সাঈদীর অব্যাহতি ও জামিনের আবেদন খারিজ- যুদ্ধাপরাধী বিচার

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে করা মামলা থেকে অব্যাহতি ও জামিন সহ চারটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের


ট্রাইব্যুনাল আসামিপক্ষের করা আবেদন খারিজ করে দেয়। একই ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি মীর কাসেম আলীকে কারাগারে ডিভিশন প্রদানের যে আবেদন করেছিল আসামিপক্ষ সে আবেদনের বিষয়ে রবিবার আদেশ দেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
অন্যদিকে একই অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ ২৬ আগস্ট থেকে শুরু হবে। বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল-২- এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের এ দিন ধার্য করে। একই ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের জেরা অব্যাহত রয়েছে। রবিবার আবার আসামিপক্ষ সাক্ষী শহীদুল হককে জেরা করবে।
সাঈদী
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবাতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইনের চারটি আবেদন খারিজ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সাঈদীর পক্ষে আবেদনগুলো হলোÑএ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি হেলালউদ্দিনের বিরুদ্ধে সাক্ষী নিয়ে আদালতের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ এনে সাঈদীকে মামলা থেকে অব্যাহতি, সাঈদীর জামিন, সেফ হোমের কর্মরত পুলিশের মোবাইল কল লিস্ট চেয়ে আবেদন ও ১৫ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ বাতিল করার আবেদন।
তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দীকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনালের দেয়া আদেশের রিভিউ আবেদন খারিজ করে ১২ জুলাই। এর আগে এ বিষয়ে কয়েক দফা শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল আদেশের জন্য সিএভিতে রেখে দেন। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে আদালত সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে ২৯ মার্চ রায় দেন। সে রায় পুনরায় বিবেচনার জন্য ৯ মে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী। ২২ মে এ বিষয়ে প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ হেলালউদ্দিনকে জেরা অব্যাহত রেখেছে আসামিপক্ষ। বৃহস্পতিবার ৩৩তম দিনের মতো তাকে জেরা করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১ এ। জেরা রবিবার পর্যন্ত মুলতবি করেছে ট্রাইব্যুনাল।
৮ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাঈদীর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন সাক্ষ্য দেন ট্রাইব্যুনালে। এর পর ২৫ এপ্রিল থেকে তাকে জেরা করছে আসামিপক্ষ। অসুস্থ অবস্থায় বর্তমানে ইব্রাহীম কার্ডিয়াক (বারডেম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাঈদীর অনুপস্থিতিতেই তার বিচার কার্যক্রম চলছে। অসুস্থতার কারণে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার এক মামলায় সাঈদীকে ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়।

মুজাহিদ
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ ২৬ আগস্ট থেকে শুরু হবে। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের এ দিন ধার্য করে।
এরআগে ট্রাইব্যুনালে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন শেষ হয়। ২১ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধে সুনির্দিষ্ট সাতটি ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতার বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল-২। পরে এ আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আসামিপক্ষ একটি আবেদন দাখিল করে।
বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাইব্যুনালে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও প্রসিকিউটর মীর ইকবাল হোসেন ২৯ পৃষ্ঠার সূচনা বক্তব্য পাঠ করেন। সূচনা বক্তব্যে তার বিরুদ্ধে একাত্তর সালে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছর ১ নবেম্বর মুজাহিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। গত ২৬ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ২০১০ সালের ২৯ জুন একটি মামলায় মুজাহিদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এক আবেদনে তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক দেখানো হয়।

গোলাম আযম
একই মামলায় গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম ট্রাইব্যুনালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়ার নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। পরে তাকে নিয়ে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক (বারডেম) হাসপাতালের কারাকক্ষে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষীর জেরা শুরুর আগে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এরপর গোলাম আযম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিষয়টি তার আইনজীবী ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে ট্রাইব্যুনালের এজলাসে আনার সময় তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেন। পরে তাঁকে বারডেম হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে ট্রাইব্যুনাল দ্বতীয় সাক্ষীর জেরা স্থগিত করে আগামী ২৪ জুলাই তারিখ ধার্য করা হয়। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহম্মদ বীরবিক্রমকে আসামিপক্ষের জেরার কথা ছিল বৃহস্পতিবার।

মীর কাশেম আলী
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের মজলিসের সুরার সদস্য মীর কাশেম আলীকে কারাগারে ডিভিশন প্রদানের যে আবেদন করেছিলেন আসামিপক্ষ, সে আবেদনের বিষয়ে রবিবার আদেশ দেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনালে এ আবেদনের বিষয়ে শুনানি করেন প্রসিকিউশনপক্ষের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুুম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘কারা নিয়ম অনুসারে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জেল কর্তৃপক্ষ নেন। তবে, আপনাদের জেল কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে আদেশ দানের ক্ষমতা আপনাদের আছে।
আবেদনের বিষয়ে আসামিপক্ষ বলেছিলেন, ‘মীর কাসেম আলী বিশিষ্ট ব্যক্তি। তার কারাগারে ডিভিশন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। তিনি জানিয়েছেন, এটি ট্রাইব্যুনালের এক্তিয়ারাধীন। ট্রাইব্যুনাল যদি আপত্তি না করে তবে তারও আপত্তি নেই। জেল কর্তৃপক্ষও একই কথা বলেছেন।’
৫ জুলাই মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছে প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনাল ১২ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ১৭ জুন বিকেলে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), র‌্যাব ও পুলিশের শতাধিক সদস্য রাজধানী ঢাকার মতিঝিলে নয়াদিগন্ত অফিস থেকে মীর কাসেম আলীকে গ্রেফতার করেন।
প্রসিকিউশন বিভাগের পক্ষে প্রসিউিটর রানাদাশ গুপ্ত এর আগে ট্রাইব্যুনালে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন। এ গুলোর মধ্যে রয়েছে, স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে বাবার চাকরির সুবাদে তিনি চট্টগ্রামে যান। চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র থাকার সময় জড়িয়ে পড়েন মওদুদীর মৌলবাদী রাজনীতিতে। জামায়াতের অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের দায়িত্ব পান স্বাধীনতার আগে। স্বাধীনতাবিরোধী তৎপরতার সময় ছাত্রসংঘের নতুন প্রাদেশিক পরিষদ গঠন হয়। মীর কাসেম আলী হন তার সাধারণ সম্পাদক। সে সময় সংগঠনটির সভাপতি ছিলেন যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ।
মীর কাসেমের নির্দেশে চট্টগ্রামের টেলিগ্রাফ অফিসের লাগোয়া ডালিম হোটেলে রাজাকার বাহিনীর বন্দীশিবির খোলা হয়। সেখানে লোকদের ধরে এনে টর্চার করা হতো। বহু লোককে সেখানে নিয়ে খুন করা হয়। ১৭ ডিসেম্বর সেখান থেকে সাড়ে ৩শ’ বন্দীকে জীবন্মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বুদ্ধিজীবী হত্যার তালিকা প্রণয়নকারীদের অন্যতম ছিলেন মীর কাসেম আলী। স্বাধীনতার পর মীর কাসেম পালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। মিন্টু নামে নিজের পরিচয় দিতেন তিনি, নিজেকে বলতেন মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু চিহ্নিত হয়ে পড়ার পর আরেক ঘাতক মঈনুদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে চলে যান লন্ডন। সেখান থেকে সৌদি আরব। সেখানে স্বাধীনতাবিরোধীদের সংগঠিত করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশে ফিরে আসেন মীর কাসেম।
জিয়াউর রহমানের সময় নতুন করে সংগঠিত হয় ইসলামী ছাত্রসংঘ, নাম বদলে হয় ইসলামী ছাত্রশিবির। ছাত্রশিবিরের প্রথম কেন্দ্রীয় সভাপতি হন মীর কাসেম আলী। এরপর রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের নামে রাবেতা আল ইসলামী গড়ে তোলেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর টাকায় আস্তে আস্তে প্রতিষ্ঠা করেন ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা ট্রাস্ট ও ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস। চট্টগ্রাম শহরের নন্দনকানন টিএ্যান্ডটি অফিসের পেছনের সড়ক যা এর আগে টেলিগ্রাফ রোড বলে পরিচিত ছিল সেখানে এক হিন্দু পরিবারের মালিকানাধীন ‘মহামায়া ভবন’টিকে মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বাধীন আলবদর বাহিনী কেড়ে নিয়ে নাম দেয় ডালিম হোটেল। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত এই ডালিম হোটেলই আলবদর, রাজাকারদের অন্যতম নির্যাতন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল চট্টগ্রামবাসীর কাছে।
প্রসিকিউটর গ্রেফতারের আবেদনে জানান, একাত্তর সালের ২৬ মার্চ দখলদার পাকিস্তানী বাহিনী অপারেশন সার্চ লাইটের মাধ্যমে বাঙালীদের উপর আক্রমণ করে, যা ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ মাস অব্যাহত থাকে। এই নয় মাসে হত্যা, গণহত্যা, ধর্মান্তরিত করা, বন্দী, আটক, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, যুদ্ধাপরাধসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে নির্যাতন কেন্দ্রে রাখা হয়। ৯ মাসে মীর কাশেম আলীর নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী মহামায়া হোটেল বর্তমান ডালিম হোটেলে ধরে এনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের নির্যাতন করা হতো। ডালিম হোটেলে নির্যাতন করে তাদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হতো। মীর কাশেম আলী চট্টগ্রামের গুডস হিল ও ডালিম হোটেলে নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তোলে। অনেককে হত্যা করা হয়েছে, যাদের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি।

No comments

Powered by Blogger.