অবৈধ দখলে থাকা বিসিআইসির ৯৯ একর জমি উদ্ধার

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বড়ছড়া-চারাগাঁও শুল্কবন্দর এলাকায় অবৈধ দখলে থাকা বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসির) ৯৯ একর জমি উদ্ধার করেছে প্রশাসন। গত বৃহস্পতিবার দিনভর ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই জমি উদ্ধার করা হয়।


তবে উদ্ধার অভিযানের সময় স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমদানিকারকদের কয়লা রাখার গুদামের (ডিপো) এবং প্রভাবশালীদের দোকানপাট ও বাড়িঘরে দখলে থাকায় জমি উদ্ধার করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুল্কবন্দরের পাশেই টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রকল্পের প্রায় ২০০ একর জমি রয়েছে। ক্রমাগত লোকসানের কারণে প্রকল্পটি ২০০৭ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা বিভিন্নভাবে খনি এলাকার ভূমি দখল করতে শুরু করেন। গত পাঁচ বছরে বেশির ভাগ জমিই বেদখল হয়ে যায়। কিছু কিছু আমদানিকারক টিলা কেটে তাঁদের কয়লা রাখার ডিপোর জন্য জমি দখল করে নেন। অনেকেই জমি দখল করে দোকানপাট ও ঘরবাড়ি করেছেন।
বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. কামরুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খন্দকার অলিউর রহমান, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহামঞ্চদ আনোয়ার হোসেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিউল আলম পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালান। দিনভর অভিযান চালিয়ে প্রায় ৯৯ একর জমি উদ্ধার করা হয়।
তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, প্রশাসন ছোট বাড়িঘর ভেঙে শুধু নিরীহ লোকজনের দখলে থাকা জমিই উদ্ধার করেছে। প্রভাবশালী ও আমদানিকারকদের দখলে থাকা জমিতে হাত দেয়নি।
স্থানীয় ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা শামীম আহমদ, স্বপন দাস, ওসিউর রহমানসহ অনেকের দখলে থাকা জমি উদ্ধার হয়নি। তবে তাঁরা বলছেন, তাঁদের তিন দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তাঁরা নিজেরাই দখল ছেড়ে দেবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, টেকেরঘাট এলাকায় বিসিআইসির জমির অবৈধ দখলদারদের ৮০ জনের একটি তালিকা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৫০ জনের দখলে থাকা জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খন্দকার অলিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব দখলদারকে উচ্ছেদ করা হবে। কে কোন দল করেন, কে বেশি প্রভাবশালী কোনো কিছু্ দিয়েই উচ্ছেদ ঠেকানো যাবে না। কার কার স্থাপনায় সরকারি জমি রয়েছে, এগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। শিগগিরই আবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।’

No comments

Powered by Blogger.