আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক- লিমনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা

র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেন অব্যাহতভাবে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে চলেছে। দুর্ভাগ্য ও দুর্বিপাক শুধু তার জীবনকেই নয়, তার পুরো পরিবারকে তাড়া করে ফিরছে। মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেনের নেতৃত্বে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর একটি প্রতিনিধিদল ঝালকাঠিতে লিমন ও লিমনের পরিবারের বিরুদ্ধে সংঘটিত অনাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।


দিন যতই যাচ্ছে, ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে নিরীহ লিমনকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিত্রিত করার জন্য রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট কোনো না কোনো শক্তি মরিয়া হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের সোচ্চার কণ্ঠ ওই অশুভ শক্তিকে নিবৃত্ত করতে পারছে না। লিমনকে গুলি করার পর র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘লিমন সন্ত্রাসী নয়, ঘটনার শিকার।’ কিন্তু পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ ও র‌্যাবের কর্মকাণ্ডে তাঁর সেই বক্তব্যের প্রতিফলন লক্ষ করা যায় না।
লিমনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত র‌্যাবের ছয় সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণার অব্যবহিত পরই ঈদের দিন লিমনের ওপর হামলা চালান র‌্যাবের কথিত সোর্স হিসেবে পরিচিত ইব্রাহিম। সেদিন ঘটনাচক্রে ইব্রাহিমের শ্যালকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইব্রাহিমের স্ত্রী এবং ইব্রাহিমের দুটি পরস্পরবিরোধী মামলা দায়েরের ঘটনা ঘটেছে। রাজাপুর থানার ওসির দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক আবদুল হালিমের ভাষ্যমতে, ইব্রাহিম ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বক্তব্য দিয়েছেন।
গত ২০ আগস্ট ইব্রাহিমের শ্যালক ফোরকান মারা গেলে তাঁর বোন, অর্থাৎ ইব্রাহিমের স্ত্রী অসুস্থতাজনিত কারণে অপমৃত্যু মামলা করেন এবং তাঁর দেওয়া বক্তব্যই এজাহারে লেখা হয়েছে। এর তিন দিন পর ইব্রাহিম লিমন, তার মা ও অন্যদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে ফোরকানকে হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন। নিজের অপরাধ অড়াল করতে ইব্রাহিম এখন তাঁর স্ত্রীর দায়ের করা এজাহার পুলিশের সাজানো বলে দাবি করছেন। পুলিশ বিভাগের যদি ন্যূনতম পেশাগত সততা থেকে থাকে, তা হলে তাদের পক্ষ থেকেই মিথ্যা মামলা দায়ের করার জন্য ইব্রাহিম ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ প্রত্যাশিত।

No comments

Powered by Blogger.