বদলে যাও বদলে দাও মিছিল- রুখে দাঁড়াতে পারি রাসায়নিক সন্ত্রাস by নাসরিন রশিদ
‘বদলে যাও বদলে দাও মিছিল’ ব্লগে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও নির্বাচিত সাতটি ইস্যু নিয়ে অব্যাহত আলোচনা হচ্ছে। আজ রাসায়নিক ও ভেজালমুক্ত খাবার চাই ইস্যুতে একটি বিশ্লেষণাত্মক অভিমতসহ আরও দুজন লেখকের নির্বাচিত মন্তব্য ছাপা হলো। খাবার যখন ভেজালযুক্ত, তখন এর ক্ষতিকর রাসায়নিক ও প্রাণঘাতী বিভিন্ন উপাদান মানুষের শরীরে পুষ্টিসাধনের বদলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন: পাকস্থলী, লিভার, কিডনি ইত্যাদিতে ক্যানসার, আলসার, হরমোনাল ইমব্যালেন্সসহ বিভিন্ন রোগ এবং শিশুদের সঠিক বুদ্ধিসম্পন্নভাবে বেড়ে উঠতে বাধা দেয়। বাংলাদেশে এসব অসুখের রোগী আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। চিকিৎসা-ব্যয় বহন করতে গিয়ে পরিবারগুলো পথে বসে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ, ১৯৫৯ (২০০৫ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী, একটা খাদ্যে যেসব স্বাভাবিক উপাদান থাকার কথা, তা যদি না থাকে অথবা যদি কোনো রাসায়নিক উপাদান ও কৃত্রিম সুগন্ধিযুক্ত করা হয়, তাকে ভেজাল বলে। যেমন—প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া গরুর দুধ থেকে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য ওপর থেকে ননি বা ফ্যাট তুলে ফেলা হয় এবং ঘনকারক কিছু যুক্ত করা হয় এবং মিষ্টি করার জন্য চিনি বা স্যাকারিন জাতীয় দ্রব্য যুক্ত করা হয়, তাহলে তাকে ভেজাল বলে। এই দুধ যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, এ জন্য ফরমালিন মেশানো হয়। এতে শিশুদের শরীরে একজাতীয় বিষ তৈরি হয়, যা তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
প্রায় প্রতিটি খাদ্যে, যেমন: মিষ্টি, ঘি, সরিষার তেল, সয়াবিন তেল, চিনিসহ বিভিন্ন নামীদামি কোম্পানির টিন ও প্যাকেটজাত খাবার, সস, কেক, মাছ-মাংস, ফলমূল, শাকসবজি—কোনোটিই ভেজাল থেকে বাদ যাচ্ছে না। একেক খাবারে ভেজাল দেওয়ার প্রক্রিয়া একেক রকম। ব্যবসায়ীরা অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় এসব ভেজাল দেওয়ার প্রক্রিয়া পরিবর্তন করেন। যেমন গত বছর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আমের নমুনা পরীক্ষা করে ব্যাপক পরিমাণ ক্যালসিয়াম কার্বাইডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর ক্যালসিয়াম কার্বাইডের পরিবর্তে পাওয়া যাচ্ছে ফরমালিন, এফেড্রিন, এথরেল প্রভৃতি ক্ষতিকারক কেমিক্যালের উপস্থিতি। শুধু আম নয়, সব রকম ফল, যেমন: আঙুর, আপেল, মাল্টা, খেজুর, লিচু প্রভৃতি ফলে রাসায়নিকের উপস্থিতি এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে।
গত ১ আগস্ট প্রথম আলোর উদ্যোগে দেশ টিভিতে ‘ভেজাল ও রাসায়নিকমুক্ত খাবার চাই’ শিরোনামে ‘বদলে যাও বদলে দাও মিছিল’-এর সংলাপ অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী, ক্যাবের সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ডিন ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটসহ অনেকেই সরাসরি দর্শকদের সামনে আলোচনায় অংশ নেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর অভিমত ছিল, ভেজাল প্রতিরোধের লক্ষ্যে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট হচ্ছে এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বিএসটিআইয়ের পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে মাঠপর্যায়ে মনিটরিং জোরদার করা সম্ভব হচ্ছে না, তবে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। শিল্পমন্ত্রী ইতিপূর্বে গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট আইন সংশোধন করা হবে!
বাণিজ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বিএসটিআইয়ের পর্যাপ্ত জনবল না থাকলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিটি জেলায় সিভিল সার্জন অফিসে একজন জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও প্রতিটি উপজেলায় একজন করে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রয়েছেন। যাঁরা তৃণমূল পর্যায়ে ভেজাল খাদ্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা প্রশিক্ষিত। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি থেকে তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে ফিজিওলজি, অ্যানাটমি, বায়োক্যামিস্ট্রি, প্যারা সাইটোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, হেলথ এডুকেশন, কমিউনিটি মেডিসিন, পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ও পাবলিক হেলথ ল প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। যেহেতু এসব জেলা ও উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টররা তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করেন, সুতরাং তাঁদের প্রয়োজনে আরও প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক দিয়ে আরও অধিক দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যেটি বাধা, তা হলো তাঁদের তৃতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদা।
যে বিষয়টি না বললেই নয়, এ পর্যায়ের পদগুলো যেমন—পুলিশ ইন্সপেক্টর প্রথম শ্রেণী এবং কৃষি ও প্রকৌশল বিভাগের ডিপ্লোমাধারীদের দ্বিতীয় শ্রেণীতে রূপান্তর করা হয়েছে। স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের ফিডার পোস্ট স্বাস্থ্য সহকারীদের ন্যূনতম যোগ্যতা ছিল এইচএসসি পাস। স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে তিন বছর কাজ করার পর তিন বছরের ডিপ্লোমা করে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরে পদায়ন করা হয়। সুতরাং তাঁদের শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা ন্যূনতম ১৫ বছর। যদি স্নাতক ডিগ্রিধারী একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা পেতে পারেন। তবে স্যানিটারি ইন্সপেক্টররা তা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে অভিযান কার্যকর করতে হলে মাঝেমধ্যে মোবাইল কোর্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে তা সম্ভব নয়। তৃণমূল পর্যায়ের এসব কর্মী বাহিনীকে আরও ক্ষমতায়ন করে, আরও বেশি দায়িত্ব দিয়ে, আরও লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে প্রয়োজনে পৃথক বিভাগ করে তাঁদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম করে তোলা সম্ভব। তাঁরা আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণকে স্বাস্থ্যশিক্ষার মাধ্যমে সচেতন করে তুলতে পারেন।
জেলা পর্যায়ে গবেষণাগার স্থাপন সরকারের জরুরি নজরে আনা দরকার। ঢাকায় যে কয়টি বড় গবেষণাগার রয়েছে, সব কটিতে সরকারিভাবে ভেজাল সন্দেহের নমুনা পাঠানোর সুযোগ নেই। শুধু জনস্বাস্থ্য গবেষণাগার মহাখালীতে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের পাঠানো নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দুঃখের বিষয় হলো, সেখানে ১৯৬৭ সালের রুলস অনুযায়ী মাত্র ১০৭টি নমুনা পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি, খাদ্যে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা, অ্যালকোহলের পরিমাণ ইত্যাদি পরিমাপের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেক নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।
খাদ্য বিধি, ১৯৬৭-এর আধুনিকায়ন প্রয়োজন। দেশের সব রকম খাদ্য পরীক্ষার সুব্যবস্থা করতে হবে। নাগরিকদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার লক্ষ্যে সবাইকে একমত হয়ে খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণকে সবার আগে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা রুখে দাঁড়াতে পারি রাসায়নিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমরা বাঁচতে চাই এবং বাঁচাতে চাই আগামী প্রজন্মকে।
নাসরিন রশিদ: বদলে যাও বদলে দাও মিছিল ব্লগের নিয়মিত লেখক।
nasrin.rashid.happy@gmail.com
ই-মেইল: bjbd@prothom-alo.info
facebook.com/bjbdmichhil
জনমত জরিপের ফলাফল
বদলে যাও বদলে দাও মিছিলের ওয়েবসাইটে নতুন তিনটি জনমত শুরু হয়েছে চলতি সপ্তাহে। আপনিও অংশ নিন জরিপে।
ভেজালমুক্ত খাদ্যের নিশ্চয়তায় প্রতিটি জেলায় খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন গঠন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
হ্যাঁ ৮৪% না ৮%
মন্তব্য নেই ৮%
৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
আপনি কি মনে করেন, বাড়িভাড়া নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠন অপরিহার্য?
হ্যাঁ ৮৬% না ৯%
মন্তব্য নেই ৫%
৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
আপনি কি মনে করেন, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে এখনই সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন জরুরি?
হ্যাঁ ৮৩% না ১৩%
মন্তব্য নেই ৪%
৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
www.bodlejaobodledao.com
প্রায় প্রতিটি খাদ্যে, যেমন: মিষ্টি, ঘি, সরিষার তেল, সয়াবিন তেল, চিনিসহ বিভিন্ন নামীদামি কোম্পানির টিন ও প্যাকেটজাত খাবার, সস, কেক, মাছ-মাংস, ফলমূল, শাকসবজি—কোনোটিই ভেজাল থেকে বাদ যাচ্ছে না। একেক খাবারে ভেজাল দেওয়ার প্রক্রিয়া একেক রকম। ব্যবসায়ীরা অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় এসব ভেজাল দেওয়ার প্রক্রিয়া পরিবর্তন করেন। যেমন গত বছর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আমের নমুনা পরীক্ষা করে ব্যাপক পরিমাণ ক্যালসিয়াম কার্বাইডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর ক্যালসিয়াম কার্বাইডের পরিবর্তে পাওয়া যাচ্ছে ফরমালিন, এফেড্রিন, এথরেল প্রভৃতি ক্ষতিকারক কেমিক্যালের উপস্থিতি। শুধু আম নয়, সব রকম ফল, যেমন: আঙুর, আপেল, মাল্টা, খেজুর, লিচু প্রভৃতি ফলে রাসায়নিকের উপস্থিতি এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে।
গত ১ আগস্ট প্রথম আলোর উদ্যোগে দেশ টিভিতে ‘ভেজাল ও রাসায়নিকমুক্ত খাবার চাই’ শিরোনামে ‘বদলে যাও বদলে দাও মিছিল’-এর সংলাপ অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী, ক্যাবের সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ডিন ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটসহ অনেকেই সরাসরি দর্শকদের সামনে আলোচনায় অংশ নেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর অভিমত ছিল, ভেজাল প্রতিরোধের লক্ষ্যে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট হচ্ছে এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বিএসটিআইয়ের পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে মাঠপর্যায়ে মনিটরিং জোরদার করা সম্ভব হচ্ছে না, তবে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। শিল্পমন্ত্রী ইতিপূর্বে গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট আইন সংশোধন করা হবে!
বাণিজ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বিএসটিআইয়ের পর্যাপ্ত জনবল না থাকলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিটি জেলায় সিভিল সার্জন অফিসে একজন জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও প্রতিটি উপজেলায় একজন করে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রয়েছেন। যাঁরা তৃণমূল পর্যায়ে ভেজাল খাদ্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা প্রশিক্ষিত। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি থেকে তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে ফিজিওলজি, অ্যানাটমি, বায়োক্যামিস্ট্রি, প্যারা সাইটোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, হেলথ এডুকেশন, কমিউনিটি মেডিসিন, পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ও পাবলিক হেলথ ল প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। যেহেতু এসব জেলা ও উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টররা তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করেন, সুতরাং তাঁদের প্রয়োজনে আরও প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক দিয়ে আরও অধিক দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যেটি বাধা, তা হলো তাঁদের তৃতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদা।
যে বিষয়টি না বললেই নয়, এ পর্যায়ের পদগুলো যেমন—পুলিশ ইন্সপেক্টর প্রথম শ্রেণী এবং কৃষি ও প্রকৌশল বিভাগের ডিপ্লোমাধারীদের দ্বিতীয় শ্রেণীতে রূপান্তর করা হয়েছে। স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের ফিডার পোস্ট স্বাস্থ্য সহকারীদের ন্যূনতম যোগ্যতা ছিল এইচএসসি পাস। স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে তিন বছর কাজ করার পর তিন বছরের ডিপ্লোমা করে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরে পদায়ন করা হয়। সুতরাং তাঁদের শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা ন্যূনতম ১৫ বছর। যদি স্নাতক ডিগ্রিধারী একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা পেতে পারেন। তবে স্যানিটারি ইন্সপেক্টররা তা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে অভিযান কার্যকর করতে হলে মাঝেমধ্যে মোবাইল কোর্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে তা সম্ভব নয়। তৃণমূল পর্যায়ের এসব কর্মী বাহিনীকে আরও ক্ষমতায়ন করে, আরও বেশি দায়িত্ব দিয়ে, আরও লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে প্রয়োজনে পৃথক বিভাগ করে তাঁদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম করে তোলা সম্ভব। তাঁরা আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণকে স্বাস্থ্যশিক্ষার মাধ্যমে সচেতন করে তুলতে পারেন।
জেলা পর্যায়ে গবেষণাগার স্থাপন সরকারের জরুরি নজরে আনা দরকার। ঢাকায় যে কয়টি বড় গবেষণাগার রয়েছে, সব কটিতে সরকারিভাবে ভেজাল সন্দেহের নমুনা পাঠানোর সুযোগ নেই। শুধু জনস্বাস্থ্য গবেষণাগার মহাখালীতে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের পাঠানো নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দুঃখের বিষয় হলো, সেখানে ১৯৬৭ সালের রুলস অনুযায়ী মাত্র ১০৭টি নমুনা পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি, খাদ্যে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা, অ্যালকোহলের পরিমাণ ইত্যাদি পরিমাপের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেক নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।
খাদ্য বিধি, ১৯৬৭-এর আধুনিকায়ন প্রয়োজন। দেশের সব রকম খাদ্য পরীক্ষার সুব্যবস্থা করতে হবে। নাগরিকদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার লক্ষ্যে সবাইকে একমত হয়ে খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণকে সবার আগে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা রুখে দাঁড়াতে পারি রাসায়নিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমরা বাঁচতে চাই এবং বাঁচাতে চাই আগামী প্রজন্মকে।
নাসরিন রশিদ: বদলে যাও বদলে দাও মিছিল ব্লগের নিয়মিত লেখক।
nasrin.rashid.happy@gmail.com
ই-মেইল: bjbd@prothom-alo.info
facebook.com/bjbdmichhil
জনমত জরিপের ফলাফল
বদলে যাও বদলে দাও মিছিলের ওয়েবসাইটে নতুন তিনটি জনমত শুরু হয়েছে চলতি সপ্তাহে। আপনিও অংশ নিন জরিপে।
ভেজালমুক্ত খাদ্যের নিশ্চয়তায় প্রতিটি জেলায় খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন গঠন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
হ্যাঁ ৮৪% না ৮%
মন্তব্য নেই ৮%
৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
আপনি কি মনে করেন, বাড়িভাড়া নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠন অপরিহার্য?
হ্যাঁ ৮৬% না ৯%
মন্তব্য নেই ৫%
৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
আপনি কি মনে করেন, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে এখনই সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন জরুরি?
হ্যাঁ ৮৩% না ১৩%
মন্তব্য নেই ৪%
৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
www.bodlejaobodledao.com
No comments