দখল সংস্কৃতি-রুখতে হবে সামাজিকভাবে
'জোর যার মুল্লুক তার'- প্রবাদটি যেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা তথাকথিত 'অতিথি পাখি' খণ্ডকালীন আশ্রিতদের আচরণ যেন এই প্রবাদ বাক্যটির সার্থকতাই প্রমাণ করে দেয়।
সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দলে ভিড়ে যাওয়া সুযোগসন্ধানীদের আচরণ থেকে যেমন এই প্রবাদটির সার্থকতা প্রমাণিত হয়, তেমনি স্থানীয়ভাবে ক্ষমতাসীন অনেককেই কোনো নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে দখলদারির সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে দেখা যায়। সোমবার কালের কণ্ঠে প্রকাশিত দুটি খবর যেন দখল সংস্কৃতির বর্তমান অবস্থাকেই তুলে ধরেছে। এই দখলদারির একটি ঘটেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা। অন্যটিতে খাটানো হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব।
প্রকাশিত খবরের একটিতে বলা হয়েছে, বাকল্যান্ড বাঁধের ওপর দিয়ে গড়ে ওঠা সদরঘাট-শ্যামবাজার-উল্টিগঞ্জ-পোস্তগোলা সড়কটি দখল করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে রেখেছে শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ত বণিক সমিতি। তাদের এই দখলের কারণে সদরঘাট থেকে পোস্তগোলা মহাশ্মশানঘাট পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে অচল। অথচ এই সড়কটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। কিন্তু বণিক সমিতির কিছু প্রভাবশালী নেতার চাঁদাবাজির কারণে সড়কটি এক দিনের জন্যও উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। নির্দিষ্ট সময় আড়তদারি করা যাবে, এই শর্তে মোহাম্মদ হানিফ মেয়র থাকাকালে শ্যামবাজার আড়তের পাশে বাকল্যান্ড বাঁধ বণিক সমিতির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নামে অস্থায়ী ভিত্তিতে টোল দোকান হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয় বলে জানা যায়। সকালের নির্ধারিত সময়েই শুধু সেখানে আড়তদারি করা যাবে- এ কথা টোল ভাড়ার চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকলেও শুরু থেকেই আড়তদাররা চুক্তিপত্রের এই শর্তটি মানেননি। তাঁরা সারা দিনই সড়কটি অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ নিয়ে এলাকায় সৃষ্ট ব্যাপক প্রতিক্রিয়ায় ডিসিসি ওই চুক্তি বাতিল করে দিলেও কোনো লাভ হয়নি। আড়তদাররা বরাবরের মতোই সড়ক দখল করে রেখেছেন। এসব অবৈধ আড়ত থেকে প্রতিদিন বুড়িগঙ্গা নদীতে শত শত টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে পানিদূষণের পাশাপাশি নদীটি ভরাটও হয়ে যাচ্ছে।
দখলদারির আরেকটি ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারে। এই জেলার চকরিয়ায় প্রভাবশালী কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সামাজিক বনায়নের এক লাখ আগরগাছ কেটে ৫০ হেক্টর বনভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে বলে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং বনভূমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবিতে উপকারভোগীরা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। খবরে বলা হয়েছে, সামাজিক বনায়নের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের এক লাখ আগরগাছ কেটে সাবাড় করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের প্রমাণ মেলে এই দখলদারির সংস্কৃতি থেকে। একটি সুবিধাবাদী মহল সব সময়ই প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা কিংবা কক্সবাজারে কোনো তফাত নেই। রাজনৈতিক কিংবা ব্যবসায়িক- যেকোনো প্রভাব বিস্তার করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিটাই হচ্ছে এই চক্রের প্রধান লক্ষ্য। কালের কণ্ঠে দুটি ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও এমন অনেক ঘটনাই দেশে ঘটছে। এই সুবিধাবাদী চক্রকে রুখতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। সামাজিকভাবে এসব দখলবাজকে রুখতে না পারলে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন সম্ভব হবে না। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকেও এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা আশা করব, সবার সম্মিলিত চেষ্টায় দখলদারির অপসংস্কৃতি থেকে মুক্ত হবে দেশ।
প্রকাশিত খবরের একটিতে বলা হয়েছে, বাকল্যান্ড বাঁধের ওপর দিয়ে গড়ে ওঠা সদরঘাট-শ্যামবাজার-উল্টিগঞ্জ-পোস্তগোলা সড়কটি দখল করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে রেখেছে শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ত বণিক সমিতি। তাদের এই দখলের কারণে সদরঘাট থেকে পোস্তগোলা মহাশ্মশানঘাট পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে অচল। অথচ এই সড়কটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। কিন্তু বণিক সমিতির কিছু প্রভাবশালী নেতার চাঁদাবাজির কারণে সড়কটি এক দিনের জন্যও উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। নির্দিষ্ট সময় আড়তদারি করা যাবে, এই শর্তে মোহাম্মদ হানিফ মেয়র থাকাকালে শ্যামবাজার আড়তের পাশে বাকল্যান্ড বাঁধ বণিক সমিতির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নামে অস্থায়ী ভিত্তিতে টোল দোকান হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয় বলে জানা যায়। সকালের নির্ধারিত সময়েই শুধু সেখানে আড়তদারি করা যাবে- এ কথা টোল ভাড়ার চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকলেও শুরু থেকেই আড়তদাররা চুক্তিপত্রের এই শর্তটি মানেননি। তাঁরা সারা দিনই সড়কটি অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ নিয়ে এলাকায় সৃষ্ট ব্যাপক প্রতিক্রিয়ায় ডিসিসি ওই চুক্তি বাতিল করে দিলেও কোনো লাভ হয়নি। আড়তদাররা বরাবরের মতোই সড়ক দখল করে রেখেছেন। এসব অবৈধ আড়ত থেকে প্রতিদিন বুড়িগঙ্গা নদীতে শত শত টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে পানিদূষণের পাশাপাশি নদীটি ভরাটও হয়ে যাচ্ছে।
দখলদারির আরেকটি ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারে। এই জেলার চকরিয়ায় প্রভাবশালী কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সামাজিক বনায়নের এক লাখ আগরগাছ কেটে ৫০ হেক্টর বনভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে বলে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং বনভূমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবিতে উপকারভোগীরা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। খবরে বলা হয়েছে, সামাজিক বনায়নের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের এক লাখ আগরগাছ কেটে সাবাড় করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের প্রমাণ মেলে এই দখলদারির সংস্কৃতি থেকে। একটি সুবিধাবাদী মহল সব সময়ই প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা কিংবা কক্সবাজারে কোনো তফাত নেই। রাজনৈতিক কিংবা ব্যবসায়িক- যেকোনো প্রভাব বিস্তার করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিটাই হচ্ছে এই চক্রের প্রধান লক্ষ্য। কালের কণ্ঠে দুটি ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও এমন অনেক ঘটনাই দেশে ঘটছে। এই সুবিধাবাদী চক্রকে রুখতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। সামাজিকভাবে এসব দখলবাজকে রুখতে না পারলে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন সম্ভব হবে না। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকেও এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা আশা করব, সবার সম্মিলিত চেষ্টায় দখলদারির অপসংস্কৃতি থেকে মুক্ত হবে দেশ।
No comments