সাভারের পাঁচ যুবক নিয়ে রহস্য-অভিযোগ অপহরণের উদ্ধার গ্রেপ্তারে by তায়েফুর রহমান
ঢাকার অদূরে সাভারের পাঁচ যুবককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না ১৩ আগস্ট থেকে। হেমায়েতপুর থেকে র্যাব তাঁদের ধরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ ছিল। পরিবারের সদস্যরা এ ব্যাপারে র্যাব ও পুলিশে যোগাযোগ করে জানতে পারে তাঁদের কেউ গ্রেপ্তার করেনি। পরে ১৭ আগস্ট সাভার থানায় একটি অপহরণ মামলা করা হয়।
পুলিশ সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। কোনোভাবেই যখন খোঁজ মিলছিল না, তখন ৩ সেপ্টেম্বর পরিবারের সদস্যরা টেলিভিশনে দেখতে পায় নিখোঁজরা র্যাব হেফাজতে আছেন।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নেতৃস্থানীয় তিন চিকিৎসককে হত্যার ষড়যন্ত্রে গ্রেপ্তারকৃতরা লিপ্ত ছিলেন। আগের রাতে তাঁদের মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। পাঁচ যুবকের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া, যাঁদের বিরুদ্ধে থানায় কোনো অভিযোগ নেই- হঠাৎ করেই তাঁদের হত্যা পরিকল্পনায় অংশগ্রহণসহ নানা বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। পরিবারের সদস্যরাও বলতে পারছে না 'আসল ঘটনা'। জানা যায়নি তাঁদের ২০ দিন 'অন্যত্র অবস্থানের' কাহিনীও।
তিন চিকিৎসককে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে যে ছয়জনকে র্যাব-৪ গ্রেপ্তার দেখিয়ে মিরপুর থানায় সোপর্দ করেছে, তাঁরা হলেন- ডা. মো. কামরুল হাসান, তওফিকুল ইসলাম তুষার, মিঠু ওরফে প্রশান্ত, জয়নাল আবেদীন, মহরম আলী মোহন ও মোস্তফা। তাঁদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, গুলি ও ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের হাজির করা হয়। নেতৃত্বের বিরোধে ডা. দোলনের নির্দেশে গ্রেপ্তারকৃতরা ড্যাব মহাসচিব ডা. জাহিদ গ্রুপের তিন চিকিৎসককে হত্যার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা চালান বলে র্যাব কর্মকর্তারা জানান।
এদিকে চিকিৎসক কামরুল হাসান ছাড়া অন্যদের ১৩ আগস্ট সাদা পোশাকে র্যাব পরিচয়ের কয়েক ব্যক্তি একটি মাইক্রোবাসে করে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে অপহরণ করে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত তুষারের বাবা তাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি সাভার উপজেলার হেমায়েতপুরের সুগন্ধা হাউজিং এলাকার ৩ নম্বর রোডের ১২ নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন। তাঁর ছেলে তুষার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত সুগন্ধা হাউজিংয়ের মেসার্স সততা এন্টারপ্রাইজে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। গত ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় তুষার তাঁর বন্ধু মোহন, মিঠু ও মোস্তফার সঙ্গে সততা এন্টারপ্রাইজে বসে ইফতার করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁরা পাশেই সোহাগের চায়ের দোকানে যান। চা পানকালে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে ছয়-সাতজন লোক সাদা পোশাকে এসে নিজেদের র্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাঁদের মাইক্রোবাসটিতে উঠিয়ে সাভারের দিকে চলে যান। রাতভর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁদের কোনো সন্ধান না পেয়ে পরের দিন সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি। গণমাধ্যমে অপহরণ সংবাদ প্রকাশিত হলে সাভার থানার পুলিশ ১৭ আগস্ট একটি অপহরণ মামলা নথিভুক্ত করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, অপহরণ মামলার পর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তুষারের প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সোহাগ ও রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দুজনই পরিবহন শ্রমিক। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হয়।
এদিকে সোমবার ছেলের গ্রেপ্তারের কথা শুনে ছুটে যান তুষারের বাবা তাজুল ইসলাম ও মা ইফরাত আরা ময়না। তাঁরা কালের কণ্ঠকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকিদের ১২ আগস্ট সাভার থেকে অপহরণ করা হয়। ছেলে বেঁচে আছে, তা দেখে আমরা খুশি। থানা হাজতে কথা হয়েছে। তবে কেউ বলতে পারেননি, এত দিন তাঁরা কোথায় ছিলেন। অপহরণের পর থেকে তাঁদের চোখ সব সময় বেঁধে রাখা হতো। এক স্থানে চার-পাঁচ দিনের বেশি রাখা হয়নি। খেতে দেওয়া হতো শুকনো টোস্ট ও চা। এর বাইরে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তাঁর ছেলে।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত তুষারের বাবা তাজুল ইসলামের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ায়। নদী ভাঙনের শিকার পরিবারটি বছর চারেক আগে সাভারের হেমায়েতপুরের সুগন্ধা হাউজিং এলাকায় বসবাস শুরু করে। মহরম ওরফে মোহনের বাড়ি আলমনগর হাউজিংয়ের শেষ মাথায়। স্ত্রী শাহীদা আক্তার ও দুই ছেলেসন্তান নিয়ে মোহন সেখানে বসবাস করলেও তাঁদের নিজ বাড়ি পাশের চান্দুলিয়া গ্রামে। তিনি পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাঁর একটি বাস আছে এবং তা নিজেই চালান। গ্রেপ্তারকৃত মিঠু ওরফে প্রশান্ত শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার মহিষার এলাকার আনোয়ার হোসেন বেপারীর ছেলে। জয়নাল আবেদীনের বাবার নাম শওকত আলী। তাঁরা মিরপুর-১-এর শাহআলী থানা এলাকায় বসবাস করেন। মোস্তফা দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে। হেমায়েতপুরের জয়নাবাড়ী এলাকায় তাঁরা ভাড়া থাকেন। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকাসক্তসহ অন্য কিছু অভিযোগ থাকলেও হেমায়েতপুর ও সাভারের বাসিন্দারা যুবকদের অন্য কোনো অপরাধের তথ্য জানাতে পারেনি। এমনকি স্থানীয় থানায় তাঁদের নামে কোনো অভিযোগও নেই। এর পরও তিনজন চিকিৎসককে হত্যার পরিকল্পনা ও চুক্তিতে যুবকদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ শুনে সবাই বিস্মিত। গ্রেপ্তারকৃতদের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা এই রহস্যজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নেতৃস্থানীয় তিন চিকিৎসককে হত্যার ষড়যন্ত্রে গ্রেপ্তারকৃতরা লিপ্ত ছিলেন। আগের রাতে তাঁদের মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। পাঁচ যুবকের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া, যাঁদের বিরুদ্ধে থানায় কোনো অভিযোগ নেই- হঠাৎ করেই তাঁদের হত্যা পরিকল্পনায় অংশগ্রহণসহ নানা বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। পরিবারের সদস্যরাও বলতে পারছে না 'আসল ঘটনা'। জানা যায়নি তাঁদের ২০ দিন 'অন্যত্র অবস্থানের' কাহিনীও।
তিন চিকিৎসককে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে যে ছয়জনকে র্যাব-৪ গ্রেপ্তার দেখিয়ে মিরপুর থানায় সোপর্দ করেছে, তাঁরা হলেন- ডা. মো. কামরুল হাসান, তওফিকুল ইসলাম তুষার, মিঠু ওরফে প্রশান্ত, জয়নাল আবেদীন, মহরম আলী মোহন ও মোস্তফা। তাঁদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, গুলি ও ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের হাজির করা হয়। নেতৃত্বের বিরোধে ডা. দোলনের নির্দেশে গ্রেপ্তারকৃতরা ড্যাব মহাসচিব ডা. জাহিদ গ্রুপের তিন চিকিৎসককে হত্যার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা চালান বলে র্যাব কর্মকর্তারা জানান।
এদিকে চিকিৎসক কামরুল হাসান ছাড়া অন্যদের ১৩ আগস্ট সাদা পোশাকে র্যাব পরিচয়ের কয়েক ব্যক্তি একটি মাইক্রোবাসে করে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে অপহরণ করে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত তুষারের বাবা তাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি সাভার উপজেলার হেমায়েতপুরের সুগন্ধা হাউজিং এলাকার ৩ নম্বর রোডের ১২ নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন। তাঁর ছেলে তুষার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত সুগন্ধা হাউজিংয়ের মেসার্স সততা এন্টারপ্রাইজে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। গত ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় তুষার তাঁর বন্ধু মোহন, মিঠু ও মোস্তফার সঙ্গে সততা এন্টারপ্রাইজে বসে ইফতার করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁরা পাশেই সোহাগের চায়ের দোকানে যান। চা পানকালে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে ছয়-সাতজন লোক সাদা পোশাকে এসে নিজেদের র্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাঁদের মাইক্রোবাসটিতে উঠিয়ে সাভারের দিকে চলে যান। রাতভর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁদের কোনো সন্ধান না পেয়ে পরের দিন সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি। গণমাধ্যমে অপহরণ সংবাদ প্রকাশিত হলে সাভার থানার পুলিশ ১৭ আগস্ট একটি অপহরণ মামলা নথিভুক্ত করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, অপহরণ মামলার পর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তুষারের প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সোহাগ ও রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দুজনই পরিবহন শ্রমিক। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হয়।
এদিকে সোমবার ছেলের গ্রেপ্তারের কথা শুনে ছুটে যান তুষারের বাবা তাজুল ইসলাম ও মা ইফরাত আরা ময়না। তাঁরা কালের কণ্ঠকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকিদের ১২ আগস্ট সাভার থেকে অপহরণ করা হয়। ছেলে বেঁচে আছে, তা দেখে আমরা খুশি। থানা হাজতে কথা হয়েছে। তবে কেউ বলতে পারেননি, এত দিন তাঁরা কোথায় ছিলেন। অপহরণের পর থেকে তাঁদের চোখ সব সময় বেঁধে রাখা হতো। এক স্থানে চার-পাঁচ দিনের বেশি রাখা হয়নি। খেতে দেওয়া হতো শুকনো টোস্ট ও চা। এর বাইরে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তাঁর ছেলে।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত তুষারের বাবা তাজুল ইসলামের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ায়। নদী ভাঙনের শিকার পরিবারটি বছর চারেক আগে সাভারের হেমায়েতপুরের সুগন্ধা হাউজিং এলাকায় বসবাস শুরু করে। মহরম ওরফে মোহনের বাড়ি আলমনগর হাউজিংয়ের শেষ মাথায়। স্ত্রী শাহীদা আক্তার ও দুই ছেলেসন্তান নিয়ে মোহন সেখানে বসবাস করলেও তাঁদের নিজ বাড়ি পাশের চান্দুলিয়া গ্রামে। তিনি পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাঁর একটি বাস আছে এবং তা নিজেই চালান। গ্রেপ্তারকৃত মিঠু ওরফে প্রশান্ত শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার মহিষার এলাকার আনোয়ার হোসেন বেপারীর ছেলে। জয়নাল আবেদীনের বাবার নাম শওকত আলী। তাঁরা মিরপুর-১-এর শাহআলী থানা এলাকায় বসবাস করেন। মোস্তফা দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে। হেমায়েতপুরের জয়নাবাড়ী এলাকায় তাঁরা ভাড়া থাকেন। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকাসক্তসহ অন্য কিছু অভিযোগ থাকলেও হেমায়েতপুর ও সাভারের বাসিন্দারা যুবকদের অন্য কোনো অপরাধের তথ্য জানাতে পারেনি। এমনকি স্থানীয় থানায় তাঁদের নামে কোনো অভিযোগও নেই। এর পরও তিনজন চিকিৎসককে হত্যার পরিকল্পনা ও চুক্তিতে যুবকদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ শুনে সবাই বিস্মিত। গ্রেপ্তারকৃতদের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা এই রহস্যজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছে।
No comments