রোজায় রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা

পবিত্র মাহে রমজানে যানজট নিরসনে ফুটপাথে কোন প্রকার দোকানপাট বসতে দেয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি রাজধানীতে ৪০টি অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক চেকপোস্ট বসানো হচ্ছে। মাঠে থাকছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রমজান ও রমজানপরবর্তী ঈদে রাজধানীজুড়ে থাকছে বিশেষ নিরাপত্তা।


তবে বিশেষ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি থাকছে ইফতার, তারাবি নামাজ ও সেহ্রির সময়। এক লাখ টাকার অধিক পরিমাণ টাকা আনা-নেয়ার জন্য পুলিশের মানি এস্কর্ট টিম থাকছে। অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যরা ইতোমধ্যেই রমজানের নিরাপত্তায় মাঠে নেমেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ এসব কথা বলেন। তিনি জানান, সরকারী কাজের জন্য মহানগরীর অধিকাংশ রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এজন্য মহানগরে এবারের রমজানে যানজট বাড়ার আশঙ্কা আছে। যানজট কমাতে এবার রাজধানীর ফুটপাথগুলোতে কোন প্রকার ইফতারির দোকান বসতে দেয়া হচ্ছে না। ফুটপাথ দোকানমুক্ত থাকলে যানজট কিছুটা কম হবে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের যানজটসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তারপরও রমজানে যাতে যানজট কম হয় এজন্য ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। যানজট নিরসনের লক্ষ্যে রমজানে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাজধানীতে ৪০টি অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক চেকপোস্ট বসানো হচ্ছে। এই চেকপোস্টটি এক কিলোমিটার দূর থেকে দেখা যাবে। কেউ সঙ্কেত না মেনে চেকপোস্ট এড়িয়ে পালিয়ে যেতে পারবে না। পালিয়ে যেতে চেষ্টা করলে গাড়ির চাকা পাংচার হয়ে যাবে।
পাশাপাশি নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা প্রস্তুতি শুরু হয়েছে মূলত এক মাস আগ থেকেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে গত এক মাসে সাড়ে ৩ হাজার অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া রমজান উপলক্ষে রাজধানীতে ৩৫টি বাড়তি চেকপোস্ট, ৩৩৪টি ফুট পেট্রোল টিম, ৮৪টি মোটরসাইকেল পেট্রোল টিম ও ১৫টি মোবাইল পেট্রোল টিমসহ বিপুলসংখ্যক সাদা পোশাকের পুলিশ ও গোয়েন্দা নজরদারির দায়িত্বে থাকছে।
রমজানে ইফতার, সেহ্রি ও তারাবির নামাজের সময় রাজধানী নিñিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে থাকবে। শপিংমলগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া রমজানে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের টাকা আনা-নেয়ার জন্য পুলিশের মানি এস্কর্ট টিম থাকছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ২০ লাখ লিফলেট বিতরণ ও ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে।
সিনেমা হলগুলোতে যদি অশ্লীল পোস্টার লাগানো থাকে তা অপসারণ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাইবার ক্যাফেগুলোতে পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড বন্ধ করা হবে। এ ব্যাপারে সাইবার ক্যাফে মালিক সমিতিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তা না হলে অভিযুক্ত সাইবার ক্যাফে মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালতও রমজানে মাঠে থাকছে।
এদিকে র‌্যাবের তরফ থেকেও পবিত্র রমজান মাস ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দেশব্যাপী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রমজানে ও পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে বিভিন্ন মার্কেট, বিপণি বিতান, কাঁচাবাজার, আড়তের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে প্রচুর পরিমাণ নগদ অর্থ উত্তোলন হওয়ায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইফতার, তারাবির নামাজ ও সেহ্রির সময় থাকছে বিশেষ নিরাপত্তা। নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে স্পর্শকাতর স্থান, সড়ক, স্থাপনা, মার্কেট, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালে অতিরিক্ত র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
ডাকাতি ও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারে র‌্যাবের বিশেষ টিম মাঠে থাকছে। শহরের প্রবেশ ও বহির্গমন পথগুলোতে বাড়তি চেকপোস্ট বসানো হচ্ছে। টিকেট কালোবাজারী রোধে টিকেট বিক্রয় মনিটরিং করা হবে। নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা ও মেট্টোপলিটন এলাকার ম্যাজিস্ট্রেটের সমন¦য়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভেজালবিরোধী অভিযান চলবে।

No comments

Powered by Blogger.