ধর্মঘটে দুই বিমানবন্দর পাঁচ ঘণ্টা অচল-ঢাকা, চট্টগ্রামে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রায় পাঁচ ঘণ্টার ধর্মঘটে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার হযরত শাহজালাল ও চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত বিমানবন্দর অচল হয়ে পড়ে। ঢাকায় অন্তত ১২টি এয়ারলাইনসের প্রায় তিন হাজার দেশি-বিদেশি যাত্রী বিমানবন্দরে নেমে পড়ে চরম ভোগান্তিতে।
টার্মিনালের ভেতরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ভাঙচুর, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়। পরে বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা হলে শ্রমিক-কর্মচারীরা তাঁদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। দুপুর ২টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও একই ধরনের পরিস্থিতি ছিল। সেখান থেকেও কোনো ফ্লাইট ছাড়তে পারেনি।
গতকাল সকালে বিমানবন্দরের আগমনী ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ৮টা থেকে একের পর এক বিভিন্ন এয়ারলাইনসের যাত্রীরা বিমানবন্দরে নামছে। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে মালামাল খালাস বন্ধ। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীরা আটকে থাকে। একই কারণে দীর্ঘ সময় যাত্রী ও মালামাল উড়োজাহাজে তোলা যায়নি। এ কারণে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়।
গতকাল ভোর ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হলেও রানওয়ে সংস্কারের জন্য শাহজালাল বিমানবন্দর এখন প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমাবন্দরের যাত্রীসেবাসহ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করে থাকে বিমান। প্রসঙ্গত, মামলা-মোকদ্দমা প্রত্যাহার ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে জাতীয় পতাকাবাহী বিমানে গতকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় সরকার সমর্থিত বিমান শ্রমিক লীগ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ)।
সকাল ১০টার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের ভেতরে কয়েক শ বিমানকর্মী জড়ো হয়ে দাবি-দাওয়ার সপক্ষে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করতে এগিয়ে এলে শুরু হয় তুমুল হট্টগোল। এক পর্যায়ে তাঁদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ সময় সেখানের কয়েকটি কাচের দরজা ও সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুরও হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ বিমানকর্মীরা রানওয়ের এক পাশে অবস্থান নেন। তাঁরা মালামাল খালাসের অপেক্ষায় দাঁড়ানো কয়েকটি উড়োজাহাজের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। যাত্রী অসন্তোষ এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভে দুপুর ১টা পর্যন্ত পুরো বিমানবন্দর ছিল অশান্ত।
আমিরাত এয়ারলাইনসের দুবাইফেরত যাত্রী রিপন দেব ও রুবেল আহমেদ দুপুর ১২টার দিকে কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁরা সকাল ১০টার দিকে নেমেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাঁদের কার্গো বা ব্যাগেজ ফ্লাইট থেকে খালাস হচ্ছে না। কাতার এয়ারওয়েজে কুয়েত থেকে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে দেশে ফেরেন মো. আলমাজ। দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনিও হাজার হাজার যাত্রীর সঙ্গে টার্মিনাল ভবনের ভেতরে অপেক্ষা করছিলেন মালামাল বুঝে পাওয়ার অপেক্ষায়। হতাশ কণ্ঠে তিনি বলেন, দেশে ফিরেই এমন ভোগান্তিতে পড়তে হবে জানলে হয়তো আরো কিছুদিন পরে আসতাম। আত্মীয়স্বজনকে স্বাগত বা বিদায় জানাতে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীকে বিমানবন্দরের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে অসহায়ভাবে বসে থাকতে দেখা যায়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ধর্মঘট চলাকালে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়া ও ড্রুক এয়ারের কলকাতা, টার্কিশ এয়ারলাইনসের ইস্তাম্বুল, কাতার এয়ারের দোহা, আমিরাতের দুবাই, গালফ এয়ারের বাহরাইন, বিমানের রিয়াদ, কুয়েত এয়ারের কুয়েত সিটি, এয়ার চায়নার সাংহাই, এয়ার স্যাটেলাইটের কলম্বো, সৌদিয়ার রিয়াদ ও পাকিস্তান এয়ারলাইনসের করাচি ফ্লাইটসহ ডজনখানেক ফ্লাইট একে একে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামে। শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে গ্রাহকসেবার প্রায় সব কাজ বন্ধ থাকায় কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ও নিরাপত্তা সংস্থার লোকজনকেও প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যাত্রীদের সামাল দিতে তাঁরা হিমশিম খান। উত্তেজিত যাত্রীদের সঙ্গে দফায় দফায় তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা বাধে। দুই-একবার হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম হলেও শেষ পর্যন্ত তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
দুপুর ১টার দিকে বিমানবন্দরে আসেন বেসামরিক বিমান পরিবাহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও বিমানের ভারপ্রাপ্ত এমডি ক্যাপ্টেন মোসাদ্দেক আহমেদ। তাঁরা টার্মিনাল ভবনের ভেতরে ধর্মঘটী শ্রমিক লীগ ও সিবিএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। এরপর মন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে সাত দফা দাবি মেনে নেওয়া বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। লিখিত সমঝোতা অনুযায়ী, শ্রমিক লীগের সভাপতির দুটি মামলা প্রত্যাহার করা হবে। এ ছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের বাকি ছয়টি দাবি বিমান পরিচালনা পর্ষদের পরবর্তী সভায় অনুমোদন দেওয়া হবে।
দুপুর দেড়টার দিকে বিমান শ্রমিক লীগের সভাপতি মশিকুর রহমান ভিআইপি টার্মিনালে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা দাবি আদায়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করেছি। মন্ত্রী ও কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।' যাত্রী দুর্ভোগের কারণে তিনি ক্ষমা চান। মশিকুর রহমান বলেন, 'আর্থিক ক্ষতি আমরা অতিরিক্ত কাজ করে পুষিয়ে দেব।'
মন্ত্রী ফারুক খান বলেন, 'ধর্মঘটের কারণে অপারেশনাল কাজ পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিক লীগ ও বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে আমরা আলোচনা করেছি। শ্রমিকরা আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।' সমঝোতায় এত সময় লাগল কেন, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, 'আমরা গতকালও চেষ্টা করেছি। আজ সমাধান হয়েছে।'
বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকায় কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা বলতে না পারলেও এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কথা স্বীকার করেন মন্ত্রী। দুর্ভোগের জন্য তিনি যাত্রীদের কাছে ক্ষমাও চান।
আমাদের চট্টগ্রাম অফিস জানায়, ধর্মঘট চলাকালে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও প্রায় পাঁচ ঘণ্টার জন্য অচল থাকে। ফলে যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়। এ সময় বিদেশগামীদের ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা হট্টগোল শুরু করে। পরিস্থিতির অবনতি হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে ঢাকায় বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্মঘটীদের সমঝোতা হলে একই সময়ে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেও ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের স্টেশন ম্যানেজার হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, ধর্মঘট প্রত্যাহার করে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ায় দুপুরের পর ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে তিনটি ফ্লাইটের যাত্রীদের লাগেজ নামানো, যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে বাসে করে টার্মিনালে আনাসহ কোনো ধরনের গ্রাহকসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কয়েক শ দেশি-বিদেশি যাত্রী দীর্ঘ সময়ের জন্য আটকা পড়ে।
গতকাল সকালে বিমানবন্দরের আগমনী ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ৮টা থেকে একের পর এক বিভিন্ন এয়ারলাইনসের যাত্রীরা বিমানবন্দরে নামছে। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে মালামাল খালাস বন্ধ। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীরা আটকে থাকে। একই কারণে দীর্ঘ সময় যাত্রী ও মালামাল উড়োজাহাজে তোলা যায়নি। এ কারণে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়।
গতকাল ভোর ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হলেও রানওয়ে সংস্কারের জন্য শাহজালাল বিমানবন্দর এখন প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমাবন্দরের যাত্রীসেবাসহ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করে থাকে বিমান। প্রসঙ্গত, মামলা-মোকদ্দমা প্রত্যাহার ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে জাতীয় পতাকাবাহী বিমানে গতকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় সরকার সমর্থিত বিমান শ্রমিক লীগ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ)।
সকাল ১০টার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের ভেতরে কয়েক শ বিমানকর্মী জড়ো হয়ে দাবি-দাওয়ার সপক্ষে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করতে এগিয়ে এলে শুরু হয় তুমুল হট্টগোল। এক পর্যায়ে তাঁদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ সময় সেখানের কয়েকটি কাচের দরজা ও সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুরও হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ বিমানকর্মীরা রানওয়ের এক পাশে অবস্থান নেন। তাঁরা মালামাল খালাসের অপেক্ষায় দাঁড়ানো কয়েকটি উড়োজাহাজের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। যাত্রী অসন্তোষ এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভে দুপুর ১টা পর্যন্ত পুরো বিমানবন্দর ছিল অশান্ত।
আমিরাত এয়ারলাইনসের দুবাইফেরত যাত্রী রিপন দেব ও রুবেল আহমেদ দুপুর ১২টার দিকে কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁরা সকাল ১০টার দিকে নেমেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাঁদের কার্গো বা ব্যাগেজ ফ্লাইট থেকে খালাস হচ্ছে না। কাতার এয়ারওয়েজে কুয়েত থেকে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে দেশে ফেরেন মো. আলমাজ। দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনিও হাজার হাজার যাত্রীর সঙ্গে টার্মিনাল ভবনের ভেতরে অপেক্ষা করছিলেন মালামাল বুঝে পাওয়ার অপেক্ষায়। হতাশ কণ্ঠে তিনি বলেন, দেশে ফিরেই এমন ভোগান্তিতে পড়তে হবে জানলে হয়তো আরো কিছুদিন পরে আসতাম। আত্মীয়স্বজনকে স্বাগত বা বিদায় জানাতে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীকে বিমানবন্দরের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে অসহায়ভাবে বসে থাকতে দেখা যায়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ধর্মঘট চলাকালে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়া ও ড্রুক এয়ারের কলকাতা, টার্কিশ এয়ারলাইনসের ইস্তাম্বুল, কাতার এয়ারের দোহা, আমিরাতের দুবাই, গালফ এয়ারের বাহরাইন, বিমানের রিয়াদ, কুয়েত এয়ারের কুয়েত সিটি, এয়ার চায়নার সাংহাই, এয়ার স্যাটেলাইটের কলম্বো, সৌদিয়ার রিয়াদ ও পাকিস্তান এয়ারলাইনসের করাচি ফ্লাইটসহ ডজনখানেক ফ্লাইট একে একে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামে। শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে গ্রাহকসেবার প্রায় সব কাজ বন্ধ থাকায় কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ও নিরাপত্তা সংস্থার লোকজনকেও প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যাত্রীদের সামাল দিতে তাঁরা হিমশিম খান। উত্তেজিত যাত্রীদের সঙ্গে দফায় দফায় তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা বাধে। দুই-একবার হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম হলেও শেষ পর্যন্ত তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
দুপুর ১টার দিকে বিমানবন্দরে আসেন বেসামরিক বিমান পরিবাহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও বিমানের ভারপ্রাপ্ত এমডি ক্যাপ্টেন মোসাদ্দেক আহমেদ। তাঁরা টার্মিনাল ভবনের ভেতরে ধর্মঘটী শ্রমিক লীগ ও সিবিএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। এরপর মন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে সাত দফা দাবি মেনে নেওয়া বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। লিখিত সমঝোতা অনুযায়ী, শ্রমিক লীগের সভাপতির দুটি মামলা প্রত্যাহার করা হবে। এ ছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের বাকি ছয়টি দাবি বিমান পরিচালনা পর্ষদের পরবর্তী সভায় অনুমোদন দেওয়া হবে।
দুপুর দেড়টার দিকে বিমান শ্রমিক লীগের সভাপতি মশিকুর রহমান ভিআইপি টার্মিনালে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা দাবি আদায়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করেছি। মন্ত্রী ও কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।' যাত্রী দুর্ভোগের কারণে তিনি ক্ষমা চান। মশিকুর রহমান বলেন, 'আর্থিক ক্ষতি আমরা অতিরিক্ত কাজ করে পুষিয়ে দেব।'
মন্ত্রী ফারুক খান বলেন, 'ধর্মঘটের কারণে অপারেশনাল কাজ পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিক লীগ ও বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে আমরা আলোচনা করেছি। শ্রমিকরা আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।' সমঝোতায় এত সময় লাগল কেন, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, 'আমরা গতকালও চেষ্টা করেছি। আজ সমাধান হয়েছে।'
বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকায় কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা বলতে না পারলেও এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কথা স্বীকার করেন মন্ত্রী। দুর্ভোগের জন্য তিনি যাত্রীদের কাছে ক্ষমাও চান।
আমাদের চট্টগ্রাম অফিস জানায়, ধর্মঘট চলাকালে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও প্রায় পাঁচ ঘণ্টার জন্য অচল থাকে। ফলে যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়। এ সময় বিদেশগামীদের ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা হট্টগোল শুরু করে। পরিস্থিতির অবনতি হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে ঢাকায় বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্মঘটীদের সমঝোতা হলে একই সময়ে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেও ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের স্টেশন ম্যানেজার হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, ধর্মঘট প্রত্যাহার করে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ায় দুপুরের পর ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে তিনটি ফ্লাইটের যাত্রীদের লাগেজ নামানো, যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে বাসে করে টার্মিনালে আনাসহ কোনো ধরনের গ্রাহকসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কয়েক শ দেশি-বিদেশি যাত্রী দীর্ঘ সময়ের জন্য আটকা পড়ে।
No comments