কল্পকথার গল্প-... সে কি অমনি হবে! by আলী হাবিব
ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হলো রাস্তায়। উদভ্রান্তের মতো হেঁটে আসছেন। পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। বোধ হয় চিনতে পারেননি আমাকে। অথচ আমরা পাশাপাশি বাড়িতে থাকি দীর্ঘদিন। বাজারে যেতে-আসতে দেখা হয়। ভদ্রলোককে এমন উদাস ভঙ্গিতে হেঁটে যেতে দেখে ধরে বসলাম। রীতিমতো হাত চেপে ধরে বললাম, 'এভাবে কোথায় যাচ্ছেন? কী হয়েছে?'
ভদ্রলোক বললেন, 'আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম ভাই।' ঘাবড়ে গেলাম। কিছুটা লজ্জাও পেলাম। পাশাপাশি বাড়িতে অনেকদিন ধরে আছি। সকাল-বিকেল দেখা হয় ভদ্রলোকের সঙ্গে। তিনি নিজেই এগিয়ে এসে কুশলাদি জিজ্ঞেস করেন। কী এমন ঘটতে পারে যে ভদ্রলোক একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেন? অনেক ভাবনা মনের মধ্যে ভিড় জমায়। আশঙ্কা মনের ভেতর দানা বাঁধে। দিনকাল ভালো নয়। খবরের কাগজে প্রায়ই ডাকাতির খবর পড়ি। আজকাল কোথায় কখন কী ঘটে, বলা যায় না। ভদ্রলোক স্বল্প বেতনের চাকুরে। তাঁর ঘরে তেমন কিছু নেই। যেমন আমার ঘরে ঢুকলে চোরও লজ্জা পাবে, আমার প্রতিবেশীর অবস্থাও অনেকটা সে রকম বলেই জানি। কিন্তু আমার পাশের বাড়িতে কেন, পাড়াতেই কাছাকাছি সময়ে এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে শুনিনি। তেমন কিছু ঘটলে তো শুনতে পেতাম। খারাপ খবর নাকি বাতাসের আগে আগে ছোটে। না, তেমন কিছু হলে নিশ্চয়ই পাড়ায় জানাজানি হতো। থানা-পুলিশ হতো। তেমন কিছু ঘটেনি। তাহলে কী এমন ঘটল যে ভদ্রলোক সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেন? নিজের মধ্যে কেমন একটা অপরাধবোধ কাজ করতে শুরু করল। জানি, আজকাল ঢাকা শহরের মানুষ পাশের দরজার কাউকে কেউ চেনে না, জানে না। ভদ্রলোক পাশের বাড়িতে থাকলেও আমার চেনা। একই পাড়ায়, একই রাস্তায় এ-পাশে আমি ও-পাশে থাকেন ভদ্রলোক। চেনাজানা আছে। ভদ্রলোকের স্ত্রীকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার গল্প করতে দেখেছি। কিন্তু তাঁর বিপদের খবর আমি রাখি না কেন?
ভদ্রলোকের হাতটা ধরে বললাম, 'পাশাপাশি থাকি অথচ কিছুই জানি না। কোনো খোঁজ রাখি না। এটা অন্যায়। চলুন, আজ নিরিবিলি বসে আপনার কথা শুনব। আপনার হাতে সময় আছে তো?'
ভদ্রলোক বললেন, 'বাড়িতে ফিরতে ইচ্ছে করছে না ভাই। চলুন দুই টাকার বাদাম কিনে ওই মাঠটার মধ্যে গিয়ে বসি।'
মাঠ বলতে মাঠ কাম পার্ক। পাড়ার ছেলেরা সেখানে ফুটবল-ক্রিকেট খেলে। চারপাশ দিয়ে বয়স্করা সকাল-বিকেল হাঁটাহাঁটি করেন। ভদ্রলোকের বাদাম কেনার প্রস্তাবে সায় দিয়ে বললাম, 'মূল্যস্ফীতি বাদামের ঝুড়িতে গিয়েও পৌঁছেছে। আজকাল আর দুই টাকায় বাদাম জোটে না। মিনিমাম পাঁচ। দশ হলে আরো ভালো। বাদাম আজ আমি আপনাকে খাওয়াব। গল্প করতে করতে সন্ধ্যে পার করে দেব।'
ভদ্রলোক কী ভাবলেন জানি না। নিজেই বাদামওয়ালাকে ডাকলেন। বাদাম কিনে আমরা পার্কের ভেতরে গিয়ে বসলাম। বেশ বাতাস বইতে শুরু করেছে। শরৎকাল যে এসে গেছে, সেটা বেশ বোঝা গেল সন্ধ্যার বাতাসে। ভদ্রলোককে বললাম, 'বলুন, কবে কখন কেমন করে আপনার কী সর্বনাশ হয়েছে বলুন। আমি তো কিছুই জানি না। কেমন করে ঘটল? কী কী খোয়া গেল? পুলিশে খবর দিয়েছেন?'
ভদ্রলোক আমার মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থেকে বললেন, 'আপনি কী বলছেন আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।'
বললাম, 'কেন আপনার বাড়িতে ডাকাতি হয়নি?'
ভদ্রলোক বাদামের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে বললেন, 'কী যে বলেন। ডাকাতদের একটা ইজ্জত আছে না!'
তাহলে কি শেয়ারবাজারে সব দিয়ে এসেছেন?
আমার প্রশ্নের জবাবে ভদ্রলোক বললেন- 'সেখানে যাওয়ার মতো টাকা থাকলে আমি আপনার সঙ্গে পার্কে বসে বাদাম খাই?'
তবে যে বললেন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন- আমার চোখেমুখে বিস্ময়! কোথায় এমন কী ঘটল যে আপনি সর্বস্বান্ত হওয়ার কথা বলছেন?
আমার বিস্ময় দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়ে ভদ্রলোক বললেন, 'স্কুলে। আমি স্কুলে গিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথ করে এসেছি।'
না, এই বুড়ো বয়সে ভদ্রলোক স্কুলে ভর্তি হতে যাননি। তিনি গিয়েছিলেন তাঁর ছেলের স্কুলে। গল্পের সারমর্ম যা দাঁড়াল তা হচ্ছে এই, তাঁর ছেলেটির জন্য তিনি ঘরে টিউটর রেখেছেন। নিষিদ্ধ কোচিং সেন্টারেও গেছেন। তাঁর সাধ্যমতো সব চেষ্টাই তিনি করেছেন। এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ ডেকে বলে দিয়েছে, এবার স্কুলে কোচিং হবে, সেখানেও বাড়তি টাকা দিয়ে কোচিং করতে হবে। না করালেও উপায় নেই। অভিভাবকদের ভয়, স্কুলের কোচিং না করলে ক্লাসের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হবে। ক্লাসে ওই ছাত্র বা ছাত্রীকে অপদস্থ করা হবে। সব মিলিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হবে, যাতে কোচিং ক্লাসে ভর্তি হতে সবাই বাধ্য হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ নাকি যুক্তি দেখিয়ে বলেছে, সরকারের দেখানো পথেই এই কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেহেতু বাইরে কোচিং বন্ধ, তাই স্কুলেই কোচিংয়ের ব্যবস্থা।
ভদ্রলোক বললেন, 'ঘরে টিউটর রেখে টাকা দিয়েছি। টিউটরদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পড়ানো হয়েছে। টাকা দিয়েছি। বোঝার ওপর শাকের আঁটি, স্কুলের কোচিং। এখানেও টাকা দিতে হবে। না দিলে চলবে না। ক্লাসে অপদস্থ হলে ছেলেটা আমাকে অপদার্থ বাপ ভাববে। মনে করবে কয়েকটা টাকার জন্য ক্লাসে সবার সামনে অপদস্থ হতে হলো। আর পরীক্ষায় যদি নম্বর কম দিয়ে দেয় কিংবা প্র্যাকটিক্যালে যদি ফেল করিয়ে দেয়, তাহলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। সব অভিভাবকই এই স্কুল-অধ্যাদেশ বিনা বাধায় মেনে নিয়েছেন। আমিও মেনে নিয়েছি। স্রোতের বিরুদ্ধে গিয়ে তো সাঁতার কাটতে পারব না ভাই। ছেলেপুলে পড়াতে গিয়ে তো আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।'
ভদ্রলোকের কথা শুনে অনেক দিন আগে পড়া একটি গল্প মনে পড়ে গেল। তা সে অনেক অনেক দিন আগের কথা। তখন স্বর্গের সঙ্গে মর্ত্যের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ওই সময়ের এক সুন্দর সকালে স্বর্গে সাজ-সাজ রব। শুধু সাজ-সাজ রব বললে ভুল হবে। ফুল-মালা দিয়ে স্বর্গ রীতিমতো সাজানো হয়েছে। দেবতারা ব্যস্ত। ঘটনা কী? না, স্বর্গে এক বাঙালির আবির্ভাব ঘটতে যাচ্ছে। তাঁর জন্যই এত প্রতীক্ষা। তো সেই বহুপ্রতীক্ষিত বাঙালি এলেন স্বর্গে। তাঁর হাতে একটি টিনের বাক্স। দেবতারা দিব্যদৃষ্টি দিয়ে দেখে নিলেন বাক্সের ভেতরে কী আছে। ইন্দ্র নিজে গিয়ে তাঁকে বরণ করলেন। বললেন, 'বহুদিন পর এক বাঙালি স্বর্গে এসেছেন। বলুন, দেববাঞ্ছিত ঐশ্বর্যসম্ভারের মধ্যে কোনটি আপনি চান?' কুবেরের ভাণ্ডার, অমৃত পানীয় থেকে শুরু করে যা কিছু অমূল্য মনে হয়, বাঙালিকে সব দিতে প্রস্তুত দেবতারা। এমনকি উর্বশী, মেনকা, রম্ভার মতো অপ্সরাকেও চাইতে পারেন তিনি। বাঙালি বলে কথা! বাঙালি বিন্দুমাত্র না ভেবে বললেন, 'প্রভু, আর কিছু নয়- কেবল একটি প্রাইভেট টিউশনি।'
সেকালের প্রাইভেট টিউশনির আধুনিক বাণিজ্যিক সংস্করণ হচ্ছে কোচিং। যে বাঙালি স্বর্গে গিয়েও প্রাইভেট টিউশনি চায়, তাকে আজকের দিনে কোচিং-বাণিজ্য থেকে সরানো- সে কি অমনি হবে! বাইরে বন্ধ করলে চালু করা হবে ভেতরে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই।
লেখক : সাংবাদিক, habib.alihabib@yahoo.com
ভদ্রলোকের হাতটা ধরে বললাম, 'পাশাপাশি থাকি অথচ কিছুই জানি না। কোনো খোঁজ রাখি না। এটা অন্যায়। চলুন, আজ নিরিবিলি বসে আপনার কথা শুনব। আপনার হাতে সময় আছে তো?'
ভদ্রলোক বললেন, 'বাড়িতে ফিরতে ইচ্ছে করছে না ভাই। চলুন দুই টাকার বাদাম কিনে ওই মাঠটার মধ্যে গিয়ে বসি।'
মাঠ বলতে মাঠ কাম পার্ক। পাড়ার ছেলেরা সেখানে ফুটবল-ক্রিকেট খেলে। চারপাশ দিয়ে বয়স্করা সকাল-বিকেল হাঁটাহাঁটি করেন। ভদ্রলোকের বাদাম কেনার প্রস্তাবে সায় দিয়ে বললাম, 'মূল্যস্ফীতি বাদামের ঝুড়িতে গিয়েও পৌঁছেছে। আজকাল আর দুই টাকায় বাদাম জোটে না। মিনিমাম পাঁচ। দশ হলে আরো ভালো। বাদাম আজ আমি আপনাকে খাওয়াব। গল্প করতে করতে সন্ধ্যে পার করে দেব।'
ভদ্রলোক কী ভাবলেন জানি না। নিজেই বাদামওয়ালাকে ডাকলেন। বাদাম কিনে আমরা পার্কের ভেতরে গিয়ে বসলাম। বেশ বাতাস বইতে শুরু করেছে। শরৎকাল যে এসে গেছে, সেটা বেশ বোঝা গেল সন্ধ্যার বাতাসে। ভদ্রলোককে বললাম, 'বলুন, কবে কখন কেমন করে আপনার কী সর্বনাশ হয়েছে বলুন। আমি তো কিছুই জানি না। কেমন করে ঘটল? কী কী খোয়া গেল? পুলিশে খবর দিয়েছেন?'
ভদ্রলোক আমার মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থেকে বললেন, 'আপনি কী বলছেন আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।'
বললাম, 'কেন আপনার বাড়িতে ডাকাতি হয়নি?'
ভদ্রলোক বাদামের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে বললেন, 'কী যে বলেন। ডাকাতদের একটা ইজ্জত আছে না!'
তাহলে কি শেয়ারবাজারে সব দিয়ে এসেছেন?
আমার প্রশ্নের জবাবে ভদ্রলোক বললেন- 'সেখানে যাওয়ার মতো টাকা থাকলে আমি আপনার সঙ্গে পার্কে বসে বাদাম খাই?'
তবে যে বললেন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন- আমার চোখেমুখে বিস্ময়! কোথায় এমন কী ঘটল যে আপনি সর্বস্বান্ত হওয়ার কথা বলছেন?
আমার বিস্ময় দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়ে ভদ্রলোক বললেন, 'স্কুলে। আমি স্কুলে গিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার পথ করে এসেছি।'
না, এই বুড়ো বয়সে ভদ্রলোক স্কুলে ভর্তি হতে যাননি। তিনি গিয়েছিলেন তাঁর ছেলের স্কুলে। গল্পের সারমর্ম যা দাঁড়াল তা হচ্ছে এই, তাঁর ছেলেটির জন্য তিনি ঘরে টিউটর রেখেছেন। নিষিদ্ধ কোচিং সেন্টারেও গেছেন। তাঁর সাধ্যমতো সব চেষ্টাই তিনি করেছেন। এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ ডেকে বলে দিয়েছে, এবার স্কুলে কোচিং হবে, সেখানেও বাড়তি টাকা দিয়ে কোচিং করতে হবে। না করালেও উপায় নেই। অভিভাবকদের ভয়, স্কুলের কোচিং না করলে ক্লাসের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হবে। ক্লাসে ওই ছাত্র বা ছাত্রীকে অপদস্থ করা হবে। সব মিলিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হবে, যাতে কোচিং ক্লাসে ভর্তি হতে সবাই বাধ্য হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ নাকি যুক্তি দেখিয়ে বলেছে, সরকারের দেখানো পথেই এই কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেহেতু বাইরে কোচিং বন্ধ, তাই স্কুলেই কোচিংয়ের ব্যবস্থা।
ভদ্রলোক বললেন, 'ঘরে টিউটর রেখে টাকা দিয়েছি। টিউটরদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পড়ানো হয়েছে। টাকা দিয়েছি। বোঝার ওপর শাকের আঁটি, স্কুলের কোচিং। এখানেও টাকা দিতে হবে। না দিলে চলবে না। ক্লাসে অপদস্থ হলে ছেলেটা আমাকে অপদার্থ বাপ ভাববে। মনে করবে কয়েকটা টাকার জন্য ক্লাসে সবার সামনে অপদস্থ হতে হলো। আর পরীক্ষায় যদি নম্বর কম দিয়ে দেয় কিংবা প্র্যাকটিক্যালে যদি ফেল করিয়ে দেয়, তাহলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। সব অভিভাবকই এই স্কুল-অধ্যাদেশ বিনা বাধায় মেনে নিয়েছেন। আমিও মেনে নিয়েছি। স্রোতের বিরুদ্ধে গিয়ে তো সাঁতার কাটতে পারব না ভাই। ছেলেপুলে পড়াতে গিয়ে তো আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।'
ভদ্রলোকের কথা শুনে অনেক দিন আগে পড়া একটি গল্প মনে পড়ে গেল। তা সে অনেক অনেক দিন আগের কথা। তখন স্বর্গের সঙ্গে মর্ত্যের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ওই সময়ের এক সুন্দর সকালে স্বর্গে সাজ-সাজ রব। শুধু সাজ-সাজ রব বললে ভুল হবে। ফুল-মালা দিয়ে স্বর্গ রীতিমতো সাজানো হয়েছে। দেবতারা ব্যস্ত। ঘটনা কী? না, স্বর্গে এক বাঙালির আবির্ভাব ঘটতে যাচ্ছে। তাঁর জন্যই এত প্রতীক্ষা। তো সেই বহুপ্রতীক্ষিত বাঙালি এলেন স্বর্গে। তাঁর হাতে একটি টিনের বাক্স। দেবতারা দিব্যদৃষ্টি দিয়ে দেখে নিলেন বাক্সের ভেতরে কী আছে। ইন্দ্র নিজে গিয়ে তাঁকে বরণ করলেন। বললেন, 'বহুদিন পর এক বাঙালি স্বর্গে এসেছেন। বলুন, দেববাঞ্ছিত ঐশ্বর্যসম্ভারের মধ্যে কোনটি আপনি চান?' কুবেরের ভাণ্ডার, অমৃত পানীয় থেকে শুরু করে যা কিছু অমূল্য মনে হয়, বাঙালিকে সব দিতে প্রস্তুত দেবতারা। এমনকি উর্বশী, মেনকা, রম্ভার মতো অপ্সরাকেও চাইতে পারেন তিনি। বাঙালি বলে কথা! বাঙালি বিন্দুমাত্র না ভেবে বললেন, 'প্রভু, আর কিছু নয়- কেবল একটি প্রাইভেট টিউশনি।'
সেকালের প্রাইভেট টিউশনির আধুনিক বাণিজ্যিক সংস্করণ হচ্ছে কোচিং। যে বাঙালি স্বর্গে গিয়েও প্রাইভেট টিউশনি চায়, তাকে আজকের দিনে কোচিং-বাণিজ্য থেকে সরানো- সে কি অমনি হবে! বাইরে বন্ধ করলে চালু করা হবে ভেতরে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই।
লেখক : সাংবাদিক, habib.alihabib@yahoo.com
No comments