'ইসরায়েলি হামলার জবাবে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালাবে ইরান'

ইসরায়েল যদি ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়, তবে প্রতিক্রিয়া হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোতেও হামলা চালাতে পারে ইরান। ইসরায়েলি হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা না থাকলেও তাদের ঘাঁটিগুলো হামলার শিকার হবে।


ইরান সমর্থিত লেবাননি শিয়াপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ গত সোমবার এই দাবি করেছে।
হিজবুল্লাহর মহাসচিব সৈয়দ হাসান নাসরাল্লাহ বৈরুতভিত্তিক টেলিভিশন আল মায়াদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'কোনো হামলা হলে জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই জবাব হবে ভয়াবহ। শুধু ইসরায়েলি সত্ত্বাতেই হামলা সীমাবদ্ধ থাকবে না। এই অঞ্চলে আমেরিকান ঘাঁটিগুলোও ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। ইরানে ইসরায়েলের হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী থাকবে।'
শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির আড়ালে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে_এই অভিযোগ তুলে ইরানে সামরিক অভিযানের হুমকি দিয়ে আসছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র এখনো এ ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো অবস্থান নেয়নি। তবে আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ইসরায়েল একতরফাভাবেই ইরানে হামলা করে বসতে পারে_এরকম আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। ইরান যে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না, এই বিষয়টি পরিষ্কার করতে ইরানি নেতাদের নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিতে গত রবিবার বিশ্বশক্তির কাছে আহবান জানান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির বিষয়টিকে নিজের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পরাশক্তি ইসরায়েল। তবে ইরানে হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলি নেতাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইরানে হামলার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না তাদের কেউ কেউ। এ ব্যাপারে নাসরাল্লাহ বলেন, 'আমার মনে হয় না আগামী কয়েক মাসে বা নিকট-ভবিষ্যতেও ইসরায়েলি শত্রুরা ইরানে হামলা চালাতে পারবে। নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক ইরানের হামলার ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে সুবিধার দিকগুলোতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।'
হামলা হলে ইসরায়েলের পাশে থাকবে না যুক্তরাষ্ট্র : ইরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলের একপাক্ষিক হামলায় সমর্থন দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে মার্কিন কর্মকর্তারা তেহরানে গোপন বার্তাও পাঠিয়েছেন। ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ইয়েদিয়ৎ আহরনৎ ফাঁস হওয়া দলিলের বরাত দিয়ে এই দাবি করেছে।
পত্রিকাটি জানায়, মার্কিন সরকার সম্প্রতি ইউরোপের দুটি সরকারের মাধ্যমে ইরানে এই বার্তা পাঠায়। বার্তায় তারা বলেছে, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কোনো ধরনের সমন্বয় ছাড়া ইরানে হামলা চালানো হলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে সমর্থন দেবে না। পারস্য উপসাগরে নিজেদের বিমানবাহী রণতরীসহ মধ্যপ্রাচ্যের সেনা ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই যুক্তরাষ্ট্র এই বার্তা পাঠিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র : রয়টার্স, প্রেসটিভি।

No comments

Powered by Blogger.