লন্ডনে বাংলাদেশিসহ আড়াই হাজার বিদেশি ছাত্র বহিষ্কারের মুখে
ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি বাতিল করায় ওই প্রতিষ্ঠানের আড়াই হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। এর মধ্যে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীও রয়েছেন।
দুই মাসের মধ্যে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারলে তাঁদের যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন।
গত বুধবার লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি বাতিল করে ইউকে বর্ডার এজেন্সি। ছয় মাস নিরীক্ষার পর এ সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। তারা বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে।
অভিবাসনমন্ত্রী ডেমিয়েন গ্রিন জানান, তদন্তে দেখা গেছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা প্রয়োজনীয় মানের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা নিয়মিত শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত হচ্ছেন কি না, তা তদারকিতেও ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে সেখানে যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি আছেন, তাঁদের এক-চতুর্থাংশের ব্রিটেনে থাকার বৈধতা নেই। এসব কারণে ইউকে বর্ডার এজেন্সি মনে করে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়ার যোগ্যতা লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিদেশি শিক্ষার্থীকে দুই মাসের মধ্যে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী তা না পারলে তাঁকে যুক্তরাজ্য থেকে বের করে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ব্রিটিশ সরকার তাঁদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করছে। কেননা, সরকারই তাঁদের ব্রিটেনে গিয়ে পড়াশোনা করার অনুমতি দিয়েছে। ব্রিটেনে যাওয়ার খরচের পাশাপাশি তাঁরা টিউশন ফি হিসেবে সরকারকে হাজার হাজার পাউন্ড দিয়েছে। এরপর সরকার তাঁদের সঙ্গে এই আচরণ করতে পারে না।
বিষয়টি সুরাহা করতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ওই টাস্কফোর্স লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা প্রকৃত শিক্ষার্থী, তাঁদের চিহ্নিত করবে। এরপর তাঁদের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীরা গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ করেছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলের শিক্ষার্থী ভারতীয় ফুন্তসক তেসরিং বলেন, ‘আমি এখানে ছয় বছর আছি। স্নাতক শেষ করেছি। এখন মাস্টার্স পড়ছি। পরিবার আমার পেছনে ৬০ হাজার পাউন্ড খরচ করেছে। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমি ভেঙে পড়েছি। পরিবারকে আমি এখনো বিষয়টি জানাইনি, কিন্তু গণমাধ্যমে তারা বিষয়টি জেনে গেছে। আমার মতো যারা প্রকৃত শিক্ষার্থী, সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাদের জন্য অন্যায়।’
মোহাম্মাদ ইসলাম নামের এক বাংলাদেশি ছাত্রের একই ঘটনা এ নিয়ে ঘটল দুবার। এর আগে তিনি না জেনেশুনে লন্ডনের একটি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে কর্তৃপক্ষ ওই কলেজের নিবন্ধন বাতিল করে।
ইসলাম বলেন, ‘আগেও একবার অথই জলে পড়েছিলাম। আবারও পড়লাম। এখন অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হতে না পারলে আমাকে ব্রিটেন ছেড়ে চলে যেতে হবে।’ তিনি ঘটনাটি এখন পর্যন্ত পরিবারকে জানাননি। কোনো কিছু না জেনে তাঁর জন্য পরিবার আরও ১০ হাজার পাউন্ড পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তিনি জানান।
ব্রিটেনের ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্টুডেন্টসের (এনইউএস) হিসাব অনুযায়ী, অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করতে না পারলে দুই হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীকে ব্রিটেন ছাড়তে হতে পারে। এ ঘটনা ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও ব্যবসার জন্য ‘মহাবিপর্যয়’ হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইউনিয়নের সভাপতি লিয়াম বার্নস।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে প্রতিবছর তিন লাখের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে যান ব্রিটেনে। এসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ব্রিটিশ সরকার প্রতিবছর দুই হাজার ২০০ কোটির বেশি টাকা পায়।
ইউকে বর্ডার এজেন্সির এক কর্মকর্তা জানান, তাঁরা দৈবচয়নের মাধ্যমে লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ জন শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করেন। পরে অনুসন্ধানে দেখতে পান, তাঁদের মধ্যে ২৬ জনের (প্রতি চারজনে একজন) বৈধ ভিসা নেই। ২৫০ শিক্ষার্থীকে বাছাই করে দেখতে পান, তাঁদের মধ্যে ১৪২ জন নিয়মিত শ্রেণীকক্ষে যান না। আর ৫০ জনের মধ্যে ২০ জন ইংরেজিতে খুবই দুর্বল। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে, সেটা যুক্তরাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র নয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী গ্রিন।
লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ম্যালকম গিলিস তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তোলা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সরকারের ওই সিদ্ধান্তের কোনো প্রয়োজন ছিল না। এতে তিনি হতাশ হয়েছেন। সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য গিলিস। এএফপি, গার্ডিয়ান, দ্য ইনডিপেনডেন্ট।
গত বুধবার লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি বাতিল করে ইউকে বর্ডার এজেন্সি। ছয় মাস নিরীক্ষার পর এ সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। তারা বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে।
অভিবাসনমন্ত্রী ডেমিয়েন গ্রিন জানান, তদন্তে দেখা গেছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা প্রয়োজনীয় মানের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা নিয়মিত শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত হচ্ছেন কি না, তা তদারকিতেও ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে সেখানে যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি আছেন, তাঁদের এক-চতুর্থাংশের ব্রিটেনে থাকার বৈধতা নেই। এসব কারণে ইউকে বর্ডার এজেন্সি মনে করে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়ার যোগ্যতা লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিদেশি শিক্ষার্থীকে দুই মাসের মধ্যে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী তা না পারলে তাঁকে যুক্তরাজ্য থেকে বের করে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ব্রিটিশ সরকার তাঁদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করছে। কেননা, সরকারই তাঁদের ব্রিটেনে গিয়ে পড়াশোনা করার অনুমতি দিয়েছে। ব্রিটেনে যাওয়ার খরচের পাশাপাশি তাঁরা টিউশন ফি হিসেবে সরকারকে হাজার হাজার পাউন্ড দিয়েছে। এরপর সরকার তাঁদের সঙ্গে এই আচরণ করতে পারে না।
বিষয়টি সুরাহা করতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ওই টাস্কফোর্স লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা প্রকৃত শিক্ষার্থী, তাঁদের চিহ্নিত করবে। এরপর তাঁদের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীরা গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ করেছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলের শিক্ষার্থী ভারতীয় ফুন্তসক তেসরিং বলেন, ‘আমি এখানে ছয় বছর আছি। স্নাতক শেষ করেছি। এখন মাস্টার্স পড়ছি। পরিবার আমার পেছনে ৬০ হাজার পাউন্ড খরচ করেছে। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমি ভেঙে পড়েছি। পরিবারকে আমি এখনো বিষয়টি জানাইনি, কিন্তু গণমাধ্যমে তারা বিষয়টি জেনে গেছে। আমার মতো যারা প্রকৃত শিক্ষার্থী, সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাদের জন্য অন্যায়।’
মোহাম্মাদ ইসলাম নামের এক বাংলাদেশি ছাত্রের একই ঘটনা এ নিয়ে ঘটল দুবার। এর আগে তিনি না জেনেশুনে লন্ডনের একটি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে কর্তৃপক্ষ ওই কলেজের নিবন্ধন বাতিল করে।
ইসলাম বলেন, ‘আগেও একবার অথই জলে পড়েছিলাম। আবারও পড়লাম। এখন অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হতে না পারলে আমাকে ব্রিটেন ছেড়ে চলে যেতে হবে।’ তিনি ঘটনাটি এখন পর্যন্ত পরিবারকে জানাননি। কোনো কিছু না জেনে তাঁর জন্য পরিবার আরও ১০ হাজার পাউন্ড পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তিনি জানান।
ব্রিটেনের ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্টুডেন্টসের (এনইউএস) হিসাব অনুযায়ী, অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করতে না পারলে দুই হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীকে ব্রিটেন ছাড়তে হতে পারে। এ ঘটনা ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও ব্যবসার জন্য ‘মহাবিপর্যয়’ হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইউনিয়নের সভাপতি লিয়াম বার্নস।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে প্রতিবছর তিন লাখের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে যান ব্রিটেনে। এসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ব্রিটিশ সরকার প্রতিবছর দুই হাজার ২০০ কোটির বেশি টাকা পায়।
ইউকে বর্ডার এজেন্সির এক কর্মকর্তা জানান, তাঁরা দৈবচয়নের মাধ্যমে লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ জন শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করেন। পরে অনুসন্ধানে দেখতে পান, তাঁদের মধ্যে ২৬ জনের (প্রতি চারজনে একজন) বৈধ ভিসা নেই। ২৫০ শিক্ষার্থীকে বাছাই করে দেখতে পান, তাঁদের মধ্যে ১৪২ জন নিয়মিত শ্রেণীকক্ষে যান না। আর ৫০ জনের মধ্যে ২০ জন ইংরেজিতে খুবই দুর্বল। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে, সেটা যুক্তরাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র নয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী গ্রিন।
লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ম্যালকম গিলিস তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তোলা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সরকারের ওই সিদ্ধান্তের কোনো প্রয়োজন ছিল না। এতে তিনি হতাশ হয়েছেন। সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য গিলিস। এএফপি, গার্ডিয়ান, দ্য ইনডিপেনডেন্ট।
No comments