হাঁপানি
এখন শীতকাল তাই হাঁপানির প্রকোপ চলছে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য বিরাট সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। সুতরাং সচেতন হোন হাঁপানির প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে। হাঁপানির সংজ্ঞা : প্রদাহজনিত কারণে শ্বাসনালী সবেদনশীল থাকায় উহা সঙ্কোচনশীল হয়, ভিতরের প্রলেপ ফুলে থাকে এবং গায়ে প্রদাহ সংশ্লিষ্ট সেল জমে থাকে।
এর কারণে মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট হওয়া, কাশি হওয়ার নামই হাঁপানি বা ব্রংকিয়াল এ্যাজমা।
ধরন বা প্রকার
0 অটোপিক বা এলার্জিজনিত (ওমঊ দ্বারা হয়)
0 নন এটোপিক (ওমঊ ছাড়া হয়)।
যেসব রোগী এটোপিক অর্থাৎ ওমঊ দ্বারা হয় তারা মাঝেমধ্যে আক্রান্ত হয় এবং অন্য সময় ভাল থাকে।
যেসব রোগী নন এটোপিক তারা সবসময়ের জন্য অল্প অল্প ভুগে থাকে এবং মাঝেমধ্যে তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।
হাঁপানি রোগ বংশগতভাবে হয়ে থাকে। যে বংশে এ্যাজমার রোগী আছে সেই বংশের অন্য কোন সদস্য এ রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, এটা কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। পাশাপাশি অবস্থানের কারণে এটা ছড়ানোর কোন সম্ভাবনা নেই।
শিশুদের এ্যাজমা রোগ পরবর্তীকালে ভাল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটা স্থায়ীরূপ ধারণ করতে পারে।
এ্যাজমা রোগ বৃদ্ধির কারণ
সংক্রমণজনিত কারণে এটা বৃদ্ধি পায় বেশি। তবে অন্যান্য কারণের মধ্যে আছে ব্যায়াম, ঠা-া বাতাস, এলার্জেনের সংস্পর্শে আসা, কেমিক্যাল ও ড্রাগ।
এলার্জেনের উৎস হচ্ছে ফুলের রেণু, কম্বল, ঘরের কার্পেট, গোবর, ধুলো ইত্যাদি।
উপসর্গ : শ্বাসকষ্ট, কাশি ও বুকে শব্দ হওয়া এই তিনটিই মূল উপসর্গ। তবে ক্ষেত্র বিশেষে জ্বর ও বুক ধরা মনে হতে পারে। কখনও কখনও এ রোগ চরম আকার ধারণ করতে পারে। তখন রোগী নিস্তেজ হয়ে যেতে পারে, কথা বলতে অসুবিধা হয় এবং শরীর নীলচে বর্ণ ধারণ করে। এমতাবস্থায় রোগীকে হাসপাতালে স্থানান্তর আবশ্যক, নতুবা রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা : রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পরীক্ষার খুব একটা প্রয়োজন হয় না। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক ইতিহাস শুনে এবং রোগী দেখেই রোগ নির্ণয় করতে সক্ষম।
বিশেষ ক্ষেত্রে যেগুলো করা হয় ঈইঈ, ঝবৎঁস ওমঊ, বুকের ঢ-ৎধু, ঊঈএ ইত্যাদি। মরণাপন্ন রোগীর ক্ষেত্রে আরও পরীক্ষার প্রয়োজন হয়।
চিকিৎসা
চিকিৎসার শুরুতেই প্রতিরোধের উপায়গুলো বলি
0 ঘরে কার্পেট ব্যবহার না করা।
0 শীতে কম্বলের পরিবর্তে লেপ ব্যবহার করা।
0 বাড়িতে পশু, পাখি না রাখা।
0 ধুলাবালি থেকে দূরে থাকা।
উপসর্গ নিরাময়ে শ্বাসনালীর প্রসারক ওষুধ ব্যবহার করা হয় যেমন স্যালবিউটামল, টারবুটালিন, থিওফাইলিন, ব্যাসবুটেরল ইত্যাদি।
শ্বাসনালীর প্রদাহ কমানোর জন্য স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়।
এসব ওষুধ ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায় এবং ইনহেলার আকারেও পাওয়া যায়। ইনহেলারগুলো ব্যবহারে কার্যকরী ক্ষমতাও বেশি। এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম হয়। সব রোগীর ক্ষেত্রে সব ধরনের ওষুধ একসঙ্গে ব্যবহার প্রয়োজন পড়ে না। রোগের ধরন এবং তীব্রতা অনুযায়ী ওষুধ নির্ধারণ করা হয়। এ্যাজমাকে অবহেলা করলে যেমন মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে তেমনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ব্যবহার করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব। তাই দেরি না করে আপনার পাশের চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনার ডাক্তার প্রতিবেদক
No comments