেশের সব হাসপাতালের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রত্যেক রোগীই চিকিৎসাসেবা পেতে পারে।
No comments