সামাজিক উদ্যোক্তা ড. ইউনূসের নতুন প্রস্তাব by ড. এম এম আকাশ
(পূর্ব প্রকাশের পর) প্রথমে তিনি বলেছেন, 'সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত ব্যর্থ হয়ে যায়। অথবা এও বলা যায় আমাদের সদিচ্ছা সত্ত্বেও আমলাতন্ত্রের সঙ্গে ভর্তুকি; অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গোঁজামিল এবং স্বচ্ছতার অভাব এই সরকারী উদ্যোগগুলোকে নিশ্চিত মৃতু্যর দিকে ঠেলে দেয়। এটা হয়ে ওঠে দুনর্ীতির প্রশস্ত খেলার মাঠ।
শুভ উদ্দেশ্যে যার প্রতিষ্ঠা হয় তা ভুলপথে এগিয়ে যায়। পরমহূর্তেই তিনি আবার বলেছেন 'সরকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার কথা মেনে নিলে বিশ্বের সামনে শুধু খোলা থাকে ব্যক্তিগত মুনাফাভিত্তিক বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের দরজা। এটা মোটেও কোন প্রেরণাদায়ক ভবিষ্যত নয় খোলাবাজার প্রতিযোগিতা, যতই ভয়ঙ্কর হোক না কেন, একাই লাগামছাড়া লোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কিছু না হলেও এটুকু আমাদের স্মরণে রাখা উচিত যে সামান্য সুযোগ পেলেই লালসা ও দুনর্ীতি পরস্পরের সঙ্গে জোট বেঁধে তাদের উদ্দেশ্য সাধনে নিয়োজিত হবে।ঃ [প্রগুক্ত, পৃ-২০৭]
রাষ্ট্রীয় খাত সৎ ও দ নয় এবং ব্যক্তিখাত লোভী, সুতরাং কোনটাই ড. ইউনূসের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না তাহলে তিনি কি করবেন? অতঃপর ড. ইউনূস হাল না ছেড়ে তাঁর বিকল্প প্রস্তাবটি তুলে ধরেছেন, 'পৃথিবীকে লোভ ও দুনর্ীতির কাছে আত্মবিসর্জন দেবার জন্য ছেড়ে দেবার আগে সমাজ-সচেতনতার শক্তিকে সবার একবার পরীা করা উচিত। গ্রামীণ এরই পতাকাবাহী জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।ম্ব [প্রাগুক্ত, পৃ-২০৭]
উলি্লখিত উদ্ধৃতিসমূহ থেকে নিশ্চয়ই পাঠক ড. ইউনূসের 'সামাজিক উদ্যোক্তাম্ব ধারণাটির বৈশিষ্ট্যগুলো সম্যক উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সংেেপ এর সারমর্ম দাঁড়াচ্ছে_
(ক) পুঁজিবাদী বাজার ব্যবস্থার ভেতরেই ব্যক্তি উদ্যোগে সামাজিক কল্যাণধমর্ী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব এবং তুলতে হবে।
(খ) এসব প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের জন্য বাণিজ্যিক কায়দায় পরিচালিত হবে।
(গ) এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে কখনোই ন্যস্ত থাকবে না। লোভী পুঁজিপতিদের হাতেও নয়।
(ঘ) এসব প্রতিষ্ঠানের অর্জিত মুনাফা সামাজিক কল্যাণের জন্যই প্রধানত ব্যয়িত হবে। সামাজিক উদ্যোক্তারা শুধু তাঁর নিজের এবং তাঁর ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যতটুকু দরকার ততটুকুই গ্রহণ করবেন।
উপরোক্ত চারটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে প্রথম 'কম্ব এবং 'খম্ব বৈশিষ্ট্যটি প্রচলিত পুঁজিবাদের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ এবং শেষের দুই বৈশিষ্ট্য 'কল্যাণ ধনতন্ত্রেরম্ব সঙ্গে অনেকখানি মিলে যায়। কল্যাণ ধনতন্ত্রে সাধারণত ব্যক্তি নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফার বিপুল অংশ (৩০ থেকে ৫০ শতাংশ) ট্যাক্স হিসেবে আহরিত হয় এবং প্রথমে তা রাষ্ট্রীয় তহবিলেই জমা হয়। পরবতর্ীতে সরকারী বাজেটের মাধ্যমে ঐ অর্থ জনকল্যাণের জন্য ব্যয় করা হয়ে থাকে। অবশ্য মার্কসবাদীরা দাবি করেন যে সমাজতন্ত্রের প্রতিযোগিতা ও চাপের কারণেই ধনতন্ত্রের এইটুকু কল্যাণমুখী সংস্কার সম্ভব হয়েছিল। মার্কসবাদী সমাজতন্ত্রীরা 'কল্যাণ ধনতন্ত্রকেম্ব সংস্কারের মাধ্যমে পুঁজিবাদকে রা করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। যখন পুঁজিবাদী সমাজে শ্রম বিক্রেতা গোষ্ঠী তথা কায়িক ও মানসিক শ্রমিকদের সঙ্গে শ্রমশক্তি নিয়োগকারী/ক্রেতা গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব চরমে উঠে যায় এবং সমাজের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হয়ে পড়ে তখন পুঁজিপতিদের মধ্যে অপোকৃত আলোকিত এবং দীর্ঘমেয়াদী চিন্তাশীল ব্যক্তিরা পুঁজিবাদকে রার জন্যই কতগুলো আয়ের পুনর্বণ্টনমূলক সামাজিক কল্যাণ অভিমুখী পদপে গ্রহণ করে থাকেন। তাঁরা বিশেষভাবে শ্রমজীবীদের জন্য শিা, স্বাস্থ্য, বেকার ভাতা, পেনশন ও সামাজিক সুরার জন্য কিছু নীতি ও কর্মসূচী গ্রহণ করেন। তাঁরা পুঁজিবাদী উৎপাদন সম্পর্ক বা উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আক্রমণ না করে করের মাধ্যমে আয় পুনর্বণ্টনের দ্বারা রাষ্ট্রীয় আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে এই কর্মসূচীগুলো কার্যকর করার উদ্যোগ নেন। চূড়ান্ত বিচারে এসব কর্মসূচীর সাফল্য নির্ভর করে রাষ্ট্রের চরিত্র এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দতার ওপর। পুঁজিবাদী একটি রাষ্ট্রের কল্যাণ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হওয়াটা তাই সর্বদাই নির্ভর করে পুঁজিপতিদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের তীব্রতার মাত্রার ওপর। লোভী ও স্বল্পদৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন (ুহমযধড) পুঁজিপতিরা যতদিন শাসকশ্রেণীর মধ্যে প্রধান মতাবান শক্তি থাকেন ততদিন পুঁজিবাদের কল্যাণমুখী পরিবর্তন অসম্ভব থাকে। উন্নত দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রের কল্যাণমূলক ব্যবস্থাগুলোর উদাহরণ এবং বিভিন্ন সেসব দেশের মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর সামাজিক গণতান্ত্রিক (ওমডধটফ ঊণবমডরর্টধড) আন্দোলনগুলো অবশ্য সর্বদাই এই ধরনের সংস্কারের প ে'প্রেশার গ্রুপম্ব হিসেবে কাজ করে থাকে। ফলে উন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলোতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মাত্রার কল্যাণধমর্ী সংস্কারের উপস্থিতি ল্য করা যায়। তবে আশির দশকে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার পশ্চাদপসরণ এবং নয়া উদারনীতির দ্রুত উত্থানের ফলে একটির পর একটি উন্নত দেশে রাষ্ট্র তার কল্যাণমূলক এবং নিয়ন্ত্রণমূলক কর্মসূচীগুলো প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। তবে মাত্র বিশ বছরের মধ্যে 'লাগামহীন পুঁজিবাদেরম্ব নতুন মহাসঙ্কট কল্যাণ ধনতন্ত্রের প্রশ্নটিকে আবার আজ সামনে ডেকে এনেছে। তবে অনেকেই আজ আর 'কল্যাণ রাষ্ট্রেম্ব ফিরতে চাচ্ছেন না, তাঁরা পুঁজিবাদের সংস্কারের মাধ্যমে তাকে 'সহনীয় ও গ্রহণযোগ্যম্ব করে তোলার দায়িত্বটি দিতে চাচ্ছেন নানা কিসিমের 'এনজিওম্ব এবং তথাকথিত 'সামাজিক উদ্যোক্তাদেরম্ব হাতে। [কল্যাণ ধনতন্ত্রের মার্কসবাদী বিশ্লেষণের জন্য দেখুন, ৃম্বউমভভমর, া. (১৯৭৩), কদণ তধ্রডটফ ডরধ্রধ্র মতর্ দণ র্্রর্টণ, ূ.চ. র্্র. ুটর্রধভ্র রেণ্র্র.] লণীয় যে, ড. ইউনূসের বর্তমান মডেলে 'সামাজিক উদ্যোক্তাকেইম্ব ব্যক্তিগতভাবে মহৎ প্রেরণার বশবতর্ী হয়ে কল্যাণ ধনতন্ত্রের রাষ্ট্রের অনুরূপ সামাজিক দায়িত্বটি পালন করার শুরু দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তার মডেলে সামাজিক উদ্যোক্তারা ষ্ক্রঈণভমশমফণর্ভ ৃষভণরম্ব-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন এবং রাষ্ট্রের সামাজিক দায়-দায়িত্বগুলো তাঁরাই বহন করবেন।
পুঁজিবাদের মার্কসীয় বিশ্লেষণ অনুসারে পুঁজিবাদী উৎপাদনের চরিত্রটি সামাজিক, পরিচালনা পদ্ধতিও ক্রমশ অধিকতর সামাজিক চরিত্র অর্জন করছে কিন্তু এর ফলাফলের চরিত্রটি রয়ে গেছে ব্যক্তিগত। ব্যক্তিগত মালিকানা এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের কারণেই সামাজিক চরিত্রের উৎপাদন এবং ব্যক্তিগত বণ্টনের এই অসঙ্গতির সৃষ্টি বলে মার্কসবাদীরা মনে করেন। (চলবে)
রাষ্ট্রীয় খাত সৎ ও দ নয় এবং ব্যক্তিখাত লোভী, সুতরাং কোনটাই ড. ইউনূসের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না তাহলে তিনি কি করবেন? অতঃপর ড. ইউনূস হাল না ছেড়ে তাঁর বিকল্প প্রস্তাবটি তুলে ধরেছেন, 'পৃথিবীকে লোভ ও দুনর্ীতির কাছে আত্মবিসর্জন দেবার জন্য ছেড়ে দেবার আগে সমাজ-সচেতনতার শক্তিকে সবার একবার পরীা করা উচিত। গ্রামীণ এরই পতাকাবাহী জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।ম্ব [প্রাগুক্ত, পৃ-২০৭]
উলি্লখিত উদ্ধৃতিসমূহ থেকে নিশ্চয়ই পাঠক ড. ইউনূসের 'সামাজিক উদ্যোক্তাম্ব ধারণাটির বৈশিষ্ট্যগুলো সম্যক উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সংেেপ এর সারমর্ম দাঁড়াচ্ছে_
(ক) পুঁজিবাদী বাজার ব্যবস্থার ভেতরেই ব্যক্তি উদ্যোগে সামাজিক কল্যাণধমর্ী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব এবং তুলতে হবে।
(খ) এসব প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের জন্য বাণিজ্যিক কায়দায় পরিচালিত হবে।
(গ) এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে কখনোই ন্যস্ত থাকবে না। লোভী পুঁজিপতিদের হাতেও নয়।
(ঘ) এসব প্রতিষ্ঠানের অর্জিত মুনাফা সামাজিক কল্যাণের জন্যই প্রধানত ব্যয়িত হবে। সামাজিক উদ্যোক্তারা শুধু তাঁর নিজের এবং তাঁর ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যতটুকু দরকার ততটুকুই গ্রহণ করবেন।
উপরোক্ত চারটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে প্রথম 'কম্ব এবং 'খম্ব বৈশিষ্ট্যটি প্রচলিত পুঁজিবাদের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ এবং শেষের দুই বৈশিষ্ট্য 'কল্যাণ ধনতন্ত্রেরম্ব সঙ্গে অনেকখানি মিলে যায়। কল্যাণ ধনতন্ত্রে সাধারণত ব্যক্তি নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফার বিপুল অংশ (৩০ থেকে ৫০ শতাংশ) ট্যাক্স হিসেবে আহরিত হয় এবং প্রথমে তা রাষ্ট্রীয় তহবিলেই জমা হয়। পরবতর্ীতে সরকারী বাজেটের মাধ্যমে ঐ অর্থ জনকল্যাণের জন্য ব্যয় করা হয়ে থাকে। অবশ্য মার্কসবাদীরা দাবি করেন যে সমাজতন্ত্রের প্রতিযোগিতা ও চাপের কারণেই ধনতন্ত্রের এইটুকু কল্যাণমুখী সংস্কার সম্ভব হয়েছিল। মার্কসবাদী সমাজতন্ত্রীরা 'কল্যাণ ধনতন্ত্রকেম্ব সংস্কারের মাধ্যমে পুঁজিবাদকে রা করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। যখন পুঁজিবাদী সমাজে শ্রম বিক্রেতা গোষ্ঠী তথা কায়িক ও মানসিক শ্রমিকদের সঙ্গে শ্রমশক্তি নিয়োগকারী/ক্রেতা গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব চরমে উঠে যায় এবং সমাজের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হয়ে পড়ে তখন পুঁজিপতিদের মধ্যে অপোকৃত আলোকিত এবং দীর্ঘমেয়াদী চিন্তাশীল ব্যক্তিরা পুঁজিবাদকে রার জন্যই কতগুলো আয়ের পুনর্বণ্টনমূলক সামাজিক কল্যাণ অভিমুখী পদপে গ্রহণ করে থাকেন। তাঁরা বিশেষভাবে শ্রমজীবীদের জন্য শিা, স্বাস্থ্য, বেকার ভাতা, পেনশন ও সামাজিক সুরার জন্য কিছু নীতি ও কর্মসূচী গ্রহণ করেন। তাঁরা পুঁজিবাদী উৎপাদন সম্পর্ক বা উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আক্রমণ না করে করের মাধ্যমে আয় পুনর্বণ্টনের দ্বারা রাষ্ট্রীয় আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে এই কর্মসূচীগুলো কার্যকর করার উদ্যোগ নেন। চূড়ান্ত বিচারে এসব কর্মসূচীর সাফল্য নির্ভর করে রাষ্ট্রের চরিত্র এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দতার ওপর। পুঁজিবাদী একটি রাষ্ট্রের কল্যাণ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হওয়াটা তাই সর্বদাই নির্ভর করে পুঁজিপতিদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের তীব্রতার মাত্রার ওপর। লোভী ও স্বল্পদৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন (ুহমযধড) পুঁজিপতিরা যতদিন শাসকশ্রেণীর মধ্যে প্রধান মতাবান শক্তি থাকেন ততদিন পুঁজিবাদের কল্যাণমুখী পরিবর্তন অসম্ভব থাকে। উন্নত দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রের কল্যাণমূলক ব্যবস্থাগুলোর উদাহরণ এবং বিভিন্ন সেসব দেশের মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর সামাজিক গণতান্ত্রিক (ওমডধটফ ঊণবমডরর্টধড) আন্দোলনগুলো অবশ্য সর্বদাই এই ধরনের সংস্কারের প ে'প্রেশার গ্রুপম্ব হিসেবে কাজ করে থাকে। ফলে উন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলোতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মাত্রার কল্যাণধমর্ী সংস্কারের উপস্থিতি ল্য করা যায়। তবে আশির দশকে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার পশ্চাদপসরণ এবং নয়া উদারনীতির দ্রুত উত্থানের ফলে একটির পর একটি উন্নত দেশে রাষ্ট্র তার কল্যাণমূলক এবং নিয়ন্ত্রণমূলক কর্মসূচীগুলো প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। তবে মাত্র বিশ বছরের মধ্যে 'লাগামহীন পুঁজিবাদেরম্ব নতুন মহাসঙ্কট কল্যাণ ধনতন্ত্রের প্রশ্নটিকে আবার আজ সামনে ডেকে এনেছে। তবে অনেকেই আজ আর 'কল্যাণ রাষ্ট্রেম্ব ফিরতে চাচ্ছেন না, তাঁরা পুঁজিবাদের সংস্কারের মাধ্যমে তাকে 'সহনীয় ও গ্রহণযোগ্যম্ব করে তোলার দায়িত্বটি দিতে চাচ্ছেন নানা কিসিমের 'এনজিওম্ব এবং তথাকথিত 'সামাজিক উদ্যোক্তাদেরম্ব হাতে। [কল্যাণ ধনতন্ত্রের মার্কসবাদী বিশ্লেষণের জন্য দেখুন, ৃম্বউমভভমর, া. (১৯৭৩), কদণ তধ্রডটফ ডরধ্রধ্র মতর্ দণ র্্রর্টণ, ূ.চ. র্্র. ুটর্রধভ্র রেণ্র্র.] লণীয় যে, ড. ইউনূসের বর্তমান মডেলে 'সামাজিক উদ্যোক্তাকেইম্ব ব্যক্তিগতভাবে মহৎ প্রেরণার বশবতর্ী হয়ে কল্যাণ ধনতন্ত্রের রাষ্ট্রের অনুরূপ সামাজিক দায়িত্বটি পালন করার শুরু দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তার মডেলে সামাজিক উদ্যোক্তারা ষ্ক্রঈণভমশমফণর্ভ ৃষভণরম্ব-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন এবং রাষ্ট্রের সামাজিক দায়-দায়িত্বগুলো তাঁরাই বহন করবেন।
পুঁজিবাদের মার্কসীয় বিশ্লেষণ অনুসারে পুঁজিবাদী উৎপাদনের চরিত্রটি সামাজিক, পরিচালনা পদ্ধতিও ক্রমশ অধিকতর সামাজিক চরিত্র অর্জন করছে কিন্তু এর ফলাফলের চরিত্রটি রয়ে গেছে ব্যক্তিগত। ব্যক্তিগত মালিকানা এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের কারণেই সামাজিক চরিত্রের উৎপাদন এবং ব্যক্তিগত বণ্টনের এই অসঙ্গতির সৃষ্টি বলে মার্কসবাদীরা মনে করেন। (চলবে)
No comments