সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি, ২ ডিএমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
সোনালী ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দুই ডিএমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই উর্ধতন তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাবেন। অবশ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক বর্তমানে এলপিআরে আছেন।
আগামীকাল বরিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে বলে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ইতোপূর্বে সংশ্লিষ্ট শাখার ১৭ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। সোনালী ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত জানান, নিরীক্ষার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং উর্ধতন আরও তিন কর্তকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে। ওই উর্ধতন তিন কর্মকর্তার মধ্যে একজন এমডি যিনি বর্তমানে এলপিআরে আছেন। আরও দুজন ডিএমডি আছে যারা মেইন স্ট্রিমের কর্মকর্তা ছিলেন। রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হবে। সেখানে থেকে আমাদের সিদ্ধান্ত দেবে।
উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল (সাবেক শেরাটন হোটেল) শাখা থেকে ২০১০-২০১২ সময়ে মোট ৩ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাত করা হয়েছে। এর মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ একাই আত্মসাত করেছে ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এছাড়া এই ব্যাংকের গুলশান ও আগারগাঁও শাখা থেকেও ১৪০ কোটি টাকা করে ঋণ দেয়া হয়েছে, যা তাদের ঋণসীমার অনেক বেশি।
এ বিষয়ে বলা হয়, এ ঘটনাটি শাখা পর্যায়ে ঘটেছে। তবে ল্যাপস হয়েছে সেটি হচ্ছে ২০১০ সাল এবং ২০১১ সালের মার্চে সর্বশেষ অডিট হয়েছে। এরপর আর কোন অডিট হয়নি। এই সুযোগ নিয়ে শাখার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এই টাকা আত্মসাত করেছে।
এত বড় অঙ্কের ঋণ দেয়ার এখতিয়ার কোন শাখার নেই। এটি পরিচালনা পর্ষদকে জানানো হয়। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ দাবি করছে এ বিষয়ে তাদের কোন কিছু জানাতে পারেনি। এদিকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কোন পরিকল্পনা নেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। আমানতকারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে টাকা উদ্ধারের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। অবশ্য ১৭ বরখাস্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ব্যাংক কোম্পানি অধ্যাদেশ ১৯৯১-এর ৪৬ (৬) ধারার আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে, যাতে দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এই অনিয়মের ধরন খুবই গুরুতর এবং এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় যে, এ ধরনের দুর্নীতি পরিচালনা পর্ষদের নজরে আসেনি।
হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে
জড়িত অর্ধশতাধিক
এদিকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে ঘটনার নেপথ্য নায়কদের কারও নাম এ তালিকায় স্থান পায়নি। এ সুযোগে তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা করতে এখনও তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছে একটি মহল।
এদিকে সেপ্টেম্বরের ২ তারিখে হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং জেনারেল ম্যানেজারকে দুদক তলব করলেও দুদকে তারা আসবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
হলমার্ক গ্রুপকে বেআইনীভাবে ঋণ দেয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংকের ১৭ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু সরকারের প্রভাবশালী এক উপদেষ্টা এবং এক প্রতিমন্ত্রীর চাপের মুখে বিধি লঙ্ঘন করে ঋণ দিতে বাধ্য হলেও ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের তালিকায় তাদের নাম আসেনি। বরং তারা হলমার্ক গ্রুপের কর্মকর্তাদের রক্ষা করতে আগের মতোই সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। গত ২৮ আগস্ট হলমার্কের হেমায়েতপুর কারখানায় বৈশাখী টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার দিপু সারোয়র রিপোর্ট করতে গিয়ে হলমার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীরদের হামলার শিকার হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। ওপর থেকে ফোন দিয়ে মামলা নিতে নিষেধ করা হয় বলে থানা থেকে জানানো হয়। থানা থেকে বলা হয় হলমার্কের এমডিকে আসামি না করে মামলা করা হলে মামলা নেয়া হবে। যদিও পুলিশের আইজির হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত থানা মামলা নিতে বাধ্য হয়। এছাড়া ২ সেপ্টেম্বর হলমার্কের চেয়ারম্যান জেসমিন ও এমডি তানভীর মামুদ এবং জেনারেল ম্যানেজার তুষারকে দুদকে আসতে নোটিস প্রেরণ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা আসার বিষয়ে দুদককে কিছু জানায়নি। বরং বিভিন্ন মহল থেকে দুদকে যেন তাদের না আসতে সে জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে দুদকের অপর এক কর্মকর্তা প্রতিবেদককে বলেছেন দ্বিতীয়বারের মতো হলমার্কের চেয়ারম্যান, এমডি এবং জিএমকে ডাকা হয়েছে। এবার যদি তারা দুদকে হাজির না হন, তা হলে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সঠিক বলে গণ্য হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে দুদক পিছ পা হবে না।
হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অনুসন্ধানে দুদক এখন পর্যন্ত হলমার্ক গ্রুপের ৪ কর্মকর্তা এবং সোনালী ব্যংকের ১৮ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ করতে আরও ২৮ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছেন। ২৮ জনের মধ্যে রয়েছে হলমার্ক গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ২০ কর্মকর্তা। অপর ব্যক্তিরা ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা। কিন্তু এর নেপথ্য নায়ক এক উপদেষ্টা এবং এক প্রতিমন্ত্রীর নাম আসলেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি দুদক। তবে দুদকের এক কর্মকর্তা প্রতিদেককে বলেছেন, হলমার্ক গ্রুপের এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নেপথ্য নায়কদের তলব করার পরিকল্পনা আছে।
উল্লেখ্য, জুন মাসের দিকে গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া হলমার্কের আড়াই হাজার কোটি টাকার অধিক ঋণ কেলেঙ্কারির সংবাদকে আমলে নিয়ে ওই মাসের ১০ তারিখে এ ঘটনা অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী। তার অনুসন্ধানে দেখা যায় আড়াই হাজার নয় অনিয়ম অনেক বেশি। তখন বিষয়টি কমিশনকে অবিহিত করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। দুদক বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান কমিটির পরিধি বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেয়। জুলাই মাসের ১৫ তারিখে পুনর্গঠিত কমিটিতে সংযুক্ত করা হয় পরিচালক আখতার হামিদ ভুইয়া, এডি মশিউর রহমান, শাসম সাহাদত, ডিএডি মজিবুর রহমান এবং জয়নাল আবদীনকে। দুদকের কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, হলমার্ক গ্রুপ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে আড়াই হাজার কোটি টাকার ওপরে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা থেকে নিয়ে যায়। যে সব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছে এর মধ্যে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাছাড়া ঋণের বিপরীতে যে সকল জমির দলিল জমা রেখেছেন সেসব জমির মালিকও হলমার্ক গ্রুপ নয়।
উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল (সাবেক শেরাটন হোটেল) শাখা থেকে ২০১০-২০১২ সময়ে মোট ৩ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাত করা হয়েছে। এর মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ একাই আত্মসাত করেছে ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এছাড়া এই ব্যাংকের গুলশান ও আগারগাঁও শাখা থেকেও ১৪০ কোটি টাকা করে ঋণ দেয়া হয়েছে, যা তাদের ঋণসীমার অনেক বেশি।
এ বিষয়ে বলা হয়, এ ঘটনাটি শাখা পর্যায়ে ঘটেছে। তবে ল্যাপস হয়েছে সেটি হচ্ছে ২০১০ সাল এবং ২০১১ সালের মার্চে সর্বশেষ অডিট হয়েছে। এরপর আর কোন অডিট হয়নি। এই সুযোগ নিয়ে শাখার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এই টাকা আত্মসাত করেছে।
এত বড় অঙ্কের ঋণ দেয়ার এখতিয়ার কোন শাখার নেই। এটি পরিচালনা পর্ষদকে জানানো হয়। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ দাবি করছে এ বিষয়ে তাদের কোন কিছু জানাতে পারেনি। এদিকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কোন পরিকল্পনা নেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। আমানতকারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে টাকা উদ্ধারের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। অবশ্য ১৭ বরখাস্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ব্যাংক কোম্পানি অধ্যাদেশ ১৯৯১-এর ৪৬ (৬) ধারার আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে, যাতে দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এই অনিয়মের ধরন খুবই গুরুতর এবং এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় যে, এ ধরনের দুর্নীতি পরিচালনা পর্ষদের নজরে আসেনি।
হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে
জড়িত অর্ধশতাধিক
এদিকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে ঘটনার নেপথ্য নায়কদের কারও নাম এ তালিকায় স্থান পায়নি। এ সুযোগে তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা করতে এখনও তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছে একটি মহল।
এদিকে সেপ্টেম্বরের ২ তারিখে হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং জেনারেল ম্যানেজারকে দুদক তলব করলেও দুদকে তারা আসবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
হলমার্ক গ্রুপকে বেআইনীভাবে ঋণ দেয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংকের ১৭ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু সরকারের প্রভাবশালী এক উপদেষ্টা এবং এক প্রতিমন্ত্রীর চাপের মুখে বিধি লঙ্ঘন করে ঋণ দিতে বাধ্য হলেও ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের তালিকায় তাদের নাম আসেনি। বরং তারা হলমার্ক গ্রুপের কর্মকর্তাদের রক্ষা করতে আগের মতোই সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। গত ২৮ আগস্ট হলমার্কের হেমায়েতপুর কারখানায় বৈশাখী টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার দিপু সারোয়র রিপোর্ট করতে গিয়ে হলমার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীরদের হামলার শিকার হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। ওপর থেকে ফোন দিয়ে মামলা নিতে নিষেধ করা হয় বলে থানা থেকে জানানো হয়। থানা থেকে বলা হয় হলমার্কের এমডিকে আসামি না করে মামলা করা হলে মামলা নেয়া হবে। যদিও পুলিশের আইজির হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত থানা মামলা নিতে বাধ্য হয়। এছাড়া ২ সেপ্টেম্বর হলমার্কের চেয়ারম্যান জেসমিন ও এমডি তানভীর মামুদ এবং জেনারেল ম্যানেজার তুষারকে দুদকে আসতে নোটিস প্রেরণ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা আসার বিষয়ে দুদককে কিছু জানায়নি। বরং বিভিন্ন মহল থেকে দুদকে যেন তাদের না আসতে সে জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে দুদকের অপর এক কর্মকর্তা প্রতিবেদককে বলেছেন দ্বিতীয়বারের মতো হলমার্কের চেয়ারম্যান, এমডি এবং জিএমকে ডাকা হয়েছে। এবার যদি তারা দুদকে হাজির না হন, তা হলে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সঠিক বলে গণ্য হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে দুদক পিছ পা হবে না।
হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অনুসন্ধানে দুদক এখন পর্যন্ত হলমার্ক গ্রুপের ৪ কর্মকর্তা এবং সোনালী ব্যংকের ১৮ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ করতে আরও ২৮ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছেন। ২৮ জনের মধ্যে রয়েছে হলমার্ক গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ২০ কর্মকর্তা। অপর ব্যক্তিরা ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা। কিন্তু এর নেপথ্য নায়ক এক উপদেষ্টা এবং এক প্রতিমন্ত্রীর নাম আসলেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি দুদক। তবে দুদকের এক কর্মকর্তা প্রতিদেককে বলেছেন, হলমার্ক গ্রুপের এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নেপথ্য নায়কদের তলব করার পরিকল্পনা আছে।
উল্লেখ্য, জুন মাসের দিকে গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া হলমার্কের আড়াই হাজার কোটি টাকার অধিক ঋণ কেলেঙ্কারির সংবাদকে আমলে নিয়ে ওই মাসের ১০ তারিখে এ ঘটনা অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী। তার অনুসন্ধানে দেখা যায় আড়াই হাজার নয় অনিয়ম অনেক বেশি। তখন বিষয়টি কমিশনকে অবিহিত করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। দুদক বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান কমিটির পরিধি বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেয়। জুলাই মাসের ১৫ তারিখে পুনর্গঠিত কমিটিতে সংযুক্ত করা হয় পরিচালক আখতার হামিদ ভুইয়া, এডি মশিউর রহমান, শাসম সাহাদত, ডিএডি মজিবুর রহমান এবং জয়নাল আবদীনকে। দুদকের কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, হলমার্ক গ্রুপ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে আড়াই হাজার কোটি টাকার ওপরে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা থেকে নিয়ে যায়। যে সব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছে এর মধ্যে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাছাড়া ঋণের বিপরীতে যে সকল জমির দলিল জমা রেখেছেন সেসব জমির মালিকও হলমার্ক গ্রুপ নয়।
No comments