আ. জলিলের ঋণ-পাঁচবার পুনঃতফসিল শেষে এখন পুরো সুদই মওকুফ দাবি by আবুল কাশেম
পাঁচবার পুনঃতফসিল সুবিধা নেওয়ার পর এবার ঋণের পুরো সুদই মওকুফ চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক- রাকাবের নওগাঁ শাখা থেকে ২০০০ ও ২০০১ সালে পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ঋণ নেন তিনি।
সময়মতো কিস্তি পরিশোধ না করায় ২০১০ সাল পর্যন্ত পাঁচবার পুনঃতফসিল সুবিধা পেয়েছেন তিনি। তারপর গত ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছরেও তিনি কোনো কিস্তি পরিশোধ করেননি। দীর্ঘদিন ধরে কিস্তি না দেওয়ায় ঋণের আসল অর্থ বাদে কেবল সুদই বকেয়া পড়েছে পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এবার এই সুদ মওকুফ চেয়েছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আবদুল জলিল। ইতিমধ্যেই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিচালনা ব্যয় বাদ দিয়ে চার কোটি ৩৪ লাখ টাকা মোট সুদ ধরে এর অর্ধেক মওকুফের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টির অনুমোদন পেতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠিয়েছে।
আবদুল জলিল সুদ মওকুফের আবেদনে বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায় মন্দা থাকায় এবং ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক বিপর্যয়ের শিকার হওয়ায় তিনি ব্যবসায়িক ক্ষতির শিকার হন। এ অবস্থায় ঋণ হিসাবটি সমন্বয়ের জন্য তিনি চারটি প্রস্তাব করেন। এর মধ্যে রয়েছে- ঋণ হিসাবের সমুদয় বকেয়া থেকে আরোপিত সুদের পরিমাণ আলাদা করা, ঋণের আরোপিত সুদ মওকুফের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া, সুদ বাদে মূল বকেয়া বার্ষিক কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া এবং বার্ষিক কিস্তির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা। গত ৫ মার্চ রাকাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর আবেদনটি করেন তিনি।
এ বিষয়ে আবদুল জলিলের সঙ্গে কালের কণ্ঠ থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে গতকাল সন্ধ্যায় অন্য একজন জলিলের মোবাইল ফোন রিসিভ করে বলেন, 'স্যার মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন। এখন কথা বলতে পারবেন না।'
রাকাবের মহাব্যবস্থাপক (পরিচালন) মো. হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'রাকাবের নওগাঁ শাখার আওতায় আবদুল জলিল এমপির মালিকানাধীন ফয়েজ উদ্দিন কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের জন্য ১৯৯৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচ কোটি ৩৫ হাজার এবং ২০০১ সালের ১৬ জুন ৪২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা (মোট পাঁচ কোটি ৪৩ লাখ ৩৩ হাজার) প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর হয়। ২০০০ সালের ৭ জুলাই থেকে ২০০১ সালের ২১ জুন পর্যন্ত ফয়েজ উদ্দিন কোল্ড স্টোরেজকে পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করে ব্যাংক। কোল্ড স্টোরেজটি যথাসময়ে নির্মাণ শেষে ২০০২ সালের মার্চ মাস থেকে আলু সংরক্ষণ শুরু করে। কোল্ড স্টোরেজের উদ্যোক্তা নির্ধারিত কিস্তির টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ না করায় তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে সর্বশেষ ২০১০ সালে পঞ্চমবারের মতো ঋণের কিস্তি পুনঃ তফসিল সুবিধা প্রদান করা হয়।'
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা কিস্তি পাওনা থাকলেও এই সময়ে তিনি কোনো অর্থ পরিশোধ করেননি। রাকাব এই ঋণের স্ট্যাটাস হিসেবে বলেছে, 'এটি নিম্নমান শ্রেণীভুক্ত'। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আবদুল জলিলের এই ঋণের বিভাজন দেখিয়ে রাকাব বলছে, মূল ঋণ পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আরোপিত সুদের পরিমাণ সাত কোটি ৯৮ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে এক কোটি চার লাখ টাকা আসল ও দুই কোটি ৪৯ লাখ টাকা সুদ আদায় হয়েছে। ফলে মূল ঋণের (আসল) স্থিতি দাঁড়িয়েছে চার কোটি ২৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। আর অনাদায়ী সুদের পরিমাণ পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তবে যেহেতু ঋণ হিসাবটি বরাবরই পুনঃ তফসিল সুবিধা পেয়েছে, সেহেতু এর কোনো ডেফার্ড (বিলম্বিত) সুদ নেই।
আবদুল জলিলের সুদ মওকুফের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ এপ্রিল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৩৭৯তম সভায় দুটি বিকল্প প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় প্রস্তাবে রাজি হয়ে লিখিতভাবে সম্মতি জানিয়েছেন আবদুল জলিল। এ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ঋণ হিসাবটি এককালীন অবসায়নের ক্ষেত্রে তহবিল পরিচালনা ব্যয়ের (কস্ট অব ফান্ড) তিন কোটি ৬৩ লাখ টাকা আদায় নিশ্চিত করে বাকি সুদ চার কোটি ৩৪ লাখ টাকার মধ্যে অর্ধেক দুই কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যাংকের আয় খাত ডেবিট করে মওকুফ বিবেচনা করতে হবে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান নীতিমালায় আয় খাত ডেবিট করে সুদ মওকুফের সুযোগ নেই। তাই এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারীর কাছে অনুমোদনের জন্য এ প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে গত ৫ সেপ্টেম্বর।
এ বিষয়ে রাকাবের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. রুস্তম আলী আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, আবদুল জলিল সাহেবের ঋণের সুদ মওকুফের আবেদনের বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের সভায় আলোচনা করে দুটি বিকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে তাঁর ঋণের অর্ধেক সুদ, অর্থাৎ দুই কোটি ১৭ লাখ টাকা মওকুফের অনুমোদন দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এ সুদ মওকুফের সুযোগ নেই। তাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে সুদ মওকুফ করা সম্ভব হবে, অন্যথায় তা সম্ভব হবে না।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর সুদ মওকুফ করার রেওয়াজ আছে। ঋণগ্রহীতারা সে জন্যই আবেদন করেন। আর ব্যাংক যখন দেখে যে, ঋণটি আদায় হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে কিছু সুদ মাফ করেও যদি তা আদায় করা যায়, সেটিও ব্যাংকের জন্য মঙ্গল।
আবদুল জলিল সুদ মওকুফের আবেদনে বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায় মন্দা থাকায় এবং ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক বিপর্যয়ের শিকার হওয়ায় তিনি ব্যবসায়িক ক্ষতির শিকার হন। এ অবস্থায় ঋণ হিসাবটি সমন্বয়ের জন্য তিনি চারটি প্রস্তাব করেন। এর মধ্যে রয়েছে- ঋণ হিসাবের সমুদয় বকেয়া থেকে আরোপিত সুদের পরিমাণ আলাদা করা, ঋণের আরোপিত সুদ মওকুফের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া, সুদ বাদে মূল বকেয়া বার্ষিক কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া এবং বার্ষিক কিস্তির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা। গত ৫ মার্চ রাকাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর আবেদনটি করেন তিনি।
এ বিষয়ে আবদুল জলিলের সঙ্গে কালের কণ্ঠ থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে গতকাল সন্ধ্যায় অন্য একজন জলিলের মোবাইল ফোন রিসিভ করে বলেন, 'স্যার মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন। এখন কথা বলতে পারবেন না।'
রাকাবের মহাব্যবস্থাপক (পরিচালন) মো. হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'রাকাবের নওগাঁ শাখার আওতায় আবদুল জলিল এমপির মালিকানাধীন ফয়েজ উদ্দিন কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের জন্য ১৯৯৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচ কোটি ৩৫ হাজার এবং ২০০১ সালের ১৬ জুন ৪২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা (মোট পাঁচ কোটি ৪৩ লাখ ৩৩ হাজার) প্রকল্প ঋণ মঞ্জুর হয়। ২০০০ সালের ৭ জুলাই থেকে ২০০১ সালের ২১ জুন পর্যন্ত ফয়েজ উদ্দিন কোল্ড স্টোরেজকে পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করে ব্যাংক। কোল্ড স্টোরেজটি যথাসময়ে নির্মাণ শেষে ২০০২ সালের মার্চ মাস থেকে আলু সংরক্ষণ শুরু করে। কোল্ড স্টোরেজের উদ্যোক্তা নির্ধারিত কিস্তির টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ না করায় তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে সর্বশেষ ২০১০ সালে পঞ্চমবারের মতো ঋণের কিস্তি পুনঃ তফসিল সুবিধা প্রদান করা হয়।'
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা কিস্তি পাওনা থাকলেও এই সময়ে তিনি কোনো অর্থ পরিশোধ করেননি। রাকাব এই ঋণের স্ট্যাটাস হিসেবে বলেছে, 'এটি নিম্নমান শ্রেণীভুক্ত'। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আবদুল জলিলের এই ঋণের বিভাজন দেখিয়ে রাকাব বলছে, মূল ঋণ পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আরোপিত সুদের পরিমাণ সাত কোটি ৯৮ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে এক কোটি চার লাখ টাকা আসল ও দুই কোটি ৪৯ লাখ টাকা সুদ আদায় হয়েছে। ফলে মূল ঋণের (আসল) স্থিতি দাঁড়িয়েছে চার কোটি ২৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। আর অনাদায়ী সুদের পরিমাণ পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তবে যেহেতু ঋণ হিসাবটি বরাবরই পুনঃ তফসিল সুবিধা পেয়েছে, সেহেতু এর কোনো ডেফার্ড (বিলম্বিত) সুদ নেই।
আবদুল জলিলের সুদ মওকুফের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ এপ্রিল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৩৭৯তম সভায় দুটি বিকল্প প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় প্রস্তাবে রাজি হয়ে লিখিতভাবে সম্মতি জানিয়েছেন আবদুল জলিল। এ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ঋণ হিসাবটি এককালীন অবসায়নের ক্ষেত্রে তহবিল পরিচালনা ব্যয়ের (কস্ট অব ফান্ড) তিন কোটি ৬৩ লাখ টাকা আদায় নিশ্চিত করে বাকি সুদ চার কোটি ৩৪ লাখ টাকার মধ্যে অর্ধেক দুই কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যাংকের আয় খাত ডেবিট করে মওকুফ বিবেচনা করতে হবে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান নীতিমালায় আয় খাত ডেবিট করে সুদ মওকুফের সুযোগ নেই। তাই এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারীর কাছে অনুমোদনের জন্য এ প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে গত ৫ সেপ্টেম্বর।
এ বিষয়ে রাকাবের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. রুস্তম আলী আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, আবদুল জলিল সাহেবের ঋণের সুদ মওকুফের আবেদনের বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের সভায় আলোচনা করে দুটি বিকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে তাঁর ঋণের অর্ধেক সুদ, অর্থাৎ দুই কোটি ১৭ লাখ টাকা মওকুফের অনুমোদন দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এ সুদ মওকুফের সুযোগ নেই। তাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে সুদ মওকুফ করা সম্ভব হবে, অন্যথায় তা সম্ভব হবে না।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর সুদ মওকুফ করার রেওয়াজ আছে। ঋণগ্রহীতারা সে জন্যই আবেদন করেন। আর ব্যাংক যখন দেখে যে, ঋণটি আদায় হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে কিছু সুদ মাফ করেও যদি তা আদায় করা যায়, সেটিও ব্যাংকের জন্য মঙ্গল।
No comments