দৃকের ২৩ বছর- প্রাপ্তি ও স্বপ্ন by পার্থ সরকার
ঢাকার ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বরে একটি বাড়ির সামনে সব সময় কোনো না কোনো প্রদর্শনীর ব্যানার বা পোস্টার ঝুলতে দেখা যায়। ১৯৮৯ সালে সেটি ছিল একতলা একটি বাড়ি। এই বাড়িটি প্রথমে দোতলা, এরপর তিনতলা হয়েছে। এখন যেন আলোকচিত্রীদের তীর্থে পরিণত হয়েছে এই দৃক।
৪ সেপ্টেম্বর দৃকের ২৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘ইনসাইডার, আউটসাইডার’ শিরোনামে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এর উদ্বোধন করেন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের আলোকচিত্রী রেজা দেঘাতি। উদ্বোধনী পর্বে দৃকের পরিচালক শহীদুল আলম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। শিল্পী ওয়াকিলুর রহমান ‘গোলাম কাশেম ড্যাডি লেকচার সিরিজ (চতুর্থ)’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন। তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে ছিল প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন নিদর্শনের উপস্থাপনা। আগামীকাল ১২ সেপ্টেম্বর রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে দৃকের এই প্রদর্শনী। কথা হয় শহীদুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বহির্বিশ্বে অবস্থার অনেক পরিবর্তন হলেও আলোকচিত্র বিষয়টি আমাদের এখানেই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে আলোকচিত্র পড়ানো হয় না।’
এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় কী? ‘তরুণ আলোকচিত্রীদের এগিয়ে আসতে হবে। আলোকচিত্রের মাধ্যমে আন্দোলন করতে হবে।’ বলছিলেন শহীদুল আলম।
আলোকচিত্র শিক্ষার জন্য দৃক ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করে পাঠশালা—সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট। শহীদুল আলম বললেন, ‘প্রযুক্তির দিক দিয়ে আমরা হয়তো পিছিয়ে আছি। কিন্তু এখানে প্রাণ আছে আলোকচিত্রের মাঝে। আমরা নিয়মিত ছবি মেলার আয়োজন করি। পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় এর থেকেও বড় প্রদর্শনী হয়। কিন্তু এত আনন্দ, এত প্রাণের স্ফুরণ আর কোথাও নেই। তাই তো বিখ্যাত সব আলোকচিত্রীরা ছবি মেলার সময় যেভাবে হোক ঢাকায় চলে আসেন।’
আলোকচিত্রের পাশাপাশি দৃক এখন কাজ করছে মাল্টিমিডিয়া নিয়ে। পাঠশালায় শুরু হয়েছে মাল্টিমিডিয়া শিক্ষা। এই মাল্টিমিডিয়া গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে দিতে চায় দৃক। পাশাপাশি সৃষ্টি করতে চাইছে একগুচ্ছ গ্রাম প্রতিবেদক। শহীদুল আলম বললেন, ‘আমাদের এখানকার সাংবাদিকতা শহরনির্ভর। গ্রামের দিকে সাংবাদিকতা বেশ দুর্বল। শহর থেকে বের হয়ে মাল্টিমিডিয়ার শিক্ষাকে গ্রামবাংলায় ছড়িয়ে দিতে চাই। তৈরি করতে চাই প্রশিক্ষিত গ্রাম প্রতিবেদক।’
No comments