মিয়ানমারে ৯ বিচারককে অপসারণ করল পার্লামেন্ট

মিয়ানমারে সাংবিধানিক আদালতের ৯ বিচারককে অপসারণ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের তিন-চতুর্থাংশ নির্বাচিত সদস্য তাঁদের অভিশংসিত করার পক্ষে ভোট দেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ক্ষমতাসীন ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (ইউএসডিপি)


সদস্যরাও আছেন। কেবল সামরিক বাহিনীর জন্য সংরক্ষিত এক-চতুর্থাংশ আসনের অনির্বাচিত সদস্যরা বিপক্ষে ভোট দেন।
দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার চূড়ান্ত পর্যায়ে বিচারকদের অপসারণ করা হলো। গত ফেব্রুয়ারিতে পার্লামেন্টারি কমিটি ও কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করে সাংবিধানিক আদালতের এক আদেশ জারির পর থেকে এই অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ২০০৮ সালে জান্তা সরকার প্রবর্তিত বিতর্কিত একটি আদেশের (চার্টার) ধারাগুলোর ব্যাখ্যা চেয়ে সাংবিধানিক আদালতে প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবিধানিক আদালত এই আদেশ জারি করেন। এতে বলা হয়, পার্লামেন্টারি কমিটি ও কমিশন কোনো মন্ত্রীকে কোনো ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করতে পারবে না। এতে কার্যত পার্লামেন্টের প্রতিপক্ষ হিসেবে সরকারকে দাঁড় করিয়ে দেন আদালত। প্রেসিডেন্ট সেইনের অবসরের পর পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার সাবেক জেনারেল শউয়ে মানকে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবেও মত দেওয়া হয় ওই আদেশে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাংবিধানিক আদালতের বিচারকদের অপসারণের এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে দ্বন্দ্ব আরো বাড়বে। গত মাসে ওই বিচারকদের অভিশংসনের জন্য ভোট দিয়েছিল উচ্চকক্ষ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কয়েক দশকের সামরিক শাসনের পর বর্তমান নির্বাচিত সরকারের আমলে এটিই সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেঙ্গুনভিত্তিক একজন বিশ্লেষক বলেন, 'মানকে সামরিক বাহিনীর বাতাবরণ থেকে আগে বের হতে হবে। আমি জানি না, সেইনের পর দায়িত্ব নেওয়ার প্রশ্নে তিনি জয়ী হবেন কি না। তবে তিনি ঝুঁকি নিতে চলেছেন_এ কথা বলা যায়।'
গতকাল ৯ বিচারপতির অপসারণের পক্ষে ইউএসডিপিসহ অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সব সদস্য ভোট দেন। ভোটাভুটি শুরুর আগে ইউএসডিপির আইনপ্রণেতা সোয়ে য়িন বলেন, "দেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার ক্ষেত্রে আমাদের 'ভারসাম্য' আনার প্রয়োজন আছে। পার্লামেন্টকে আঘাত করার অর্থ জনগণকে আঘাত করা।" এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট সেইনসহ পার্লামেন্টের দুই কক্ষের দুই স্পিকারকে নতুন ৯ বিচারককে মনোনয়ন দিতে হবে। এরপর আইনপ্রণেতাদের অনুমোদনের জন্য ওই বিচারকদের তালিকা পার্লামেন্টে উত্থাপন করতে হবে। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.