পবিত্র কোরআনের আলো-বনি ইসরাইলদের ধৃষ্টতা ছিল চরম

৭১. ক্বালা ইন্নাহু ইয়াক্বুলু ইন্নাহা বাক্বারাতুল্লা যালু-লুন তুছি-রুল আরদ্বা ওয়ালা তাছকিল হারছা; মুছাল্লামাতুল্লা শিয়াতা ফিহা। ক্বালুল আ-না জি'তা বিলহাক্কি; ফাযাবাহুহা-ওয়ামা কাদু-ইয়াফআলুন।৭২. ওয়াইয কুলতুম নাফসান ফাদ্দারা'তুম ফিহা; ওয়াল্লাহু মুখরিজুম্ মা কুনতুম তাকতুমুন।


৭৩. ফাকুলনাদ্রিবু-হু বিবা'দিহা; কাযা-লিকা ইউহ্ই ল্লাহুল মাওতা-ওইউরিকুম আ-ইয়াতিহি লাআ'ল্লাকুম তা'কি্বলুন।
৭৪. ছুম্মা ক্বাছাত্ কুলু-বুকুম্ মিম্ বা;দি যালিকা ফাহিয়া কালহিজা-রাতি আও আশাদ্দু কাছওয়াতান ওয়াইন্না মিনা হিজারাতি লামা ইয়াতাফাজ্জারু মিনহুল আনহা-রু; ওয়াইন্না মিনহা লামা ইয়াশ্শাক্কাকু ফাইয়াখরুজু মিনহুল মা-আ'; ওয়াইন্না মিনহা লামা ইয়াহবিতু মিন খাশইয়াতিল্লাহি; ওয়ামাল্লাহু বিগা-ফিলিন আ'ম্মা তা'মালু-ন।
(সুরা বাকারা : আয়াত ৭১-৭৪)

অনুবাদ
৭১. মুসা বললেন, তাহলে শোনো, তিনি (আল্লাহ) বলেছেন, সে গাভিটি হবে এমন যে সেটি কোনো চাষাবাদের কাজে ব্যবহৃত হয় না বা পানি সেচের কাজেও না; সেটি সম্পূর্ণ নিখুঁত। তারা বলল, এতক্ষণে আপনি সত্য কথাটি বলেছেন, অতঃপর তারা গাভি জবাই করল, যদিও তারা এটি করতে চাইছিল না।
৭২. যখন তোমরা একজন লোককে হত্যা করেছিলে, অতঃপর সে ব্যাপারে তোমরা একে অপরের ওপর দোষারোপ করতে শুরু করলে। আল্লাহ সে বিষয়টাই প্রকাশ করতে চাইলেন, যা তোমরা গোপন করতে চাইছিলে।
৭৩. (হত্যাকারীকে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে) আমি তোমাদের বললাম, সেই গাভির (মাংসের) একাংশ দিয়ে একে আঘাত করো, এভাবেই আল্লাহ তায়ালা মৃত ব্যক্তিকে জীবনদান করেন এবং তোমাদের কাছে তাঁর জ্ঞানের নিদর্শনগুলো তুলে ধরেন।
৭৪. এত কিছুর পরও তোমাদের মন কঠিন হয়ে গেল, যেন তা পাথর অথবা পাথরের চেয়েও বেশি কঠিন। কিছু কিছু পাথরও তো এমন আছে, যা থেকে ঝরনাধারা নির্গত হয়, আবার কখনো কখনো তা ফেটে পানি বের হয়। এর মধ্য থেকে আবার আল্লাহর সচেতনতায় ধসেও পড়ে, তোমরা যা কিছু করো কোনো কিছু থেকেই আল্লাহ বেখবর নন।

ব্যাখ্যা
৭১ থেকে ৭৩ নম্বর আয়াত পর্যন্ত সেই গাভি এবং নিহত ব্যক্তির ব্যাপারেই বলা হয়েছে, যা এর আগের আয়াতগুলোর ব্যাখ্যায় গত সংখ্যায় বর্ণনা করা হয়েছে। ৭৪ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হচ্ছে উপসংহার। হজরত মুসা (আ.)-এর যুগের বনি ইসরাইল সম্প্রদায়কে সত্য বোঝাতে এবং সত্যের পথে আনতে আল্লাহ তায়ালা অনেক চেষ্টা করেছেন। সে যুগের মানুষের মনমানসিকতা অনুযায়ী অলৌকিক ধরনের নিদর্শনসমূহ তাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। সমুদ্রের ভেতর থেকে তাদের উদ্ধার করে আনা হয়েছে, পানির অভাবে কাতর জাতিকে পাথরের ভেতর থেকে ঝরনারাজি আবিষ্কার করে পিপাসা নিবৃত্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং মৃত মানুষকে জীবিত করে তার সাক্ষ্য গ্রহণ করে হত্যারহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। এর পরও তারা সত্যকে বুঝতে চেষ্টা করেনি, সুপথে আসতে চায়নি। এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাদের অন্তরকে পাথরের মতো শক্ত বলে অভিহিত করেছেন। এমনকি পাথরের চেয়ে বেশি শক্ত বলেছেন। পাথর যে গলে, এর উদাহরণ এই আয়াতে দেওয়া হয়েছে। তবে এই আয়াতের সমাপ্তিতে আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে সত্য স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কিছুটা কঠিন হুঁশিয়ারির মাধ্যমে। মানুষ যা কিছু করে, সব কিছুই আল্লাহ তায়ালা জানেন এবং দেখেন। সুতরাং যে যা-ই করো সব কিছুর জন্যই জবাব দিতে হবে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী

No comments

Powered by Blogger.