পবিত্র কোরআনের আলো-সামুদ জাতির নেতারা তাদের নবীর প্রতি শাস্তি নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল
৭৪. ওয়ায্কুরূ ইয্ জাআ'লাকুম খুলাফা-আ মিম্ বা'দি আ'-দিন ওয়া বাওয়্যা-কুম ফিল আরদ্বি তাত্তাখিযূনা মিন ছুহূলিহা ক্বুসূরান ওয়া তানহিতূনাল জিবা-লা বুইঊতান ফায্কুরূ আ-লা-আল্লাহি ওয়ালা তা'ছাও ফিল আরদ্বি মুফছিদীন।
৭৫. ক্বা-লাল মালাউল্লাযীনাছ্তাকবারূ মিন ক্বাওমিহী লিল্লাযীনা ছ্তুদ্বয়ি'ফূ লিমান আ-মানা মিনহুম আতা'লামূনা আন্না সা-লিহাম্ মুরছালুম্ মির্ রাবি্বহী; ক্বা-লূ ইন্না বিমা উরছিলা বিহী মু'মিনূন। ৭৬. ক্বা-লাল্লাযীনাছ্তাকবারূ ইন্না বিল্লাযী আ-মানতুম বিহী কা-ফিরূন। ৭৭. ফাআক্বারুন না-ক্বাতা ওয়া আ'তাও আ'ন আমরি রাবি্বহিম ওয়া ক্বা-লূ ইয়া-সা-লিহু ই'তিনা বিমা তায়ি'দুনা ইন কুনতা মিনাল মুরছালীন।
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ৭৪-৭৭]
অনুবাদ : ৭৪. সেই সময়ের কথা স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদের (সামুদ জাতিকে) তাদের (আদ জাতির) স্থলাভিষিক্ত করেন। আর পৃথিবীতে তোমাদের এভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন যে তোমরা সমতল ভূমিতে দালানকোঠা নির্মাণ করছ এবং পাহাড় কেটে কেটে বাসস্থান তৈরি করছ। সুতরাং তোমরা আল্লাহর নিয়ামতগুলো স্মরণ করো (কারণ আল্লাহই তোমাদের এসব কৌশল উদ্ভাবন করার ক্ষমতা দিয়েছেন) আর তোমরা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না।
৭৫. তার (সালেহ আ.) সম্প্রদায়ের দাম্ভিক নেতারা যেসব অপেক্ষাকৃত দুর্বল লোক ইমান এনেছিল, তাদের জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি এটা বিশ্বাস করো যে সালেহ তার প্রভুর পক্ষ থেকে রাসুল হয়ে এসেছেন! তারা বলল, নিশ্চয়ই আমরা তো তাঁর রিসালাতে বিশ্বাস করি। ৭৬. সেই দাম্ভিক লোকেরা বলল, তোমরা তাঁর যে রিসালাতে বিশ্ব্বাস করো, আমরা তো তা অস্বীকার করি। ৭৭. সুতরাং তারা সেই মাদি উটটিকে মেরে ফেলল এবং তাদের প্রতিপালকের নির্দেশ অমান্য করল। আর তারা বলল, হে সালেহ, আপনি যদি সত্যিই নবী হয়ে থাকেন, তবে আপনি আমাদের যেসব ভয় দেখাচ্ছেন অর্থাৎ শাস্তির কথা বলছেন, সেগুলো নিয়ে আসুন না।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোও হজরত সালেহ (আ.) ও তাঁর সামুদ জাতির ঔদ্ধত্য প্রসঙ্গেই এসেছে। সামুদ জাতির নেতাদের দাবি অনুযায়ী আল্লাহর কুদরতের উট পাহাড় থেকে নেমে আসার পর যখন তারা আল্লাহর একত্ববাদের ওপর ইমান আনল না এবং নবী সালেহ (আ.)-এর নবুয়তের ওপর ইমান আনতে অস্বীকৃতি জানাল, তখন নবী সালেহ (আ.) আশঙ্কা করলেন, তাদের ওপর আল্লাহর গজব নাজিল হতে পারে। তিনি বললেন, তোমরা অন্ততপক্ষে এই মাদি উটটির কোনো ক্ষতি করো না এবং এটিকে স্বাধীনভাবে চলেফিরে খেতে দাও। মাদি উটটির পুরো এক কুয়া পানির দরকার হতো, যখন সেটি পানি পান করত। তাই তিনি পালা বণ্টন করে দিলেন যে এক দিন মাদি উটটি পানি পান করবে এবং এক দিন এলাকার লোকেরা কুয়া থেকে পানি নেবে। কিন্তু কওমের নেতারা গোপনে চক্রান্ত করল। তারা ঠিক করল, উটটিকে মেরে ফেলবে। পরিশেষে 'ফুজার' নামের এক ব্যক্তি সেটি হত্যা করে। এ অবস্থায় হজরত সালেহ (আ.) তাদের সতর্ক করে দিলেন যে এখন শাস্তি নেমে আসতে মাত্র তিন দিন বাকি আছে। তিন দিন পরই আল্লাহর গজব নেমে এসে তোমাদের ধ্বংস করে দেবে। এতদসত্ত্বেও সামুদ জাতির জেদি নেতারা তওবা ও ইস্তেগফারে রত হলো না। বরং তারা হজরত সালেহ (আ.)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র আঁটল। এ বিষয়ে সুরা নামলের ৪৮ নম্বর আয়াতে কিছু বর্ণনা আছে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হতে দিলেন না। নবী সালেহ (আ.) যেমন বলেছিলেন তেমনিভাবেই তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর প্রচণ্ড ভূমিকম্প শুরু হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আকাশ থেকে ভয়াল শব্দ আসতে থাকে। এতে গোটা সামুদ জাতি ধ্বংস হয়ে যায়। হজরত সালেহ (আ.) ও তাঁর সামুদ সম্প্রদায়ের ঘটনা বিস্তারিত সুরা হুদ (১১ : ৬১), সুরা শুআরা (২৬ : ১৪১), সুরা নামল (২৭ : ৪৫ ও সুরা কামারে (৫৪ : ২৩) বর্ণিত হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ৭৪-৭৭]
অনুবাদ : ৭৪. সেই সময়ের কথা স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদের (সামুদ জাতিকে) তাদের (আদ জাতির) স্থলাভিষিক্ত করেন। আর পৃথিবীতে তোমাদের এভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন যে তোমরা সমতল ভূমিতে দালানকোঠা নির্মাণ করছ এবং পাহাড় কেটে কেটে বাসস্থান তৈরি করছ। সুতরাং তোমরা আল্লাহর নিয়ামতগুলো স্মরণ করো (কারণ আল্লাহই তোমাদের এসব কৌশল উদ্ভাবন করার ক্ষমতা দিয়েছেন) আর তোমরা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না।
৭৫. তার (সালেহ আ.) সম্প্রদায়ের দাম্ভিক নেতারা যেসব অপেক্ষাকৃত দুর্বল লোক ইমান এনেছিল, তাদের জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি এটা বিশ্বাস করো যে সালেহ তার প্রভুর পক্ষ থেকে রাসুল হয়ে এসেছেন! তারা বলল, নিশ্চয়ই আমরা তো তাঁর রিসালাতে বিশ্বাস করি। ৭৬. সেই দাম্ভিক লোকেরা বলল, তোমরা তাঁর যে রিসালাতে বিশ্ব্বাস করো, আমরা তো তা অস্বীকার করি। ৭৭. সুতরাং তারা সেই মাদি উটটিকে মেরে ফেলল এবং তাদের প্রতিপালকের নির্দেশ অমান্য করল। আর তারা বলল, হে সালেহ, আপনি যদি সত্যিই নবী হয়ে থাকেন, তবে আপনি আমাদের যেসব ভয় দেখাচ্ছেন অর্থাৎ শাস্তির কথা বলছেন, সেগুলো নিয়ে আসুন না।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোও হজরত সালেহ (আ.) ও তাঁর সামুদ জাতির ঔদ্ধত্য প্রসঙ্গেই এসেছে। সামুদ জাতির নেতাদের দাবি অনুযায়ী আল্লাহর কুদরতের উট পাহাড় থেকে নেমে আসার পর যখন তারা আল্লাহর একত্ববাদের ওপর ইমান আনল না এবং নবী সালেহ (আ.)-এর নবুয়তের ওপর ইমান আনতে অস্বীকৃতি জানাল, তখন নবী সালেহ (আ.) আশঙ্কা করলেন, তাদের ওপর আল্লাহর গজব নাজিল হতে পারে। তিনি বললেন, তোমরা অন্ততপক্ষে এই মাদি উটটির কোনো ক্ষতি করো না এবং এটিকে স্বাধীনভাবে চলেফিরে খেতে দাও। মাদি উটটির পুরো এক কুয়া পানির দরকার হতো, যখন সেটি পানি পান করত। তাই তিনি পালা বণ্টন করে দিলেন যে এক দিন মাদি উটটি পানি পান করবে এবং এক দিন এলাকার লোকেরা কুয়া থেকে পানি নেবে। কিন্তু কওমের নেতারা গোপনে চক্রান্ত করল। তারা ঠিক করল, উটটিকে মেরে ফেলবে। পরিশেষে 'ফুজার' নামের এক ব্যক্তি সেটি হত্যা করে। এ অবস্থায় হজরত সালেহ (আ.) তাদের সতর্ক করে দিলেন যে এখন শাস্তি নেমে আসতে মাত্র তিন দিন বাকি আছে। তিন দিন পরই আল্লাহর গজব নেমে এসে তোমাদের ধ্বংস করে দেবে। এতদসত্ত্বেও সামুদ জাতির জেদি নেতারা তওবা ও ইস্তেগফারে রত হলো না। বরং তারা হজরত সালেহ (আ.)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র আঁটল। এ বিষয়ে সুরা নামলের ৪৮ নম্বর আয়াতে কিছু বর্ণনা আছে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হতে দিলেন না। নবী সালেহ (আ.) যেমন বলেছিলেন তেমনিভাবেই তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর প্রচণ্ড ভূমিকম্প শুরু হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আকাশ থেকে ভয়াল শব্দ আসতে থাকে। এতে গোটা সামুদ জাতি ধ্বংস হয়ে যায়। হজরত সালেহ (আ.) ও তাঁর সামুদ সম্প্রদায়ের ঘটনা বিস্তারিত সুরা হুদ (১১ : ৬১), সুরা শুআরা (২৬ : ১৪১), সুরা নামল (২৭ : ৪৫ ও সুরা কামারে (৫৪ : ২৩) বর্ণিত হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments