কার শক্তি বেশি? by সতীশ চন্দ্র সরকার
সরকার এবার বেশ আটঘাট বেঁধেই নেমেছিল। দৃঢ় সংকল্প নিয়েছিল প্রতিবারের মত এবার বাজার অস্থিতিশীল হতে দেবে না কিছুতেই। পবিত্র রমজান মাসে যাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সুলভ মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পেতে পারে, সে লক্ষ্যে তারা বেশ কিছু সময়োচিত পদক্ষেপও নিয়েছিল।
যেমনÑ নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা, দোকানে দোকানে পণ্যমূল্য তালিকা টাঙিয়ে দেয়া। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে তারা এ সিদ্ধান্তও নিতে বাধ্য করেছিল তাদের যে ,তারা রমজান মাসে ১০%-এর বেশি মুনাফা করবে না।কিন্তু দেখা গেল সবই মিছে মায়া মরীচিকা। ব্যবসায়িরা যে কর্মে রত ছিল,তারা সে কর্মেই আরও তৎপর হয়ে উঠেছে। আর সরকার যে তিমিরে ছিল,সে তিমিরে।
টিসিবির হিসাব মতে, মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে, অর্থাৎ এত আলাপ-আলোচনা, দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার করানোর পরও দেখা গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, বিশেষ করে রমজান মাসে যেগুলো অপরিহার্য, বেছে বেছে সেগুলোর মূল্যই বাড়িয়ে দিয়েছে মুনাফালোভী ব্যবসায়িরা। কোন অনুরোধই তাদের মূল্যবৃদ্ধির অপকৌশল থেকে সরাতে পারেনি।
পেঁয়াজ ২২.৯২%, রসুন ১৪.২৯%, খোলা সয়াবিন তেল ৩.৭৮%,দেশি মসুর ডাল ৬.৩৪%, মুগডাল ৭.৫০%, ছোলা ১৩.৭৯%, আলু ১৯%, এবং চিনির মূল্য ৩.৮% বাড়িয়েছে তারা। এসব দ্রব্যাদির প্রতিটিরই রমজান মাসে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই হল ব্যবসায়ীদের আচরণ! এদের পোশাক-আশাক, কথাবার্তা,চেহারা –সুরত দেখলে মনেই হবে না যে এরা এতটা লোভী। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে এসময় খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে।
এভাবেই এদেশের অসৎ ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের জিম্মি করে চলেছে দিনের পর দিন। নানা কৌশলে তারা এই অবৈধ মুনাফার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, কূটকৌশলে এবারও তারা ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে।
জানা গেছে, ৬ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রমজানে নিত্যপণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে তিনি অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সে বৈঠকে দেশবাসী জেনেছিল তেল-ডাল-চিনির পর্যাপ্ত মজুদ সরকারের ভান্ডারে রয়েছে।সুতরাং মূল্য অস্থিতিশীল হবার কোন সম্ভাবনাই নেই।তাহলে রমজানের কেন বেড়ে চলেছে দ্রব্যমূল্য? কে জবাব দেবে? টিসিবির গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও এখন জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আদৌ সেটা কি সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করে চলে, নাকি তাদের সগোত্র যেদিকে যায়,সেটিও সেদিকেই ধায়!
সাধারণ মানুষদের ভোগান্তি থেকে বাঁচাতে সরকার দায়বদ্ধ। তাই হাল ছেড়ে বসে থাকলে চলবে না। অসৎ ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার। তাদের অবৈধ মজুদ-স্থাপনা সরকারের দখলে এনে ন্যায্যমূল্যে দ্রব্যাদি বাজারে সরবরাহ করতে হবে। টিসিবিকে সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আমরা দেখছি সরকার চেষ্টার ত্রুটি করছে না, কিন্তু ব্যবসায়ীরা শুনছে না এসব আর কতদিন চলবে। জনগণের রায় পেতে হলে জনস্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এখনই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি রোধ করে জনগণকে দ্রব্যমূল্যের চাপ থেকে বাঁচাতে হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক
টিসিবির হিসাব মতে, মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে, অর্থাৎ এত আলাপ-আলোচনা, দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার করানোর পরও দেখা গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, বিশেষ করে রমজান মাসে যেগুলো অপরিহার্য, বেছে বেছে সেগুলোর মূল্যই বাড়িয়ে দিয়েছে মুনাফালোভী ব্যবসায়িরা। কোন অনুরোধই তাদের মূল্যবৃদ্ধির অপকৌশল থেকে সরাতে পারেনি।
পেঁয়াজ ২২.৯২%, রসুন ১৪.২৯%, খোলা সয়াবিন তেল ৩.৭৮%,দেশি মসুর ডাল ৬.৩৪%, মুগডাল ৭.৫০%, ছোলা ১৩.৭৯%, আলু ১৯%, এবং চিনির মূল্য ৩.৮% বাড়িয়েছে তারা। এসব দ্রব্যাদির প্রতিটিরই রমজান মাসে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই হল ব্যবসায়ীদের আচরণ! এদের পোশাক-আশাক, কথাবার্তা,চেহারা –সুরত দেখলে মনেই হবে না যে এরা এতটা লোভী। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে এসময় খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে।
এভাবেই এদেশের অসৎ ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের জিম্মি করে চলেছে দিনের পর দিন। নানা কৌশলে তারা এই অবৈধ মুনাফার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, কূটকৌশলে এবারও তারা ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে।
জানা গেছে, ৬ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রমজানে নিত্যপণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে তিনি অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সে বৈঠকে দেশবাসী জেনেছিল তেল-ডাল-চিনির পর্যাপ্ত মজুদ সরকারের ভান্ডারে রয়েছে।সুতরাং মূল্য অস্থিতিশীল হবার কোন সম্ভাবনাই নেই।তাহলে রমজানের কেন বেড়ে চলেছে দ্রব্যমূল্য? কে জবাব দেবে? টিসিবির গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও এখন জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আদৌ সেটা কি সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করে চলে, নাকি তাদের সগোত্র যেদিকে যায়,সেটিও সেদিকেই ধায়!
সাধারণ মানুষদের ভোগান্তি থেকে বাঁচাতে সরকার দায়বদ্ধ। তাই হাল ছেড়ে বসে থাকলে চলবে না। অসৎ ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার। তাদের অবৈধ মজুদ-স্থাপনা সরকারের দখলে এনে ন্যায্যমূল্যে দ্রব্যাদি বাজারে সরবরাহ করতে হবে। টিসিবিকে সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আমরা দেখছি সরকার চেষ্টার ত্রুটি করছে না, কিন্তু ব্যবসায়ীরা শুনছে না এসব আর কতদিন চলবে। জনগণের রায় পেতে হলে জনস্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এখনই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি রোধ করে জনগণকে দ্রব্যমূল্যের চাপ থেকে বাঁচাতে হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক
No comments