ঈদকে সামনে রেখে মহল্লায় মহল্লায় অভিনব চাঁদাবাজী by জাহাঙ্গীর সুমন ও ইমরান আলী
রাজধানীর ফকিরারপুলের অবিরাম প্রেসে রশিদের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে রশিদ দেওয়া হয়েছে। রশিদটি দেয়া হয়েছে ‘আমাদের কাফেলা এ নূরানী’ নামক একটি সংগঠনের নামে। গত কয়েকদিন আগে দুই যুবক চাঁদার রশিদটি প্রেসের কর্মচারীদের দিয়ে বলে যায়, ৩ দিনের মধ্যে টাকা দিতে। কি কারণে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে যুবকরা বলে, আমরা রাতে সেহরির সময় লোকজনকে ডেকে দিই। এ কারণে টাকা দিতে হবে।
ফকিরাপুলের এই প্রেস ছাড়াও ওই এলাকায় এই একই রশিদের মাধ্যমে বাসাবাড়ি আর দোকানপাটে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যস্ত চাঁদা দাবি করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, চাঁদাবাজিতে এটি একটি নতুন সংযোজন। প্রশাসনের লোকজনের হাত থেকে রক্ষা পেতেই এমন ধরনের চাঁদাবাজীর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
এই দৃশ্য যে শুধু ফকিরারপুলে তা নয়, এ চিত্র পুরো রাজধানীর। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এলাকাতে খোঁজ নিয়ে চাঁদাবাজির এই খবর পাওয়া গেছে। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের চাঁদাবাজীর যেন মহোৎসব শুরু হয়েছে। যে যেভাবে পারছে সেভাবে চাঁদাবাজী করছে। স্থানীয় বেকার তরুণ ও যুবকদের মাধ্যমে এক শ্রেণীর সন্ত্রাসী এই চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলছেন, চলতি আগস্টের তিন তারিখের মধ্যে এই টাকা পরিশোধের তাগিদ দেয়া হয়েছে।
তবে পুলিশ বলছে, তারা ঈদে চাঁদাবাজি ঠেকাতে মাঠে রয়েছে। তাদের কাছে এখনও এ ধরনের চাঁদাবাজীর তথ্য নেই। জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা আইনৃঙ্খলা বাহিনী বা প্রশাসনের নিকট এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে সোর্সের মাধ্যমে এসব খবর পুলিশ বা থানাগুলোর ওয়াকিবহাল থাকার কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সব বিষয়েই কি পুলিশকে লিখিতভাবে জানানোর পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়!
এদিকে, অবিরাম প্রেসে দেয়া ওই রশিদের সূত্র ধরে ফকিরাপুল এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে ‘আমাদের কাফেলা এ নূরানী’ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এলাকাবাসী বলছেন, এই প্রতিষ্ঠানের রশিদ ব্যবহার করে অনেকের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়েছে।
ফকিরারপুলের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রউফ বাংলানিউজকে বলেন, “এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান আছে বলে আমার জানা নেই। তবে চাঁদাবাজীর জন্য কেউ এটির নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে।”
তিনি জানান, এই এলাকায় প্রতিটি বাড়িতে এ ধরনের রশিদ দেয়া হয়েছে। জেমি ও বরকত নামের দুই যুবক এই রশিদ দিয়ে গেছেন। পরে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
রাজধানীর তেজগাঁও, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, মিরপুর, খিলগাঁও, শাহাজানপুর, বেগুনবাড়ি, আজিমপুর, মুগদা, মানিকনগর, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান ও বাড্ডা এলাকা ঘুরে একই ধরনের চাঁদাবাজির তথ্য পাওয়া যায়।
তেজগাঁও এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ বলেন, “স্থানীয় কয়েক যুবক তাকে ৪ হাজার টাকা দেয়ার জন্য বলে গেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকায় থাকতে হলে এই টাকা দিতে হবে। যদি আমি এই টাকা না দেই, তাহলে আমার আর এই এলাকাতে থাকাই হবে না।”
নিজেকে প্রবোধ দেওয়ার ছলে তিনি বলেন, “তারা তো প্রতি মাসে চাঁদা চাচ্ছে না, এই সময়টাতে চায়। আর ভয় কার না আছে। সুতরাং আমি এটি দিয়েও আসছি।”
তিনি বলেন, “আমার মত অন্য যারা এখানে বসবাস করে তারাও এটি দিয়ে আসছে।”
একই এলাকার চাকরিজীবী ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমান বলেন, “আসলে আমাদের করার কিছুই নেই। ঈদ আসলে চাঁদাবাজী যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এটি দিতেই হবে। না দিলেই সামনে বিপদ। এ কারণে দেয়া ছাড়া উপায় নেই।”
অনুসন্ধানে জানা যায়, এক শ্রেণীর তরণ ও যুবকদের মাধ্যমে চাঁদাবাজি করাচ্ছে প্রভাবশালী একটি চক্র। প্রতিটি এলাকায় এই চক্রটি এখন চাঁদাবাজীতে সক্রিয় রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, একটি বিল্ডিংয়ে সাধারণত ৮ টি পরিবার থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ৩/৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওই বাড়ির মালিককেও মোটা অংকের চাঁদা দিতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, এই চাঁদাবাজীর বিষয়ে তারা কোনো অভিযোগ করেন না। অভিযোগ করলে বরং আরো বিপদ বাড়বে এই ভয়েই তারা অনেকটা নিরবে নিভৃতে এগুলো সহ্য করে যান।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) এর সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজমুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের চাঁদাবাজী সম্পূর্ণ অবৈধ। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জাগরণী পার্টির নাম করে চাঁদা উঠানো হচ্ছে। এ ধরনের তথ্য আমাদের কাছে আছে। তবে জোর করে কেউ নির্দিস্ট কোনো অংক চাপিয়ে দিতে পারে না।
যদি কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করে, তাহলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
চাঁদাবাজী বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ নেই উল্লেখ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (সদর) হাবিবুর রহমান বলেন, রমজানে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে একাধিকবার সভা হয়েছে। সেখানে চাঁদাবাজীসহ নানা ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জনান, রমজানের শুরু থেকে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। তাদের কাছে এমন ধরনের চাঁদাবাজীর কোনো তথ্য নেই বলে তিনি দাবি করেন। একই সাথে তিনি বলেন, কেউ যদি চাঁদাবাজীর বিষয়ে অভিযোগ করে তবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, চাঁদাবাজিতে এটি একটি নতুন সংযোজন। প্রশাসনের লোকজনের হাত থেকে রক্ষা পেতেই এমন ধরনের চাঁদাবাজীর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
এই দৃশ্য যে শুধু ফকিরারপুলে তা নয়, এ চিত্র পুরো রাজধানীর। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এলাকাতে খোঁজ নিয়ে চাঁদাবাজির এই খবর পাওয়া গেছে। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের চাঁদাবাজীর যেন মহোৎসব শুরু হয়েছে। যে যেভাবে পারছে সেভাবে চাঁদাবাজী করছে। স্থানীয় বেকার তরুণ ও যুবকদের মাধ্যমে এক শ্রেণীর সন্ত্রাসী এই চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলছেন, চলতি আগস্টের তিন তারিখের মধ্যে এই টাকা পরিশোধের তাগিদ দেয়া হয়েছে।
তবে পুলিশ বলছে, তারা ঈদে চাঁদাবাজি ঠেকাতে মাঠে রয়েছে। তাদের কাছে এখনও এ ধরনের চাঁদাবাজীর তথ্য নেই। জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা আইনৃঙ্খলা বাহিনী বা প্রশাসনের নিকট এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে সোর্সের মাধ্যমে এসব খবর পুলিশ বা থানাগুলোর ওয়াকিবহাল থাকার কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সব বিষয়েই কি পুলিশকে লিখিতভাবে জানানোর পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়!
এদিকে, অবিরাম প্রেসে দেয়া ওই রশিদের সূত্র ধরে ফকিরাপুল এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে ‘আমাদের কাফেলা এ নূরানী’ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এলাকাবাসী বলছেন, এই প্রতিষ্ঠানের রশিদ ব্যবহার করে অনেকের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়েছে।
ফকিরারপুলের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রউফ বাংলানিউজকে বলেন, “এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান আছে বলে আমার জানা নেই। তবে চাঁদাবাজীর জন্য কেউ এটির নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে।”
তিনি জানান, এই এলাকায় প্রতিটি বাড়িতে এ ধরনের রশিদ দেয়া হয়েছে। জেমি ও বরকত নামের দুই যুবক এই রশিদ দিয়ে গেছেন। পরে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
রাজধানীর তেজগাঁও, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, মিরপুর, খিলগাঁও, শাহাজানপুর, বেগুনবাড়ি, আজিমপুর, মুগদা, মানিকনগর, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান ও বাড্ডা এলাকা ঘুরে একই ধরনের চাঁদাবাজির তথ্য পাওয়া যায়।
তেজগাঁও এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ বলেন, “স্থানীয় কয়েক যুবক তাকে ৪ হাজার টাকা দেয়ার জন্য বলে গেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকায় থাকতে হলে এই টাকা দিতে হবে। যদি আমি এই টাকা না দেই, তাহলে আমার আর এই এলাকাতে থাকাই হবে না।”
নিজেকে প্রবোধ দেওয়ার ছলে তিনি বলেন, “তারা তো প্রতি মাসে চাঁদা চাচ্ছে না, এই সময়টাতে চায়। আর ভয় কার না আছে। সুতরাং আমি এটি দিয়েও আসছি।”
তিনি বলেন, “আমার মত অন্য যারা এখানে বসবাস করে তারাও এটি দিয়ে আসছে।”
একই এলাকার চাকরিজীবী ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমান বলেন, “আসলে আমাদের করার কিছুই নেই। ঈদ আসলে চাঁদাবাজী যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এটি দিতেই হবে। না দিলেই সামনে বিপদ। এ কারণে দেয়া ছাড়া উপায় নেই।”
অনুসন্ধানে জানা যায়, এক শ্রেণীর তরণ ও যুবকদের মাধ্যমে চাঁদাবাজি করাচ্ছে প্রভাবশালী একটি চক্র। প্রতিটি এলাকায় এই চক্রটি এখন চাঁদাবাজীতে সক্রিয় রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, একটি বিল্ডিংয়ে সাধারণত ৮ টি পরিবার থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ৩/৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওই বাড়ির মালিককেও মোটা অংকের চাঁদা দিতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, এই চাঁদাবাজীর বিষয়ে তারা কোনো অভিযোগ করেন না। অভিযোগ করলে বরং আরো বিপদ বাড়বে এই ভয়েই তারা অনেকটা নিরবে নিভৃতে এগুলো সহ্য করে যান।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) এর সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজমুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের চাঁদাবাজী সম্পূর্ণ অবৈধ। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জাগরণী পার্টির নাম করে চাঁদা উঠানো হচ্ছে। এ ধরনের তথ্য আমাদের কাছে আছে। তবে জোর করে কেউ নির্দিস্ট কোনো অংক চাপিয়ে দিতে পারে না।
যদি কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করে, তাহলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
চাঁদাবাজী বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ নেই উল্লেখ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (সদর) হাবিবুর রহমান বলেন, রমজানে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে একাধিকবার সভা হয়েছে। সেখানে চাঁদাবাজীসহ নানা ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জনান, রমজানের শুরু থেকে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। তাদের কাছে এমন ধরনের চাঁদাবাজীর কোনো তথ্য নেই বলে তিনি দাবি করেন। একই সাথে তিনি বলেন, কেউ যদি চাঁদাবাজীর বিষয়ে অভিযোগ করে তবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
No comments