চার হাজার শিক্ষাঘণ্টা নষ্ট শনিবার খুলছে বুয়েট by অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য
অবশেষে আগামী শনিবার সচল হচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। আর এরই মধ্যে আন্দোলনে নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় চার হাজার শিক্ষাঘণ্টা। আন্দোলনে রাজনৈতিক প্রলেপের দায় হিসেবে এই সময় অপচয়ের জেরটা টানতে হবে শিক্ষার্থীদের।
শেষ পর্যন্ত গতকাল সোমবার বুয়েট শিক্ষক সমিতি জানিয়েছে, আগামী শনিবার থেকে ফের ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৭ এপ্রিল শিক্ষকরা বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে বুয়েটের উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সমর্থক শিক্ষকরা সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য জোগান যে হিযবুত তাহ্রীর, জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ইন্ধনে এই আন্দোলন হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় টানা আন্দোলন। এ কারণে ৭ এপ্রিল থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাস সাত দিনে মোট তিন হাজার ৮৪০ শিক্ষাঘণ্টা নষ্ট হয়। রবিবার উপ-উপাচার্যকে প্রত্যাহারের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। অবশেষে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বুয়েট ফের সচল হতে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, শেষ পর্যন্ত উপ-উপাচার্যকে সরাতেই হলো। মাঝখান থেকে তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষাঘণ্টা নষ্ট হলো। তাঁর মতে, বুয়েটের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা যথেষ্টই মেধাবী। অথচ তাঁদের আন্দোলনকে সরকার শুরুতেই গুরুত্ব না দিয়ে 'দেখি কী হয়' পথে হেঁটেছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের অধিকাংশই কি হিযবুত তাহরীর, জামায়াত-শিবির ও বিএনপির সমর্থক? তাহলে মেধাবীদের এই ভিড়ে আওয়ামী লীগের কোনো সমর্থক নেই?
আরেক কর্মকর্তা বলেন, এভাবে রাজনীতির আবহ তৈরি করে দেশসেরা প্রতিষ্ঠানটিকে নষ্ট করার বীজ বুনলেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে ভবিষ্যতে আরো বেশি রাজনীতিকীকরণের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আশরাফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, শিক্ষাঘণ্টা ক্ষতির চেয়ে বুয়েটের ইমেজ বাঁচাতে আন্দোলন করা হয়েছে। আর কিছু পেতে হলে কিছু ত্যাগও করতে হয়। তিনি বলেন, বুয়েটে কারা আন্দোলন করেছেন, সবাই তা জানে।
সদ্যবিদায়ী উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম হাবিবুর রহমান বলেন, 'স্বাধীনতাবিরোধীদের ইন্ধনে বুয়েটে আন্দোলন হয়েছে। এ কথা বারবার সরকারকে বলেছি। এর পরও আন্দোলনকারীদের দাবিই মেনে নিল সরকার।'
শনিবার ক্লাস শুরু হচ্ছে : গতকাল বিকেলে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভাশেষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আশরাফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান আগামী শনিবার বুয়েটের ক্লাস শুরু হবে। এর আগে সকালে ডিনস কমিটির বৈঠকে শনিবার থেকে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত হলে শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেন।
অধ্যাপক ড. আশরাফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আগামী শনিবার থেকে ক্লাস নেওয়া হবে। তিনি বলেন, 'যেহেতু আরো দুই দিন কর্মদিবস আছে, এর মধ্যে বাকি প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করছি।'
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বুয়েট শিক্ষার্থী সুদীপ্ত সাহা বলেন, 'শিক্ষকরা চাইলে আজই আমরা ক্লাসে ফিরতে প্রস্তুত। শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হওয়ায় আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। তাই ক্লাসে ফিরতে আমাদের কোনো বাধা নেই।'
বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমি ক্লাসের জন্য অস্থির হয়ে আছি। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসছে, শিক্ষকরা পুরোদমে ক্লাস নিচ্ছেন- এটাই একজন উপাচার্যের বড় সফলতা। এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।'
মামলা থেকে সবাইকে অব্যাহতি : আদালত প্রতিবেদক জানান, বুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির ২৫ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। গতকাল মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী এই আদেশ দেন।
গত রবিবার সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) এম এ জলিল মামলা দুটিতে অভিযুক্তদের অব্যাহতির আবেদন করে ঢাকার সিএমএম আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই সময় আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গতকাল মহানগর হাকিমের কাছে প্রতিবেদন দুটি উপস্থাপন করা হয়। মামলা দুটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের এডিসি (প্রসিকিউশন) আনিসুর রহমান।
গতকাল আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা আরশেদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মামলা দুটির প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৮ অক্টোবর দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু বাদী মামলা দুটি প্রত্যাহারের আবেদন করায় প্রতিবেদন দুটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থাপন করা হয়। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও মামলার বাদী ও বিবাদীগণের মধ্যে ঘটনার বিষয়ে সমঝোতা হওয়ায় আসামিদের অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো।
উল্লেখ্য, এর আগে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক সমিতির বৈঠকে বুয়েটে অচলাবস্থা নিরসনে উপ-উপাচার্য হাবিবুর রহমানকে প্রত্যাহার ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা দুটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৭ এপ্রিল শিক্ষকরা বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে বুয়েটের উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সমর্থক শিক্ষকরা সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য জোগান যে হিযবুত তাহ্রীর, জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ইন্ধনে এই আন্দোলন হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় টানা আন্দোলন। এ কারণে ৭ এপ্রিল থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাস সাত দিনে মোট তিন হাজার ৮৪০ শিক্ষাঘণ্টা নষ্ট হয়। রবিবার উপ-উপাচার্যকে প্রত্যাহারের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। অবশেষে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বুয়েট ফের সচল হতে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, শেষ পর্যন্ত উপ-উপাচার্যকে সরাতেই হলো। মাঝখান থেকে তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষাঘণ্টা নষ্ট হলো। তাঁর মতে, বুয়েটের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা যথেষ্টই মেধাবী। অথচ তাঁদের আন্দোলনকে সরকার শুরুতেই গুরুত্ব না দিয়ে 'দেখি কী হয়' পথে হেঁটেছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের অধিকাংশই কি হিযবুত তাহরীর, জামায়াত-শিবির ও বিএনপির সমর্থক? তাহলে মেধাবীদের এই ভিড়ে আওয়ামী লীগের কোনো সমর্থক নেই?
আরেক কর্মকর্তা বলেন, এভাবে রাজনীতির আবহ তৈরি করে দেশসেরা প্রতিষ্ঠানটিকে নষ্ট করার বীজ বুনলেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে ভবিষ্যতে আরো বেশি রাজনীতিকীকরণের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আশরাফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, শিক্ষাঘণ্টা ক্ষতির চেয়ে বুয়েটের ইমেজ বাঁচাতে আন্দোলন করা হয়েছে। আর কিছু পেতে হলে কিছু ত্যাগও করতে হয়। তিনি বলেন, বুয়েটে কারা আন্দোলন করেছেন, সবাই তা জানে।
সদ্যবিদায়ী উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম হাবিবুর রহমান বলেন, 'স্বাধীনতাবিরোধীদের ইন্ধনে বুয়েটে আন্দোলন হয়েছে। এ কথা বারবার সরকারকে বলেছি। এর পরও আন্দোলনকারীদের দাবিই মেনে নিল সরকার।'
শনিবার ক্লাস শুরু হচ্ছে : গতকাল বিকেলে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভাশেষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আশরাফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান আগামী শনিবার বুয়েটের ক্লাস শুরু হবে। এর আগে সকালে ডিনস কমিটির বৈঠকে শনিবার থেকে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত হলে শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেন।
অধ্যাপক ড. আশরাফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আগামী শনিবার থেকে ক্লাস নেওয়া হবে। তিনি বলেন, 'যেহেতু আরো দুই দিন কর্মদিবস আছে, এর মধ্যে বাকি প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করছি।'
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বুয়েট শিক্ষার্থী সুদীপ্ত সাহা বলেন, 'শিক্ষকরা চাইলে আজই আমরা ক্লাসে ফিরতে প্রস্তুত। শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হওয়ায় আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। তাই ক্লাসে ফিরতে আমাদের কোনো বাধা নেই।'
বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমি ক্লাসের জন্য অস্থির হয়ে আছি। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসছে, শিক্ষকরা পুরোদমে ক্লাস নিচ্ছেন- এটাই একজন উপাচার্যের বড় সফলতা। এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।'
মামলা থেকে সবাইকে অব্যাহতি : আদালত প্রতিবেদক জানান, বুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির ২৫ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। গতকাল মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী এই আদেশ দেন।
গত রবিবার সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) এম এ জলিল মামলা দুটিতে অভিযুক্তদের অব্যাহতির আবেদন করে ঢাকার সিএমএম আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই সময় আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গতকাল মহানগর হাকিমের কাছে প্রতিবেদন দুটি উপস্থাপন করা হয়। মামলা দুটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের এডিসি (প্রসিকিউশন) আনিসুর রহমান।
গতকাল আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা আরশেদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মামলা দুটির প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৮ অক্টোবর দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু বাদী মামলা দুটি প্রত্যাহারের আবেদন করায় প্রতিবেদন দুটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থাপন করা হয়। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও মামলার বাদী ও বিবাদীগণের মধ্যে ঘটনার বিষয়ে সমঝোতা হওয়ায় আসামিদের অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো।
উল্লেখ্য, এর আগে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক সমিতির বৈঠকে বুয়েটে অচলাবস্থা নিরসনে উপ-উপাচার্য হাবিবুর রহমানকে প্রত্যাহার ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা দুটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
No comments